ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমরা প্রমাণ করলাম’

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৫ মে ২০১৮

‘আমরা প্রমাণ করলাম’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ২০০০ সালে প্রথম টেস্ট আঙ্গিনায় পা রাখে। শুরুর সময়টি মসৃণ ছিল না। কাটা বেছানো ছিল। বাংলাদেশ যখনই খারাপ খেলেছে তখনই হায় হায় রব উঠেছে। নেতিবাচক কথার শেষ ছিল না। দেখতে দেখতে বাংলাদেশ এখন টেস্ট ক্রিকেটের ১৮ বছরে। সম্প্রতি প্রথমবারের মতো টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের অষ্টম স্থানেও উঠেছে। এই যে সাফল্য তা শুরুর দিকে যে নেতিবাচক কথা; বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। তার জবাব হিসেবেই ধরছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান। টেস্টের এই সাফল্য সেই নেতিবাচক কথাগুলোকে উড়িয়ে দেয়া প্রমাণ হিসেবেই আকরামের কাছে হাজির হয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটের সাফল্য নিয়ে বলতে গিয়ে শুক্রবার এমনই বলেন আকরাম। ওয়ালটন মাস্টার্স ক্রিকেট কার্নিভ্যাল খেলা চলার মাঝপথে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বর্তমান বিসিবির পরিচালক আকরাম জানান, ‘এটা আমাদের জন্য খুব ভাল সাফল্য। বাংলাদেশ, টেস্টে আমরা উন্নতি করেছি। অনেক ভাল লাগছে। যেহেতু আমরা যখন টেস্ট শুরু করেছিলাম অনেকে কিন্তু অনেক নেতিবাচক কথা বলেছে। কিন্তু আমরা প্রমাণ করলাম।’ সেই প্রমাণের দলিল হিসেবে শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে হারানোর স্মৃতিও সামনে তুলে ধরলেন ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ী অধিনায়ক আকরাম, ‘বিশেষ করে শ্রীলঙ্কাকে হারানো, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের মতো তিনটা দলকে হারিয়েছি। এটাই সেটার (নেতিবাচক কথার) প্রমাণ।’ এ উন্নতি এখন ধরে রাখার দিকেই মনোযোগ দিতে চান আকরাম, ‘উন্নতি সবসময়ই ভাল। তবে এটা ধরে রাখা কঠিন। আল্লাহর রহমতে যেভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, খেলোয়াড়দের নৈপুণ্য, ক্রিকেট বোর্ডের পরিকল্পনা, সবাই যেভাবে আমরা কাজ করছি, আমরা যদি এভাবে করতে থাকি, আমার বিশ্বাস যেহেতু বাংলাদেশে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে। আমরা যদি সঠিকভাবে সবকিছু পরিচালনা করতে পারি ইনশাআল্লাহ আমি, আমরা স্বপ্ন দেখছি যে আরও এগিয়ে যাব।’ বাংলাদেশকে টেস্টের আট নম্বরে আসতে প্রায় ১৮ বছর লেগে গেছে। আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশকে কোথায় দেখতে চান? আকরামকে এ প্রশ্ন করতেই আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী সুরে আকরাম জানান, ‘আসলে বলা কঠিন। টেস্টে আমরা ভাল খেলোয়াড় পাচ্ছি। কিন্তু যে রকম পাই। তারা ওইরকমই থাকে। আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড় আছে পাঁচ ছয়জন, সাকিব, তামিম, মুশফিক, রিয়াদ, মাশরাফি; ওরা যেভাবে এসে নিজেদের উন্নতি করেছে, এ ধরনের উন্নতিটা খুবই দরকার। এ জিনিসটা খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগতভাবে আসতে হবে। জিনিসটা আসলেই আমি মনে করি যে আমরা ভাল অবস্থায় যাব। যেভাবে আমরা খেলে যাচ্ছি, যেভাবে উন্নতি করছি, আমার মনে হয় নিশ্চয়ই আগামী ৫ বছরে আমরা আরও উন্নতি করব।’ ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো ঠিক ছিল না বলেই পিছিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ? আকরাম আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে, সেই দিকেই নজর দিচ্ছেন। সঙ্গে আগে টেস্ট বেশি খেলার সুযোগ না থাকাটাকেও সামনে তুলে ধরেছেন। বলেছেন, ‘আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছে। অনেকগুলো ভেন্যু হয়েছে ভাল। এখানে একটা বড় জিনিস যে আমরা টি২০ যত খেলছি, উন্নতি করছি। টেস্ট খেলেছি। তবে সুযোগ কম দেয়া হয়েছিল। যেহেতু এখন আমরা বেশি টেস্ট খেলছি। আমরা উন্নতি করব।’ সামনেই বাংলাদেশের ব্যস্ত সূচী। শুরুটা হচ্ছে জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে। এ সিরিজে সিনিয়র ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দেয়া হতে পারে, এমন গুঞ্জন উঠেছিল। বিশেষ করে সাকিব, মুস্তাফিজ আইপিএল, নিদাহাস ট্রফি খেলছেন। টানা খেলার মধ্যেই আছেন। আবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজও আছে। তাই এ কথা উঠেছে। কিন্তু আকরাম স্পষ্ট জানিয়ে দেন। তা হবে না, ‘নাহ। খেলোয়াড়রাও কিন্তু কোন সময় দেশের খেলা বাদ দিয়ে অন্য কোন খেলায় নেই। এটা খুবই ভাল দিক। যেহেতু আমাদের এখন উন্নতির জায়গা, এখন চেষ্টা করছি তিনটা ফরমেটেই ভাল করার। সেরা যে দল, সেটাই আমরা পাঠাব।’ ইনজুরিতে পড়া তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম, তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজদের আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের আগেই পাওয়া যাবে বলেও মনে করছেন আকরাম। তারা সিরিজের আগেই সুস্থ হয়ে উঠবেন বলেই বিশ্বাস আকরামের, ‘আমরা চেষ্টা করছি, ওরা সবাই আফগানিস্তান সিরিজের আগে ফিট হয়ে যাবে। যদি আবার কোন ইনজুরিতে না পড়ে।’ অবশ্য এখনও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভারতের দেরাদুনে অনুষ্ঠেয় টি২০ সিরিজটি হবে কিনা তা নিশ্চিত নয়। আকরাম তাই জানান, ‘আমরা লোক পাঠিয়েছি। ও এসে আমাদের রিপোর্ট দিলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’ ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির ম্যানেজার সাব্বির খান দেরাদুনে গেছেন। তিনি সেখানকার কন্ডিশন, উইকেট, ব্যবস্থাপনা; সব দেখছেন। তিনি বাংলাদেশে এসে বোর্ডকে বিস্তারিত জানাবেন। এরপরই হবে সিদ্ধান্ত।
×