ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইরানের পাশে থাকবে রাশিয়া

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৬ মে ২০১৮

ইরানের পাশে থাকবে রাশিয়া

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে করা পরমাণু চুক্তি থেকে ফিরে গেলে রাশিয়া ইরানের পাশে দাঁড়াবে এবং দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করবে বলে জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১২ মে চুক্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি যেন ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে না যান সেজন্য ইউরোপীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।- ইয়াহু নিউজ। ২০১৫ সালে চুক্তিটি হওয়ার পর ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো ক্রমাম্বয়ে শিথিল করা হয়েছিল। মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো থেকে রেহাই পেতে প্রেসিডেন্টকে নিয়মিত ব্যবধানে এটি অনুমোদন করতে হয়, বিষয়টি চুক্তির অবিচ্ছেদ্য অংশ। জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব এ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামের ওই চুক্তিটি ইরান ও ছয়টি দেশের মধ্যে সম্পাদিত হয়েছিল। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরমাণু বিস্তার রোধ ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক ভøাদিমির ইয়ারমাকোভ শুক্রবার জেনেভায় পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনে বলেন, জেসিপিওএ থেকে রাশিয়ার প্রত্যাহার করে নেয়ার মানে চুক্তির অবসান ঘটানো নয়। যুক্তরাষ্ট্র যদি সে রকম কিছু করে তবে মস্কো তেহরানের পাশে থাকবে। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তি থেকে ফিরে গেলে রাশিয়া ইরানের পাশে থাকবে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমাদের কোন সীমা নেই। জ্বালানি, পরিবহন, প্রযুক্তি ও ওষুধ শিল্পের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা আরও মজবুত করব।’ ট্রাম্প জানুয়ারি মাসেই হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন যে, তিনি ১২ মে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পরবর্তী আদেশে সই করবেন না। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে থেকেই চুক্তির বিরোধিতা করে এসেছেন। তার মতে, এক দশকের জন্য ইরানের পরমাণু কর্মসূচী স্থগিত করা হয়েছে। তেহরান যেন আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকি হয়ে উঠতে না পারে তার কোন নিশ্চয়তা এ চুক্তিতে নেই বলে ট্রাম্প মনে করেন। ইয়ারমাকোভ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় সম্পাদিত কোন আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে এক তরফাভাবে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় তবে তার দায় তাদের বহন করতে হবে। ইরান, রাশিয়া, চীন বা ইউরোপের কোন দেশ এককভাবে এর দায় বহন করতে পারে না।’ তিনি বলেন রাশিয়া চুক্তি অনুযায়ী নিজের দায়িত্ব পালন করে যাবে। তার মতে, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য এই চুক্তি জরুরী। এমন কোন কারণ ঘটেনি যে কারণে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ইরানের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী নিয়ন্ত্রণের উপায় নিয়ে সম্প্রতি সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ২০২৫ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তেহরানকে পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা থেকে বিরত রাখতে কী করা হবে তা নিয়ে দু’পক্ষ কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। পরমাণু চুক্তি নিয়ে ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত কী করবেন তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে আটলান্টিকের এপার ওপার সুসম্পর্ক বজায় রাখা ও নিরাপত্তার জন্য চুক্তিটি প্রয়োজন। ইয়ারমাকোভ বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচী কোন নির্দিষ্ট দেশের জন্য বরং পুরো বিশ্বের জন্য একটি হুমকি। কিন্তু এই চুক্তির মাধ্যমে এটি নিশ্চিত করা হয়েছে যে তেহরানের পরমাণু কর্মসূচী শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের মধ্যে সীমিত থাকবে। যুক্তরাষ্ট্র যদি একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে যায় তবে নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন ডাকা প্রয়োজন হবে না। আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র তখন তাত্ত্বিকভাবেই নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসে যাবে। তবে বাস্তবে সেটি করা যাবে না কারণ দেশটির ভেটো দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। ইয়ারমাকোভ বলেন, জাতিসংঘের অধিকাংশ সদস্য এবং জেনেভা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো পরমাণু চুক্তি সমর্থন করে।
×