ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টিভিএস ফ্যাক্টরির বালি দিয়ে খাল ভরাট

ভালুকায় ৮০ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ৫ মে ২০১৮

ভালুকায় ৮০ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভালুকা, ময়মনসিংহ, ৪ মে ॥ ভালুকা উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নের বাটাজোর ও কাচিনা গ্রামে নির্মাণাধীন টিভিএস ফ্যাক্টরি কর্তৃক খাল ভরাট করায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ৪/৫টি গ্রামের হাজার হাজার মণ বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানির নিচে থাকায় ধান কাটতে পারছেন না কৃষকরা । কাচিনা ও বাটাজোর গ্রামের কৃষকদের মধ্যে- ছফির উদ্দীন জানান তার দেড় একর, শামছুল হক ২ একর জমির ধান প্রায় এক ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আমজাদ আলীর ২ একর, শাহাবদ্দীন ভা-ারীর ৩ কাঠা ধান ও বাড়িতে পানি উঠেছে, শাহ জাহান মিয়ার ২২ কাঠা, নেহাজ আলীর ৩ কাঠা, জসীম উদ্দীনের ১০ কাঠা, মজিবর রহমানের ৯ কাঠা, আশরাফ উদ্দীনের এক একর পানির নিচে, জুলহাস উদ্দীনের ৪ কাঠা, শামছুদ্দীনের ২ একর পানির নিচে, মোজাম্মেল হকের ৮ কাঠা, সিদ্দিকুর রহমানের ৮ কাঠা, জালাল উদ্দীনের ৩ একর এক ফুট পানির নিচে, চাঁন মিয়ার ৩ একর এক ফুট পানির নিচে, নজরুল ইসলামের ৮ কাঠা, আব্দুল কদ্দুসের ২ একর, আফাজ ফকিরের ২ একর, জুলহাস ফকিরের ১৫ কাঠাসহ শত শত কৃষকের বোরো ধান জলাবদ্ধতায় নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়াও আফতাব উদ্দীনের দুটি পুকুর ডুবে যাওয়ায় তার ৪/৫ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে বলে জানান। পাশে রুহুল আমিনের ৭/৮টি পুকুরের পাড় ডুবু ডুবু অবস্থার মধ্যে রয়েছে। উপজেলার কাচিনা-বাটাজোর এলাকায় নির্মিতব্য ওই ফ্যাক্টরি ও স্থানীয় লোকজনের ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ ও বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় এ জলাবদ্ধতা, কাচিনা, পালগাঁও, তামাট, কাদিগড়, ঢাকুরিয়া ও পাড়াগাঁ গ্রামে বোরো ধান ক্ষেত তলিয়ে প্রায় ৮০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ার পথে বলে জানিয়েছেন, ওই এলাকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হক। ওই এলাকার কৃষক সমাজের প্রতিনিধি কমরেড মোজাম্মেল হক জানান, ভালুকার বন খীরু নদীর মল্লিকবাড়ী হতে সালদাহ নামে একটি অতি পুরানো খাল কাদিগড়, তালাব, পালগাঁও, কাচিনা-বাটাজোর সড়কের সেতুর নিচ দিয়ে দক্ষিণে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর হয়ে তুরাগ নদীতে মিলেছে। এই এলাকার বর্ষার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটি সম্প্রতি টিভিএস কোম্পানি কর্তৃক রাস্তার দক্ষিণ অংশে বিশাল এলাকা জুড়ে ফসলি জমিতে বালি ভরাট করায় উজানের কাদিগড়, পালগাঁও, তামাট, ঢাকুরিয়া, কাচিনা ও বাটাজোর গ্রামের আংশিক এলাকাজুড়ে বৃষ্টির পানি জমে বিশাল জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ওই সব গ্রামে কয়েক হাজার একর জমির উঠতি বোর ধান পানির নিচে তলিয়ে যায়। কাচিনা ইউপি চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান লিটন জানান, সাময়িকভাবে পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে, আশা করা যায় খুব শীঘ্রই এ অবস্থা থেকে রেহাই মিলবে। তবে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ সময় সাপেক্ষ। ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার পাল জানান, কাচিনা-বাটাজোর ছাড়াও উপজেলার রাজৈ, ভাটগাঁও এলাকায় প্রায় ৪০/৫০ হেক্টর বোরো ধানের জমি পানিতে তলিয়ে আছে। পানিবন্ধীর কারণ হিসেবে তিনি অতি বৃষ্টি ও ফ্যাক্টরি ও বিভিন্নভাবে খাল ভরাট হওয়াকে দায়ী বলছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করছেন বলেও তিনি জানান।
×