ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে চার মাসে নিহত ১২

প্রকাশিত: ০৭:৩৮, ৬ মে ২০১৮

কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে চার মাসে নিহত ১২

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ৫ মে ॥ কিশোরগঞ্জে গত চার বছরে বজ্রপাতে ৪৩ জনের মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে। এর মধ্যে গেল ১৬ মাসেই এ জেলায় বজ্রপাতে মারা গেছে ৩৯ জন। ভৌগোলিক অবস্থার কারণে জেলার হাওড় অধ্যুষিত উপজেলাগুলোতেই যেন বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটছে। এ ক্ষেত্রে হাওড়ের মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী ও করিমগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতের ঘটনায় বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। চলতি বছরের ৪ মে পর্যন্ত মাত্র চার মাসেই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বজ্রপাতে মারা গেছে ১২ জন। ফলে দিন দিন এ নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্কও বাড়ছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের জুন মাসে জেলার নিকলী উপজেলায় বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়। পরে ২০১৫ সালে মিঠামইন ও পাকুন্দিয়া উপজেলায় মারা যায় আরও দুইজন। তবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ২০১৬ সালে। ওই বছর জেলা সদরসহ হাওড় ও আংশিক হাওড় অধ্যুষিত ৮ উপজেলায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়। আর ২০১৭ সালে কিশোরগঞ্জের ৭ উপজেলায় বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু হয়। অপরদিকে একটি বেসরকারী পরিসংখ্যান সূত্র জানায়, ২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে জেলার ১৩ উপজেলায় বজ্রপাতে মারা গেছে ১২০ জন। এর মধ্যে ইটনা উপজেলায় বজ্রপাতে মোট ২৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এরপরই নিকলী উপজেলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ১৯ জনের। এ ছাড়া ওই সময় মিঠামইন উপজেলায় ১৫, অষ্টগ্রামে ১৪, করিমগঞ্জে ১০, বাজিতপুরে ৯, তাড়াইলে ৭ কটিয়াদীতে ৬, সদর উপজেলায় ৫, পাকুন্দিয়ায় ৪, হোসেনপুরে ৩, কুলিয়ারচরে ২ এবং ভৈরবে ২ মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা জানায়, হাওড় অধ্যুষিত এই জেলায় বৃষ্টির সঙ্গে নিয়মিত বজ্রপাতে এই হতাহতের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকায় এলাকায় আতঙ্ক বাড়ছে। বিশেষ করে ধানকাটা মৌসুমে বজ্রপাত বেশি হওয়ায় হাওড়ের হাজার হাজার কৃষক ও কৃষি পরিবারে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোকাররম হোসেন জানান, ২০১৬ সালের ১৭ মে বজ্রপাতকে ‘দুর্যোগ’ হিসেবে ঘোষণা করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। কোন এলাকায় বজ্রপাতে নিহতের খবর পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দিচ্ছে। কিশোরগঞ্জের এডিসি (সার্বিক) উপসচিব তরফদার মোঃ আক্তার জামীল জানান, বজ্রপাত থেকে রক্ষায় গণসচেতনতামূলক কর্মসূচী হিসেবে এলাকায় মাইকিং করে প্রচার, লিফলেট বিতরণ, মসজিদে আলোচনা ও গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বজ্রপাত প্রতিরোধ কর্মসূচীর আওতায় এ জেলায় ইতোমধ্যে ১৬ হাজার ১৫০টি তালগাছের চারা লাগানো হয়েছে।
×