ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঝলক

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৪ মে ২০১৮

ঝলক

দীর্ঘ জীবন চান না যিনি দীর্ঘ জীবন সবার কাছেই প্রত্যাশিত। দীর্ঘ জীবন লাভের আশায় মানুষ কত কিছুই না করে। স্বাস্থ্যসম্মত জীবন-যাপন থেকে শুরু করে অনেক কিছুই থাকে সে প্রচেষ্টার মধ্যে। কিন্তু মানুষ যদি বহু বছর বেঁচে থাকে, তাহলে নিজেই কি নিজের মৃত্যু কামনা করে? দীর্ঘ জীবন থেকেও অনেকে পরিত্রাণ পেতে চান? ঠিক সে রকম একজন হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানী ডেভিড গুডঅল। তার বয়স এখন এখন ১০৪ বছর। গুডঅল এখন আর বেঁচে থাকতে চান না। সেজন্য স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নিতে তিনি সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন। গুডঅলের বয়স ১০৪ বছর হলেও তিনি এখনও শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। কিন্তু তিনি মনে করছেন, এ বয়সে তার কোন স্বাধীনতা নেই। অন্যের ওপর তাকে নির্ভর করতে হয়। গত বছর জন্মদিনের পালনের সময় গুডঅল বলেন, এ বয়স পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য আমি নিজেই অনুতপ্ত হচ্ছি। আমি ভাল নেই। আমি মারা যেতে চাই। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার একটি মাত্র প্রদেশ ছাড়া অন্য কোথাও স্বেচ্ছামৃত্যুর বিধান নেই। এ বিষয়টিকে খুব বেদনাদায়ক বলে মনে করছেন ১০৪ বছর বয়সী গুডঅল। সেজন্য স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য তিনি সুইজারল্যান্ডের একটি ক্লিনিকে যাচ্ছেন। লন্ডনে জন্ম নেয়া গুডঅল অস্ট্রেলিয়ার পার্থে একটি ছোট এ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন। ১৯৭৯ সালে তিনি পূর্ণকালীন কাজ থেকে অবসর নেন। কিন্তু এরপরও তিনি মাঠ পর্যায়ের গবেষণার সঙ্গে ব্যাপকভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার এডিথ কাওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা বেতনে গবেষণা করতেন। তার বয়স বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া এবং কাজ করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে বলেছিল বাসায় বসে কাজ করার জন্য। কিন্তু গুডঅল ১০২ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ ধরনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলার রায় তার পক্ষে আসে। গত ৭০ বছরে মিস্টার গুডঅল একশ’র বেশি গবেষণা প্রবন্ধ লিখেছেন। বেশি বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে গুডঅলকে গাড়ি চালানো ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি একসময় থিয়েটারের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। কিন্তু বয়সের কারণে সেটিও তাকে ছাড়তে বাধ্য করা হয়। গুডঅলের স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নেয়ার পেছনে আরেকটি কারণ আছে। গত বছর তিনি তার এ্যাপার্টমেন্টে পড়ে যান। এরপর দুইদিন পর্যন্ত তিনি নিখোঁজ ছিলেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, এমন অবস্থায় তার সেবা দেয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা একজনকে থাকতে হবে নতুবা তাকে একটি নার্সিং কেয়ারে স্থানান্তর করতে হবে। কিন্তু তিনি সেটা চাননি। গুডঅলের সঙ্গে তার পুরনো বন্ধুদের এখন আর দেখা হয় না। চলাচল সীমিত হয়ে গেছে তার। এমন অবস্থায় বেঁচে থাকার কোন অর্থ খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। তাই এখন মরতে চান গুডঅল। -বিবিসি অবলম্বনে। গর্ভপাত রোধে সাফল্যের পথে অকাল গর্ভপাত রোধে বিরাট সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছেন একদল ওলন্দাজ বিজ্ঞানী। দীর্ঘ গবেষণায় কৃত্রিম ভ্রুণ তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন তারা। এই ভ্রুণ তৈরিতে ইঁদুরের শরীর থেকে কোষ, বীর্য ও ডিম ব্যবহার করা হয়েছে। প্রখ্যাত নেচার জার্নাল সাময়িকীতে সম্প্রতি এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক নারীর কেন অকালে গর্ভপাত ঘটে এখন তার রহস্য উন্মোচিত হবে। একটি স্ত্রী ইঁদুরের কোষের সাহায্যে মাত্র কয়েক সপ্তাহের চেষ্টায় এই কৃত্রিম ভ্রুণ তৈরিতে সফল হন বিজ্ঞানীরা। গবেষক দলটি বলছে, এই গবেষণা মানুষের সন্তান জন্মদানে সহায়ক হতে পারে। খবরে বলা হয়েছে, অনেক নারী যে গর্ভবতী হয়েছেন তা বুঝে ওঠার আগেই তার গর্ভপাত ঘটে যায়। আজ পর্যন্ত গবেষকরা এর কোন সদুত্তর খুঁজে পাননি। ভ্রুণে অস্বাভাবিকতার দরুন এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় মানব শরীরে ভ্রুণ কিভাবে তৈরি হয় তা এই গবেষণায় দেখানো হয়েছে। কোষ, বীর্য ও ডিম দিয়ে কৃত্রিম ভ্রুণের যে প্রাথমিক কাঠামো তৈরি করা হয়েছে তা গবেষকদের আরও গবেষণার খোরাক জোগাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ম্যাসট্রিক্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্লিন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডাক্তার নিকোলাস রিভরন ও তার দল এই ভ্রুণ তৈরিতে সফল হয়েছে। এ কাজে তারা ইঁদুরের দেহ থেকে দুই ধরনের কোষ সংগ্রহ করে। তারপর তারা মানব শরীরের মতো অবিকল ভ্রুণ তৈরি করে। এরপর তারা এই ভ্রুণ ইঁদুরের শরীরে প্রতিস্থাপন করে প্রাথমিকভাবে সফল হয়। এর আগে এই ধরনের কৃত্রিম ভ্রুণ তৈরিতে আর কোন গবেষক দল সফল হয়নি বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। নিকোলাস রিভরন বলেন, আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হবে বড় আকারের ভ্রুণ তৈরি করা। কেননা বড় আকারের ভ্রুণ তৈরির পর বোঝা যাবে কেন নারীদের অকালে গর্ভপাত ঘটে যায়। বিশ্বের অনেক বিজ্ঞানী এই গবেষণাকে যুগান্তকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন। -বিবিসি অবলম্বনে।
×