ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সব হারিয়ে ভালবাসার মূল্য বুঝলেন ওয়ার্নার

প্রকাশিত: ০৭:৩৫, ৬ মে ২০১৮

সব হারিয়ে ভালবাসার মূল্য বুঝলেন ওয়ার্নার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভালবাসা ছাড়া জীবন অর্থহীন। ছিলেন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের অন্যতম স্তম্ভ হয়ে। ক্যারিয়ারে একাধিকবার মাঠের বাইরে অসদাচরণ করেও দুর্বার প্রতিভার জোরে পার পেয়ে গেছেন। এমনকি সহ-অধিনায়কও করা হয়েছিল। অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে সঙ্গী করে দেশকে টানছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। কিন্তু রক্তে মিশে যাওয়া ভ্রান্তিগুলো হয়তো মুছতে পারেননি! বহুল আলোচিত বল টেম্পারিংয়ের মূল হোতা ভাবা হয় তাকেই। এক বছরের জন্য সকল ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ ধুরন্ধর উইলোবাজ তো ফেরার আশাটুকুও ছেড়ে দিয়েছেন। কঠিন সময়ে পরিবার, আত্মীয়, বন্ধু, ভক্তদের সহানুভূতির পর সব হারিয়ে যেন ভালবাসার মূল্য বুঝলেন ওয়ার্নার, ‘স্ত্রী-সন্তানের সান্নিধ্য থেকেই সবকিছু অনুভব করতে পারছি। বুঝতে পারছি সবাই আমাকে কত ভালবাসে। তাদের এই ভালবাসার মূল্য অপরিসীম।’ নিষিদ্ধ হওয়ার প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় পর লোকসম্মুখে ৩১ বছর বয়সী তারকা ব্যাটসম্যান এক সাক্ষাতকারে বলেন, ‘এটা আসলে মাথা নোয়ানোর মতো, ভীষণ আনন্দের। কখনও কখনও আপনাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়, ভাবতে হয় এবং বিস্মিত হতে হয় এই ভেবে যে, মানুষ আপনার কতটা অনুভব করে। মাঝে মধ্যে আমাদের সমাজে এমন কিছু ঘটে যেটা মানুষের জন্য বাজে হয়ে দেখা দেয় এবং সমর্থনের প্রয়োজন হয়। আমার মনে হয়, আমি নিজে এই সমর্থন থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা শিক্ষা পেয়েছি।’ বল টেম্পারিং কা-ের মূল হোতা ছিলেন তিনি। অশ্রুবিজড়িত কণ্ঠে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গিয়েছিলেন ওয়ার্নার। অনেকটা সময় আড়ালে থেকে অবশেষে লোকসম্মুখে আসলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক সহ-অধিনায়ক। জানালেন, মানুষের ভালবাসা আর সমর্থন তাকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। স্ত্রী ক্যান্ডিস আর মেয়ে আইভি আর ইন্ডিকে নিয়ে সময়টা খারাপ কাটছে না বলেও জানিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান, ‘আমার মনে হয়, আমাদের বড় একটা ব্যাপার হলো রুটিনের বৃত্তে থাকতে হয়Ñ ক্রিকেট, হোটেল, ব্যাগ গুটানো আর বাড়িতে আসা। তবে বাড়িতে আপনি বেশি সময় থাকতে পারবেন না। দীর্ঘ সময় আপনাকে একটি ভাল রুটিনের মধ্যে কাটাতে হয়। এতে নিজের স্বার্থ দেখার সুযোগ নেই। বাচ্চাদের অবশ্যই অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। তাদের কেয়ার, সাঁতার শেখানো, জিমন্যাস্টিক, সন্তানদের সঙ্গে ভাল কিছু সময় কাটানোরও দরকার আছে।’ নিষেধাজ্ঞার এই সময়টায় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটালেও ক্রিকেটটা ওয়ার্নারের রক্তে মিশে আছে। খেলা কতটা মিস করছেন, সেটি দেখা গেছে তার আচরণে। সিডনির রাস্তায় অদৃশ্য ব্যাট দিয়ে আনমনে খেলে যাওয়া এই ওপেনারের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালই হয়ে গিয়েছিল। শনিবার অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনের নর্দার্ন টেরিটরির খুদে ক্রিকেটারদের নানান টিপস দিতে এসে আবেগের স্রোতে ভাসলেন ওয়ার্নার। কচি-কাঁচাদের টিপস দেয়ার পাশাপাশি নিজের ব্যাটিংটাও একবার ঝালিয়ে নিয়েছেন। সঙ্গে মিটিয়েছের অটোগ্রাফ শিকারিদের আবদার। অস্ট্রেলিয়ার একটি পথ নিরাপত্তা এ্যাপের প্রচারে যুক্ত রয়েছেন নির্বাসিত ওয়ার্নার। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্রিকেটের প্রসারে কাজ করছেন তিনি। তাই খুদে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ব্যাট-বল নিয়ে মেতে উঠেছিলেন। পাশাপাশি ক্রিকেট পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং আর্থিক সহায়তার কাজে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ওয়ার্নার। ওদিকে দু’দিন আগে খোদ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) প্রধান জেমস সাদারল্যান্ড অনেকটা নমনীয় সুরে বলেছেন, সুযোগটা ওদের প্রাপ্য। করণীয় ঠিক করতে একটি রিভিউ কমিটি কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
×