ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পেন্টাগনকে ট্রাম্পের নির্দেশ

দ. কোরিয়ায় মার্কিন সৈন্য কমছে

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ৫ মে ২০১৮

দ. কোরিয়ায় মার্কিন সৈন্য কমছে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন মার্কিন সৈন্য সংখ্যা কমানোর প্রস্তুতি নিতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। তবে পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু অস্ত্র কার্যক্রম নিয়ে মে’র শেষ বা জুনের প্রথম সপ্তাহে উত্তর কোরীয় নেতা কিমের সঙ্গে ট্রাম্পের ওই বৈঠকে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সৈন্য হ্রাস করার বিষয়টি তাদের আলোচনার বিষয় নয় বলেও জানা গেছে। কর্মকর্তারা জানান, বৈঠকে এই দুই নেতার আলোচনার বিষয়বস্তু হবে দুই কোরিয়ার মধ্যে শান্তি চুক্তি।- খবর নিউইয়র্ক টাইমসের। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি জানায়, দুই কোরিয়ার মধ্যকার শান্তি চুক্তির ফলে উপদ্বীপটিতে বর্তমানে অবস্থানকৃত ২৮ হাজার ৫শ’ মার্কিন সৈন্যের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যেতে পারে। কর্মকর্তারা জানান, উপদ্বীপ থেকে পুরোপুরিভাবে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে কী না বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট অফিসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক কর্মকর্তা ওয়াশিংটন সফরে থাকা দক্ষিণ কোরীয় এক কর্মকর্তাকে টেলিফোনে জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদনটি ‘সত্য নয়’। এ দিকে বিষয়টি নিয়ে হোয়াইট হাউস ও পেন্টাগণ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানকৃত মার্কিন সৈন্য সংখ্যা কমিয়ে আনার বিষয় তখনই বিবেচনা করবে, যখন দক্ষিণ কোরিয়া বর্তমানের চেয়ে বেশি ব্যয় বহন করতে আর সক্ষম হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র পরিচালক মাইক মেপও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে গত মাসে উত্তর কোরীয় নেতা কিমের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পূর্বশর্ত স্বরূপ দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সকল সৈন্য প্রত্যাহার করার দাবি করেননি। দক্ষিণ কোরিয়া মঙ্গলবার জানায়, তার দেশে অবস্থানকৃত মার্কিন সৈন্যের বিষয়টি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে হতে যাওয়া ভবিষ্যতের কোন শান্তি চুক্তির সম্পর্ক নেই এবং এ ধরনের একটি চুক্তি হওয়ার পরও মার্কিন সেনাবাহিনীর এখানে অবস্থান করা উচিত। পত্রিকাটি জানায়, ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়ে এখনও অটল রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র উপদ্বীপটিতে অবস্থানকৃত সৈন্যদের জন্য পর্যাপ্ত ব্যয় বহন করতে চাচ্ছে না। মূলত জাপানের হাত থেকে দ্বীপটিকে রক্ষায় এ অঞ্চলে মার্কিন সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে এই অঞ্চলে মার্কিন সৈন্যদের উপস্থিতি উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্র কার্যক্রম থেকে ফেরাতে পারেনি। চুক্তি মোতাবেক, মার্কিন ওই সৈন্যদের অর্ধেক খরচ বহন করে দক্ষিণ কোরিয়া; এ জন্য দক্ষিণ কোরিয়াকে প্রতি বছর ৮শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি খরচ করতে হয়। চলতি বছরের শেষ দিকে চুক্তিটি শেষ হবে বলে তথ্য রয়েছে। পেন্টাগণ ও অন্যান্য সংগঠনের কর্মকর্তারা এখন এই ভেবে উদ্বিগ্ন যে, মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার বা হ্রাসের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দুর্বল না হয়ে যায় এবং ওই অঞ্চলে জাপান ভীতি আরও বেড়ে না যায়। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, ট্রাম্প যদি ওই অঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার বা হ্রাস করার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে তিনি ওখান থেকে সৈন্য সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারেন, পুরোপুরি প্রত্যাহার করবেন না।
×