ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লিভারপুলের সাফল্যের রহস্য জানালেন মানে

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৫ মে ২০১৮

লিভারপুলের সাফল্যের রহস্য জানালেন মানে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের সফলতম ক্লাবগুলোর মধ্যে আলাদা করেই বলা চলে লিভারপুলের কথা। ইংলিশ ফুটবলের সবচেয়ে সফল ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮ বার লীগ শিরোপা জয়ের নজির রয়েছে তাদের। পাঁচবার জিতেছে ইউরোপিয়ান কাপ কিংবা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। এর সবই এখন অতীত। প্রায় দেড় দশক ধরে বড় কোন শিরোপার দেখা না পাওয়াটাই যেন তার বড় প্রমাণ। প্রিমিয়ার লীগ কিংবা ইউরোপিয়ান ফুটবল- সর্বত্রই আশা জাগানোর পর ব্যর্থতা নিয়ে মৌসুম শেষ করাটাকেই যেন নিয়মিত রীতিতে পরিণত করে ফেলেছে অলরেডরা। তবে ধীরে ধীরে লিভারপুল বদলে যেতে শুরুর করেছে। এই মৌসুমের ফলাফলটা বিবেচনা করলেই তার সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলে। বর্তমানে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে জার্গেন ক্লপের শিষ্যরা। যদিও লীগ শিরোপা আরও আগেই নিজেদের করে নিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। আর চ্যাম্পিয়ন্স লীগে তো লিভারপুল এবার দুর্বার। এক দশক পর ইউরোপিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদার টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে জায়গা করে নেয় অলরেডরা। সেই পথে পোর্তো, ম্যানচেস্টার সিটি এমনকি রোমার মতো ক্লাবকে হারিয়েছে তারা। মৌসুমের শুরু থেকেই দুর্দান্ত এই পারফর্মেন্সের গোপন রহস্যটা আসলে কী? এক সাক্ষাতকারে সেই গোপন রহস্যটাই জানালেন লিভারপুলের তারকা ফুটবলার সাদিও মানে। অলরেডদের আক্রমণভাগের এই তারকার মতে, দলের মধ্যে অহংবোধ না থাকাটাই তাদের সাফল্যের গোপন সূত্র। এ বিষয়ে সাদিও মানে বলেন, ‘অসাধারণ মাপের ফুটবলার রয়েছে লিভারপুলে। তাদের সঙ্গে খেলতে দারুণ ভালবাসি। আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেককে খুব ভালভাবে বুঝি, কোথাও গেলে সবাই একত্রে যাওয়ার চেষ্টা করি। সত্যি কথা বলতে, তখন মজাটা অনেক বেড়ে যায়।’ এখানেই শেষ নয়। মানে জানান, মাঠের বাইরেও তারা ঠিক বন্ধুর মতো। তিনি বলেন, ‘মাঠের বাইরে আমরা শুধু টিমমেটই নই, ভাল বন্ধুও। আমাদের সাফল্যের গোপন সূত্র যদি জানতে চান তাহলে আমি বলব, আমরা একে অপরকে এ্যাসিস্ট করতে খুব ভালবাসি। আমরা এটা সবসময়ই করার চেষ্টা করি। যদি খেয়াল করেন, আপনারা মাঠের মধ্যে দেখতে পারবেন আমি সবসময়ই মোহাম্মদ সালাহকে বল দিতে চেষ্টা করি। সেও আমার ক্ষেত্রে ঠিক তাই করে থাকে। আমি মনে করি এটাই আমাদের একটা ভাল দল হিসেবে তৈরি করেছে। আমি মনে করি, অহংবোধ কখনই কোন ক্লাব কিংবা কোন দলকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করে না।’ সাক্ষাতকারে সেনেগালের এই তারকা ফুটবলার এ সময় আরও বলেন, ‘নিজেদের প্রয়োজনে আমরা সিরিয়াসও হয়ে যাই কখনও কখাও। ফুটবল খেলাটাই আমাদের কাজ। ফুটবলকে ঘিরেই এখন সব ভালবাসা। তবে অবশ্যই এটাকে উপভোগ করতে হবে।’ বুধবার রোমার বিপক্ষে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগেও লিভারপুলের হয়ে প্রথম গোলটা করেছিলেন সাদিও মানে। এই গোলের সৌজন্যেই নতুন এক রেকর্ড গড়ে লিভারপুলের আক্রমণত্রয়ী। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে লিভারপুলের আক্রমণভাগের তিন তারকা সাদিও মানে, মোহাম্মদ সালাহ ও রবার্তো ফিরমিনোর চলতি মৌসুমে এটি ২৯তম গোল। একই টুর্নামেন্টে যা কোন দলের আক্রমণভাগের তিন তারকার সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। এর আগে একই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সর্বোচ্চ ২৮ গোলের রেকর্ড গড়েছিল রিয়াল মাদ্রিদের বিবিসি খ্যাত তিন স্ট্রাইকার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, করিম বেনজেমা এবং গ্যারেথ বেল। ২০১৩-১৪ মৌসুমে এই কীর্তি গড়েছিল তারা। ২০১৭-১৮ মৌসুমে দল হিসেবে লিভারপুল প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছে মোট ৪৬ বার। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ১৪ ম্যাচ খেলে এটাও লিভারপুলের নতুন রেকর্ড। এর আগে ১৬ ম্যাচ খেলে ৪৫ গোল করেছিল স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সিলোনা। এবার ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে গড়া বার্সিলোনার সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেল জার্গেন ক্লপের দল।
×