ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আগামী ২৬ মে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে শিরোপা যুদ্ধে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি লিভারপুল

ফাইনালের আগেই উত্তেজনা

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৫ মে ২০১৮

ফাইনালের আগেই উত্তেজনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দল দু’টি ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের আসরে সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল সেই ৩৭ বছর আগে। অর্থাৎ ১৯৮১ সালে। তখন অবশ্য নাম উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ছিল না, ছিল ইউরোপিয়ান কাপ। সেবার উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনাল মহারণে স্প্যানিশ পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংলিশ জায়ান্ট লিভারপুল। দীর্ঘ প্রায় চার দর্শক পর আবারও দল দু’টি ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের আসরে ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে। আগামী ২৬ মে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে শিরোপা যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে দল দু’টি। ম্যাচটি নিয়ে ইতোমধ্যে ফুটবলবিশ্বে চলছে উত্তেজনা, আলোচনা। তবে সবকিছু ছাপিয়ে দল দু’টির খেলোয়াড়দের মধ্যে যে কথার লড়াই শুরু হয়েছে তাতে উন্মাদনা আরও বেড়েছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। কেউ কাউকে নিয়ে ভীত নয় বলেও জানিয়েছে। এবার রিয়ালের সামনে রেকর্ড ১৩ আর লিভারপুলের ষষ্ঠ শিরোপার হাতছানি। তার চেয়ে বড় কথা, রিয়ালের সামনে ঐতিহাসিক টানা তিন শিরোপা জয়ের হাতছানি। অন্যদিকে ১১ বছর পর ফাইনালে আসা লিভারপুল ১৩ বছর পর শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া। অর্থাৎ ২০০৫ সালে সর্বশেষ ট্রফি জেতা দ্য রেডসরা ২০০৭ সালের ফাইনালে হেরে যায় ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানের কাছে। মোহাম্মদ সালাহ, সাডিও মানে, জেমস মিলনাররা তাই মুখিয়ে আছেন ট্্রফির জন্য। তবে কাজটা যে সহজ হবে না তা বলাইবাহুল্য। কেননা ঐতিহাসিক হ্যাটট্রিক ট্রফি জয়ের সুযোগ তাদের, তাছাড়া ৩৭ বছর আগের ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নেয়ারও মোক্ষম সুযোগ এসেছে। কিয়েভে তাই ধুন্ধুমার লড়াই হতে চলেছে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। এদিকে লিভারপুল তারকা সালাহ বলেছেন, তিনি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর সঙ্গে লড়াই নিয়ে ভাবছেন না। ফাইনালে জেতাই তাদের আসল লক্ষ্য। ফাইনালটাকে ব্যক্তিগত লড়াইয়ের পর্যায়ে নিয়ে আসাটা উচিত হবে না জানিয়ে সালাহ বলেন, এটা সালাহ ও রোনাল্ডোর মধ্যে ফাইনাল হবে না। আমি অসাধারণ একটি দলের হয়ে খেলছি। আমাদের দারুণ সব খেলোয়াড় আছে। অসাধারণ টিমওয়ার্ক দিয়েই ফাইনালে এসেছি আমরা। আমি এটা একা করতে পারি নাÑ এটা দলীয় কাজ। যখন আমরা একটা গোল করি, এর কারণ দাঁড়ায় আমরা সবাই ভাল খেলছি। যখন আমরা গোল হজম করি, তখন এর অর্থ দাঁড়ায় আমাদের সবাইকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের ব্যালন ডি’অর জয়ের লড়াইয়েও অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়াতে পারেন সালাহ। কিন্তু ২৫ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়ের একমাত্র ভাবনা এখন ফাইনালে দলকে জেতানোয় সহযোগিতা করা। এ প্রসঙ্গে মিসরীয় তারকা বলেন, আমি জানি, আরবের সব মানুষ আমার মঙ্গল কামনা করে। আমার প্রতিটা জয়ে তারা খুশি হয়। তবে এই মুহূর্তে আমি কেবল ফাইনাল নিয়ে এবং এ্যানফিল্ডে ট্রফি নিয়ে আসার ব্যাপারেই ভাবছি। রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোস সালাহকে সম্মান করলেও ভয় পেতে নারাজ। স্পেন অধিনায়কের কাছে লিভারপুলের এগারো খেলোয়াড়ের একজন সালাহ; এর বেশি কিছু নয়। রামোস বলেন, আমরা এই মৌসুমে দেখেছি সালাহ কি করতে পারে। কিন্তু আমরা লিভারপুলের যে এগারো জনের মুখোমুখি হব সে শুধু তাদের একজন। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে আমি বিশ্বের সেরা ফরোয়ার্ডদের মুখোমুখি হয়েছি। তাদের অনেকেই সর্বকালের সেরা বলে বিবেচিত। আমার কাছে কখনই ভয় বলে কিছু নেই। হ্যাঁ, শ্রদ্ধা আছে কিন্তু কখনই ভয় নেই। টুর্নামেন্টের লিভারপুলের উঠে আসাটা চমক। অন্যদিকে শেষ পাঁচ মৌসুমে চতুর্থবারের মতো ফাইনালে পৌঁছেছে রিয়াল। এবারও শিরোপা জিততে আত্মবিশ্বাসী রামোস বলেন, আমরা অহঙ্কারী হতে পারি না কিন্তু আত্মবিশ্বাসী আমরা হতেই পারি। আমরা জানি, চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়টা রিয়াল মাদ্রিদের ডিএনএতে আছে। আমরা দ্বিতীয়বারের মতো আমাদের শিরোপা ধরে রাখতে প্রস্তুত। সবার প্রতি সম্মান রেখে বলছি, টুর্নামেন্টের শুরুতে লিভারপুল ফাইনালে উঠবে মানুষ এটা হয়তো ভাবতে পারেনি। কিন্তু তারা এখানে কারণ তারা এখানে থাকার যোগ্য। একটা দল হিসেবে আমরা জানি কিভাবে ফাইনাল খেলতে হয় এবং আমরা প্রস্তুত। রিয়াল যেমন লিভারপুলকে ভয় পাচ্ছে না তেমনি জার্গেন ক্লপের দলও স্প্যানিশ পরাশক্তিদের নিয়ে ভীত নয়। দ্য রেডসদের সেনেগালের তারকা সাডিও মানে তেমনই বলেছেন। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত ৯টি গোল করা মানের বিশ্বাস নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক শেষ করতে পারবেন তারা। মানে বলেন, রিয়ালের জন্য আমাদের শ্রদ্ধা আছে। তারা বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। কিন্তু আমরা লিভারপুল। আমরা শক্তিশালী, আমরা বিশ্বের যে কোন দলকে হারাতে পারি। আমরা সেটা বিশ্বাস করি। সুতরাং আমরা বিশ্বাস করি, আমরা তাদের হারাতে পারব। আমরা সেখানে (কিয়েভে) যাব এবং সমর্থকদের ও ক্লাবের জন্য লড়ব। ভয়হীনভাবে খেলে ফাইনালে জেতার চেষ্টা করব।
×