ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকের নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ কমেছে

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ৬ মে ২০১৮

ব্যাংকের নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকখাতের কোম্পানিগুলো নগদ লভ্যাংশ প্রদানের চেয়ে বোনাস লভ্যাংশ প্রদান করছেন বেশি। অনেক ব্যাংক আবার লভ্যাংশও কমিয়েছে। ২০১৭ সাল শেষে দেখা গেছে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে ১৪টি বোনাস শেয়ার প্রদান করেছে। এর বিপরীতে ৯ ব্যাংক নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছে। আর ৫টি ব্যাংক নগদ ও বোনাস শভ্যাংশ প্রদান করেছে। ২টি ব্যাংক লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ হিসেবে ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাসেল-৩ এর শর্তপূরণ, এ্যান্ডভান্সড ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) ইস্যু, পর্যাপ্ত প্রভিশনিং, এনপিএল কাভারেজ, তারল্য সঙ্কট এবং নির্বাচনী বছরের কারণে ডিপোজিট শক্তিশালীকরণের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। তাছাড়া ২০১৭ সালে নিট আয়ও কমেছে অনেক ব্যাংকের। এর কারণে নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা পরিবর্তে বোনাস লভ্যাংশ শুপারিশের সিদ্ধান্ত ছিল বেশির ভাগ ব্যাংকের। যা আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে উঠে এসেছে এমন তথ্য। ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন অনুষ্ঠানে বলেন, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবসা বাড়ছে। সাধারণত কোম্পানি বোনাস শেয়ার প্রদান করে ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য। আমাদের আরও নতুন নতুন প্রোডাক্ট বাজারে আসছে। যেগুলো ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবসাকে আরও শক্তিশালী করবে। মূলধন শক্তিশালী করার পাশাপাশি ব্যবসা সম্প্রসারণে কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট বোনাস শেয়ার প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাছাড়া ব্যাংকিং খাত বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে পার হচ্ছে। যেখানে ব্যাংকের ডিপোজিট শক্তিশালীকরণ জরুরী হয়ে পড়েছে। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ ই আব্দুল মুহাইমেন বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে লভ্যাংশ কমানোর কারণ হিসাবে বলেছিলেন, আমরা বেশকিছু কারণে লভ্যাংশ কমিয়েছি। এ জন্য শেয়ারহোল্ডারদের সাময়িক কষ্ট হবে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে এই কষ্ট থাকবে না। এটা আমাদের টেকসই ব্যাংকিংয়ের জন্য করতেই হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাসেল-৩, পর্যাপ্ত প্রভিশনিং, এনপিএল কাভারেজ, কস্টিংসহ বেশ কিছু শক্ত পরিকল্পনা নেয়ার কারণে ম্যানেজমেন্ট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উল্লেখ্য, ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মূলধন সংরক্ষণ করতে হবে। সেই হিসাবে ২০১৫ সালে তাদের ঝুঁকিকৃত সম্পদের ১০ শতাংশ, ২০১৬ সালে ১০.৬২৫ শতাংশ, ২০১৭ সালে ১১.২৬ শতাংশ, ২০১৮ সালে ১১.৮৭৫ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে এই সংরক্ষণের পরিমাণ হবে ১২.৫০ শতাংশ। ২০১৭ সালে শুধু বোনাস শেয়ার প্রদান করা ব্যাংকগুলো হলো- ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, এমটিবি, ন্যাশনাল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। আর বোনাস ও নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছে, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক এবং প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড। শুধু নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছে, ডাস বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, ইউসিবি, ট্রাস্ট ব্যাংক এবং উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড।
×