ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাজারে ধানের দাম কম ॥ দুশ্চিন্তায় কৃষক

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ৫ মে ২০১৮

বাজারে ধানের দাম কম ॥ দুশ্চিন্তায় কৃষক

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ৪ মে ॥ আমতলীতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভাল ফলন হওয়ায় আশাবাদী হলেও বাজারে ধানের দাম কম থাকায় দুচিন্তায় কৃষকরা। কৃষকরা জানান, ধানের দাম কম থাকায় লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর আমতলীতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়ছিল ১৩০ হেক্টর। এ বছর ওই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৩০ গুণ বোরো চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। বোরো ধান চাষের উপযুক্ত সময় মধ্য কার্তিক থেকে শুরু করে ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। বীজতলা থেকে শুরু করে পাঁচ মাসের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল বোরো ধানের ফলন আসে। বৈশাখের শুরুতে কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের বিরি-২৮, বিরি-২৯,বিরি-৪৭ ও বিরি-৫৮ ধান চাষ করছে কৃষকরা। কৃষকরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বাজারে প্রতিমণ ধান ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় দুশ্চিন্তায় কৃষকরা। কৃষকরা জানান, এক একর জমিতে উৎপাদন খরচ ৩০ হাজার টাকা। ওই জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০/৬০ মণ। বাজারে প্রতিমণ ধান ৬৫০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে ওই জমিতে আয় হবে ৩০-৩৫ হাজার টাকা। কৃষকরা আরও জানান, টাকা ও শ্রম বিনিয়োগ করে যা আয় হবে তা দিয়ে পোষায় না। শুক্রবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার গুলিশাখালী, আঠারোগাছিয়া, কুকুয়া, হলদিয়া, চাওড়া, আমতলী সদর ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বোরো ধান কাটছে কৃষকরা। চাওড়া কাউনিয়া গ্রামের জিয়াউদ্দিন জুয়েল জানান, আমতলী বাজারে ২৫ মণ বিরি-২৮ ধান ৭৫০ টাকা ধরে বিক্রি করেছি। আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা জানান, ফলন ভাল হয়েছে। বাজারে প্রতিমণ ধান ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় অস্বস্তিতে কৃষকরা। চিলা গ্রামের জাফর হাওলাদার জানান, তিন একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম। ফলন ভালই হয়েছে। পূর্ব চিলা গ্রামের কৃষক জলিল হাওলাদার, মজিবর, রিপন, নাঈম ও রুবেল হাওলাদার জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে ধানের দাম কম থাকায় তেমন লাভবান হব না। ঘোপখালী গ্রামের আফজাল শরীফ জানান, এ বছর বোরো চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে ধানের দাম কম। আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম বদরুল আলম বলেন, সরকার দক্ষিণাঞ্চলে বোরো ধান চাষে অগ্রাধিকার দেওয়ায় উপজেলা কৃষি বিভাগের প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে। এ বছরের বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার হেক্টর। আশা করি এ বছর যেভাবে কৃষকরা ফলন পেয়েছে আগামীতে তারা বোরো ধান চাষে আরও উৎসাহিত হবে। তিনি আরও বলেন বাজারে ধানের দামটা বেশি থাকলে কৃষকরা আরও লাভবান ও উৎসাহী হতো।
×