ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দুই রোহিঙ্গা সহোদর গ্রেফতার

চট্টগ্রামে ইয়াঙ্গুন থেকে আসা ১৩ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ৫ মে ২০১৮

চট্টগ্রামে ইয়াঙ্গুন থেকে  আসা ১৩ লাখ পিস  ইয়াবা উদ্ধার

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ইয়াবা নিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা। অসাধু শ্রেণী ও পেশার মানুষের কারণে সম্ভব হচ্ছে ইয়াবা পাচার। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অভিযানে ৪৫ কোটি টাকার ১৩ লাখ ইয়াবা নিয়ে ধরা পড়ল দুই রোহিঙ্গা সহোদর। গোয়েন্দা পুলিশ এসব ইয়াবার সঙ্গে একটি প্রোবক্স গাড়ি উদ্ধারের কথা বললেও গাড়ির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রশ্ন উঠেছে, গাড়িটি গেল কোথায়। বর্মার নাগরিক লা-মিম এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। জানা গেছে, গত বছর ৭ অক্টোবর ইয়াবা পাচারকারী আশরাফ আলী সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে আসে। এর আগে রোহিঙ্গা আব্দুর রহিমের মাধ্যমে লা-মীমের সঙ্গে যোগাযোগ করে কয়েকবার মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান আনা হয় সমুদ্রপথে। গত ৭ এপ্রিল বিমানে আসামি আশরাফ আলী ঢাকা থেকে ইয়াঙ্গুন যায়। রোহিঙ্গা আব্দুর রহিমসহ ইয়াঙ্গুনে হোটেল এলিমিউনে রাত যাপন করে আশরাফ। মিয়ানমারের নাগরিক লা-মিমের কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করার পর সাগর উত্তাল থাকায় রওনা দিতে দেরি হয় আশরাফের। গত ৩০ এপ্রিল রেঙ্গুন হতে একটি ট্রলার ও একটি স্পীডবোটসহ ৪৫ কোটি টাকার ১৩ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে রওনা হয়। পথিমধ্যে সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছাকাছি সমুদ্রেই ট্রলার হতে ইয়াবাগুলো স্পীডবোটে তোলা হয়। ধুরন্ধর ও ইয়াবা পাচারের মূল হোতা আশরাফ সমুদ্র অভিযানে পটু। কারণ, আশরাফ নিজেই স্পীডবোট চালাতে জানে। ইয়াবাগুলো ওয়াটারপ্রুফ বস্তায় ঢুকিয়ে রশি দিয়ে পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে আবার চলা শুরু করে। আবারও পথিমধ্যে কুতুবদিয়া চ্যানেলে ঝড়ের কবলে পড়ে স্পীডবোট উল্টে যায়। স্থানীয় মাছ ধরা ট্রলারের সহায়তায় ইয়াবার বস্তাগুলো উদ্ধার করা হয়। কিন্তু বস্তায় কি আছে জানতে চাইলে ট্রলার মাঝিকে বলে এগুলো কসমেটিক্স। মিয়ানমার থেকে আনা হচ্ছে। অবশেষে মাছ ধরা ট্রলারের সহায়তায় ইয়াবাগুলো গত ২মে ভাটিয়ারির জেলেপাড়া ঘাটে নিয়ে আসে আশরাফের ভাড়া করা ট্রলার। আশরাফ আলী জানিয়েছে, ১৯৯৮ সাল হতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে ছিল সে। সৌদি আরবে থাকাকালীন রোহিঙ্গা আব্দুর রহিমের সঙ্গে পরিচয় হয়। বর্মার নাগরিক রোহিঙ্গা আব্দুর রহিমই আশরাফকে পরিচয় করিয়ে দেয় লা-মীমের সঙ্গে। রেঙ্গুন থেকে প্রথমে থাইল্যান্ড যায় আশরাফ। এরপর থাইল্যান্ড থেকে সিঙ্গাপুর। সর্বশেষ সিঙ্গাপুর থেকেই সৌদি আরব গিয়ে অবস্থান নেয় সে। গত ৩মে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হালিশহর থানা এলাকায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে শান্তিবাগে শ্যামলী আবাসিক এলাকার জেড এ এ্যাঞ্জেল্স বিল্ডিঙের ৪র্থ তলা (ফ্ল্যাট নং- এফ ৪/বি) রাত সাড়ে ১০ টা থেকে ভোর ৩টা পর্যন্ত তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে গোয়েন্দারা। এ সময় আশরাফের নির্দেশনা অনুযায়ী ২টি বস্তায় ৩০টি বড় প্যাকেট থেকে ৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এরপর ভবনের নিচে থাকা গাড়ি পার্কিংয়ে অভিযান চালানো হয়। পার্কিংয়ে থাকা আসামিদের প্রাইভেটকার (চট্টমেট্রো-গ-১১-৫৯২৪)-এর পেছনের বেয়নেটের নিচ থেকে ৫টি বস্তায় থাকা ১০০ টি বড় প্যাকেট থেকে ১০ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। ৪৫ কোটি টাকা মূল্যের এসব ইয়াবার ওজন প্রায় ১৩০ কেজি। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় আশরাফ আলী (৪৭) ও তার ছোট ভাই মোঃ হাসানকে (২২)। বান্দরবানের নাইক্ষ্যাংছড়ির গিলাতলির মৃত তৈয়বের ছেলে তারা।
×