ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ধূলিঝড় ও বজ্রপাতে উত্তর ভারতে শতাধিক মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৪ মে ২০১৮

ধূলিঝড় ও বজ্রপাতে উত্তর ভারতে শতাধিক  মৃত্যু

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ প্রবল ধুলিঝড় ও বজ্রপাতে বিপর্যস্ত ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় তিন রাজ্য। বুধবার দেশটির উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও পাঞ্জাব রাজ্যে আকস্মিক ধুলিঝড়, বজ্রপাত ও বৃষ্টিতে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছে বহু লোক। এছাড়া উত্তরাখ- রাজ্যেও ধুলিঝড় হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া দফতর জানায়, বুধবার রাতে এসব রাজ্যের ওপর দিয়ে ১৩০ কিলোমিটার বেগে ধুলিঝড় বয়ে যায়। এ সময় অনেক কাঁচাঘর ধুলির নিচে চাপা পড়লে লোকজন মারা যায়। অনেক পাকাবাড়ির দেয়াল ধসে গেছে। এছাড়া শয়ে শয়ে গাছ উপড়ে পড়েছে ও বহু বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে। ভারতে প্রতিবছর এ ধরনের ধুলিঝড় হয়। তবে এবারের নিহতের সংখ্যা কয়েক দশকের মধ্যে সর্বাধিক। খবর এএফপি, বিবিসি ও এনডিটিভির। শিবম লোহিয়া নামের এক প্রত্যক্ষ্যদর্শী বলেন, আমি রাজস্থানের আলোয়ার জেলার এক রিসোর্টে ছিলাম। ধুলিঝড় শুরুর পর আমি দৌড়ে নিরাপদে পৌঁছাই। তবে আমার গাড়িটি ধুলির নিচে চাপা পড়ে। আমি গত ২৫ বছরে এই ধরনের ঝড় দেখিনি। আমার সামনে প্রকা- গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটিগুলো উপড়ে পড়ছিল। নিহতদের মধ্যে উত্তর প্রদেশ রাজ্যে ৬৫, রাজস্থানের মরু এলাকায় ৩৩ ও বাকি দুইজন পাঞ্জার রাজ্যের। ভারতের আবহাওয়া দফতর জানায়, প্রচ- গরম থেকে বাঁচতে এসব রাজ্যের লোকজন ঘরের মধ্যে অবস্থান করছিল। ধুলিঝড়ের সময় লোকজন ঘরের মধ্যে ঘুমাচ্ছিল। পাশাপাশি গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপরেও অনেক হতাহত হয়। হতাহতের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে। আগামী শনিবার পর্যন্ত এ ধরনের ধুলিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দফতর। নিহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সংকট মোকাবেলায় রাজ্য সরকারগুলোকে সহায়তার প্রস্তাব দেন তিনি। উত্তর প্রদেশ ও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীদ্বয় প্রতিজন নিহতের পরিবারকে চার লাখ ও প্রতিজন আহতকে ৫০ হাজার করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। উত্তর প্রদেশের শুধু আগ্রাতেই ৩৬ জন মারা গেছে। এছাড়া রাজ্যটির সাহারানপুরে দুইজন, বেরেলি, রামপুর ও মুরাদাবাদে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, বলেছেন উত্তর প্রদেশের উর্ধতন সরকারী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার। ঝড়ে আগ্রায় ও সাহারানপুরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রাজস্থান রাজ্যের পূর্বাঞ্চল দিয়ে বয়ে যাওয়া তীব্র ধুলিঝড়ে আলওয়ার, ধোলপুর ও ভারতপুর জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব জেলার ঘুমিয়ে থাকা লোকজনের ওপর ঘরের ছাদ ধসে পড়ে অধিকাংশের মৃত্যু হয়। ধোলপুরে বজ্রপাতে একটি গ্রামের ৪০টি মাটির ঘর পুড়ে যায়। রাজধানী দিল্লী থেকে ১৬৪ কিলোমিটার দূরের আলওয়ারে গাছ উপড়ে পড়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর গত রাত থেকে জেলাটি বিদ্যুতহীন অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ভারতপুরে, সেখানে ১২ জন মারা গেছে। বুধবার দিল্লীতেও ধুলিঝড় ও পরে ভারি বৃষ্টিপাত হলেও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। বুধবার রাজস্থানের কয়েকটি অংশে তীব্র দাবদাহ বয়ে যায়। এ সময় কোটা অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫ দশমিক ৪ ডিগ্রী রেকর্ড করা হয়। রাজ্যটির বিভিন্ন অংশে ধুলিঝড়, দাবদাহ ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া বিভাগ।
×