ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন কমিশন তফসিলের আগে পুনর্গঠন করতে হবে ॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৬ মে ২০১৮

নির্বাচন কমিশন তফসিলের আগে পুনর্গঠন করতে হবে ॥ মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে এবং গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের এ কমিশনে স্থান দিতে হবে। যারা পক্ষপাতদুষ্ট না হয়ে নিরপেক্ষভাবে একটি নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। মওদুদ বলেন, সংবিধানের ক্ষমতা অপপ্রয়োগ করে নির্বাচন কমিশন সংসদীয় আসনের যে সীমানা নির্ধারণ করেছে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করেছি। সীমানা নির্ধারণ জাতীয় নির্বাচনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমরা অনেকবার কথা বলেছি। সীমানা নির্ধারণের বিষয়ে কমিশন যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তা সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের সুবিধা দেয়ার জন্য। মওদুদ বলেন, গাজীপুর এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদিনই আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। অথচ এ বিষয়ে একটাও পদক্ষেপ নেয়ার কোন নজির দেখাতে পারেনি ইসি। তাই এই ইসির অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নিজের নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী-৫ আসনের সীমানা নির্ধারণ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, আমার নির্বাচনী আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। এই নির্বাচনী এলাকাটি প্রায় ৩৯ বছর ধরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, বসুরহাট পৌরসভা, কবিরহাট উপজেলা, কবিরহাট পৌরসভা এবং সদর পূর্বাঞ্চলের দুটি ইউনিয়নসহ ১৭টি ইউনিয়ন ও ২ পৌরসভার সমন্বয়ে গঠিত। কিন্তু সরকারী দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের সুবিধার্থে নোয়াখালী-৫ থেকে সদর পূর্বাঞ্চলের দুটি ইউনিয়ন অশ্বদিয়া ও নেয়াজপুর নোয়াখালী-৪ এ নিয়ে গেছে। ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষের গণস্বাক্ষর সম্বলিত লিখিত প্রতিবাদ উপেক্ষা করে ইসি ৩০ এপ্রিল সীমানা নির্ধারণের তালিকা প্রকাশ করেছে। নির্বাচনী এলাকার সীমানা এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে আমরা নির্বাচনে যেতে চাইলেও না যেতে পারি। মওদুদ বলেন, ধীরে ধীরে আমরা যতই সাধারণ নির্বাচনের কাছাকাছি যাচ্ছি এই সরকার আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। যত রকমের কৌশল করা যায়, সেগুলো তারা করছে। দেশে যাতে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়। অর্থাৎ একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যাতে দেশের মানুষ না পায়। দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি যাতে এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে, তার সমস্ত আয়োজন আমরা দেখতে পাচ্ছি। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, আমরা অনেকবার বলেছি এবং আবারও বলছি, নির্বাচন কমিশন যতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে সবগুলো সরকারসমর্থিত প্রার্থীদের জয়লাভ করানোর জন্য। আর আমরা যারা বিরোধী দলে আছি, আমাদের অসুবিধা সৃষ্টি করার জন্য। তাই এ নির্বাচন কমিশন দিয়ে সেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা মোহাম্মদ মাসুক মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী প্রমুখ। কারাবন্দী খালেদার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি- রিজভী ॥ কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য আমরা বার বার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এখনও তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। আমরা তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার কথা বললেও সরকার ও কারাকর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোন কর্ণপাতই করছে না। উল্টো আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ তাদের দলীয় নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ইয়ার্কি-ঠাট্টা করছেন। শুক্রবারও আমরা খবর পেয়েছি স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে পরিত্যক্ত রুমে থাকায় খালেদা জিয়া প্রায়ই জ্বরে ভুগছেন। একইসঙ্গে তার কাশি লেগেই আছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মুনির হোসেন, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ। রিজভী বলেন, বর্তমান সরকার বেআইনী অস্ত্রকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে দুর্বৃত্তদের মাথায় হাত রেখে দেশ চালাচ্ছে বলেই সারাদেশ খুন বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে গণতন্ত্রকে নিরুদ্দেশ করার ফাইনাল কল দিতেই পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে ভোটারদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের নির্বাচনী প্রচারে জনতার ঢল দেখে আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে হয়রানি শুরু করেছে।
×