ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আত্মবিশ্বাসী

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ৫ মে ২০১৮

আত্মবিশ্বাসী

যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব ও অস্ট্রেলিয়া- তিনটি রাষ্ট্র সফর শেষে ঢাকায় বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রীকে যথেষ্ট আশাবাদী ও আত্মবিশ্বাসী বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ শক্তিধর কয়েকটি দেশে তাৎপর্যপূর্ণ সফর থেকে সংগত কারণেই বাংলাদেশের প্রতি অন্যান্য দেশের সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সেইসঙ্গে স্বদেশের ভাবমূর্তি সম্বন্ধে সম্যক ধারণা পাওয়া সম্ভব। বিশেষ করে লন্ডনে সদ্যসমাপ্ত কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে একজন বিশ্বনেতা হিসেবে শেখ হাসিনার পরিচিতি ও ইমেজের ইতিবাচক প্রসার ঘটেছে। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বসুলভ প্রস্তাবনা ও উপস্থাপনার কারণে ওই সম্মেলনে বাংলাদেশ একটি সম্মানজনক অবস্থানে সমাসীন হয়েছে, একথা স্বীকার করতেই হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি বিশ্ব নেতাদের সংহতি প্রকাশ নিঃসন্দেহে একটি বড় ধরনের সাফল্য। কমনওয়েলথ সম্মেলনে একদিকে যেমন সদস্যভুক্ত দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরা অসহায়-নির্মম নির্যাতনের শিকার ১০ লক্ষাধিক উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে বাংলাদেশে সাময়িক আশ্রয় প্রদানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের প্রশংসায় ছিলেন পঞ্চমুখ, ঠিক তেমনি আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণে দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টির ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন কমনওয়েলথ সম্মেলনে বিশ্বের বাঘা বাঘা সরকার প্রধানরা। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারী বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হাসিমুখে সাবলীলভাবে সাংবাদিকদের নানামুখী প্রশ্নের জবাব দেন। তাঁর বক্তব্য থেকে জানা গেল রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারে ঘরবাড়ি তৈরি করে দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে ভারত, চীন, জাপান, রাশিয়া ও তুরস্ক। আগামী নির্বাচন নিয়ে একাধিক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে নির্বাচনে তাঁর দলের জয়লাভের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস ফুটে ওঠে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে অবশ্যই সবসময় নির্বাচন হলে আমরা জয়ী হব এটা আশাও করি। মানুষ যদি দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে না চান তাহলে নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। উল্লেখ্য, তারেক রহমান একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার অপরাধ শুধু আমাদের দেশে নয়, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই প্রতিনিধি এসেও সাক্ষী দিয়ে গেছেন। সে দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে। একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদেশের মাটিতে বসে প্রতিদিন আন্দোলন করে, ষড়যন্ত্র করে, এটি বিস্ময়ের ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত ছেলে আন্দোলন করে তার মায়ের মুক্তির জন্য! সেও (খালেদা জিয়া) তো সাজাপ্রাপ্ত আসামি।’ তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলার বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে পুনর্ব্যক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ আশা করতে পারে যে, ব্রিটিশ সরকার তাদের মাটিতে এ ধরনের অপরাধী যে দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলা থেকে শুরু করে মানিলন্ডারিংসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তার ব্যাপারে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে। নিজের অবস্থান বারবার পরিষ্কার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ থেকে একজন রাষ্ট্রনেতার পরিকল্পনার দৃঢ়তা, নিজের প্রতি আস্থা এবং সামগ্রিক বিচারে দেশবাসীর জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ বিষয়ে তাঁর মনোভাবের পরিচয় মেলে। তিনি আবারও বললেন যে, ‘আমার কোন ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়া নেই, জীবনের পরোয়াও আমি করি না। দেশ ও জনগণের কল্যাণ করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য ও ব্রত। তাই দেশ ও জনগণের জন্য যেটি মঙ্গল সেটিই আমি করব।’ আন্তরিক আত্মবিশ্বাসী স্পষ্ট বক্তব্যের জন্যে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
×