ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চীনের এক্সিম ব্যাংকের ৪৩০ মিলিয়ন ডলারের প্রথম কিস্তি ছাড় ॥ পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৬ মে ২০১৮

চীনের এক্সিম ব্যাংকের ৪৩০ মিলিয়ন ডলারের প্রথম কিস্তি ছাড় ॥ পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পায়রা এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে চীনের এক্সিম ব্যাংক ৪৩০ মিলিয়ন ডলারের প্রথম কিস্তি ছাড় করেছে। বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণে এক্সিম ব্যাংকের ছাড় করা অর্থ গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড (বিসিপিসিএল) এর হিসাব নম্বরে জমা হয়েছে। যাকে সাম্প্রতিক সময়ের সব থেকে বড় চীনা বিনিয়োগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। শনিবার বিদ্যুত কেন্দ্রটির নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সরকারের মেগা বিদ্যুত প্রকল্পের মধ্যে সব থেকে এগিয়ে রয়েছে পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র। এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্রটির অর্ধেক মালিকানা রয়েছে বাংলাদেশের কাছে। পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরকে ঘিরে গড়ে ওঠা উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে সব থেকে এগিয়ে রয়েছে পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র। জানতে চাইলে বিসিপিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম বলেন, আমরা যে ইনভয়েস বা চাহিদাপত্র দিয়েছিলাম সে অনুযায়ী চীনের এক্সিম ব্যাংক অর্থ ছাড় করেছে। আমরা সেই অর্থ বুঝে পেয়েছি উল্লেখ করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এতে বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণের গতি আরও বৃদ্ধি পাবে। ইতোমধ্যে সরকার এই প্রকল্পকে ‘সুপার ফাস্ট প্রজেক্ট ’ আখ্যা দিয়েছে। বিদ্যুত কেন্দ্রটির অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলছে। আগামী জুলাই থেকে কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ বাংলাদেশে আসবে। তখন থেকেই তা সংযোজনও শুরু হবে। আশা করা হচ্ছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কেন্দ্রটি উৎপাদন শুরু করতে পারবে। এক্সিম ব্যাংক বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণে এক দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে। এই ঋণের অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে আসবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ১৭টি হিসাব (একাউন্ট) খোলা হয়েছে। যার মধ্যে নয়টি হিসেব ইউএসডি একাউন্ট রয়েছে। চীনা এক্সিম ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংক হিসেবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক কাজ করছে। সবগুলো একাউন্ট স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকেই খোলা হয়েছে। বিসিপিসিএল সূত্র জানায় আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুত কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসবে আগামী ২০১৯ সালের জুন মাসে আর দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে আসবে একই বছর ডিসেম্বরে। বিদ্যুত কেন্দ্রের ইউনিট প্রতি উৎপাদন ব্যয় হবে ছয় টাকা ৬৫ পয়সা। চীন, অস্ট্রেলিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে বিদ্যুত কেন্দ্রটির জন্য কয়লা আমদানি করা হবে। কেন্দ্রের কয়লা সরবরাহের জন্য ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বিসিপিসিএল। বিদ্যুত কেন্দ্রর ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ের দিকে রয়েছে। চলতি বছরের মঝামাঝি সময় থেকে বিদ্যুত কেন্দ্রের মূল যন্ত্রাংশ সংযোজন শুরু হবে। আগামী বছর জুনের মধ্যেই প্রথম ইউনিট এর নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে। দেশীয় কোম্পানি নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনা কোম্পানি চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি) বিদ্যুত কেন্দ্রের সমান অংশীদার। কেন্দ্র নির্মাণে ২০ ভাগ অর্থ দুই রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বিনিয়োগ করছে বাকি ৮০ ভাগ ঋণ দিচ্ছে চায়না এক্সিম ব্যাংক। বিদ্যুত কেন্দ্রটির দরপত্রেই ঠিকাদারকে ঋণ সংস্থানের আগে ১৫ ভাগ অর্থ খরচ করার শর্ত দেয়া হয়েছিল। অর্থাৎ এখন ৩৫ ভাগ অর্থের কাজ চলছে। বিদ্যুত কেন্দ্রর ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে সাধারণত ৩০ ভাগ অর্থের বেশি খরচ হয় না। বাকী অর্থ বিদ্যুত কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ আমদানিতে ব্যয় করা হয়। বিদ্যুত কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ আমদানির প্রক্রিয়া এর মধ্যে শেষ করা হয়েছে। দেশে চুক্তি হওয়া কেন্দ্রের মধ্যে পায়রার পাশাপাশি কাজ চলছে রামপাল-১৩২০ মেগাওয়াট এবং মাতারবাড়ি-১২০০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের। রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রটি ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটপিসি) এর সঙ্গে সমান অংশিদারিত্বে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) নির্মাণ করছে। প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করছে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। কেন্দ্রটির মালিকানা বাংলাদেশ সরকারের। কেন্দ্রটি জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোআপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এর অর্থায়নে নির্মাণ করা হচ্ছে
×