ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৪ মে ২০১৮

নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার নির্বাচনকালীন সরকার গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে অবস্থান তুলে ধরলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানোর কোন পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকারে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলকেই আমন্ত্রণ জানানোর বিধান আছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, দশম সংসদ নির্বাচনের আগে যেভাবে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন করে নির্বাচনকালীন সরকার করা হয়েছিল, এবার একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেও তাই করা হবে। সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি নেতাদের সেই নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় আমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা, সেই প্রশ্ন সাংবাদিকরা রাখেন ওবায়দুল কাদেরের সামনে। জবাবে তিনি বলেন,গতবার যাদের প্রস্তাব করা হয়েছিল সেখানে শুধু সরকারে অংশগ্রহণ নয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ও বিএনপিকে অফার করা হয়েছিল প্রকাশ্যে। এখানে গোপনীয়তার কিছু ছিল না। সেটা পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারী দল হিসেবে। পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারী দল নয় এমন কাউকে আমন্ত্রণ জানানোর কোন চিন্তা-ভাবনা সরকারের নেই। সংবিধানে এমন কোন সুযোগ আছে বলেও আমার জানা নেই। সংবিধান অনুযায়ী দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদের নির্বাচন হতে হবে। সেই হিসেবে আগামী নির্বাচন হতে হবে ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোট বর্জন করা বিএনপি এখনও সেই দাবিতে অনড়। অন্যদিকে অনির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছেন, আগামী নির্বাচনও সংবিধান অনুযায়ী ক্ষমতাসীনদের অধীনেই হবে। আর তাতে অংশ না নিলে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে অবস্থান পরিষ্কার করেছে। বিএনপি নির্বচানে না এলে আওয়ামী লীগ এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে কাদের বলেন, কত দল আছে ইলেকশনে অংশগ্রহণ করবে, একক হবে কেন? স্বীকার করি, বিএনপি অবশ্যই একটা বড় দল। না এলে জোর করে আনব নাকি! নির্বাচনটা তাদের অধিকার, এটা কি সরকারের দয়ার দান? ডেকে আনতে হবে কেন? বেগম জিয়া কারাগারে আছেন, তাকে বাদ দিয়ে নির্বাচনে আসবেন কি আসবেন না এটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন হতে দেয়া হবে না বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধান অনুযায়ী অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবে নির্বাচন হবে। প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে, এ প্রক্রিয়া থেমে থাকবে না। বিএনপি আসবে না বলে নির্বাচনের ট্রেন থেমে যাবে এটা চিন্তা করার কোন কারণ নেই। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এক প্রশ্নে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, তারেক রহমান দণ্ডপ্রাপ্ত, তাই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকারের তাগিদে আছে। বিএনপি নেতারা কি চান? তারা একে অন্যকে সরকারের এজেন্ড বলে- এটাও তো আমরা জানি, তাদের নিজেদেরও তো ঠিক নেই। তারেক রহমান প্রশ্নে তাদের মধ্যে সমস্যা আছে, সেটা সবাই জানে, এ নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনকালীন সরকারের ‘নিষ্পত্তির’ যে দাবি বিএনপি জানিয়েছে, সে বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার মনে হয়, নির্বাচনকালীন সরকার নির্বাচন কমিশনের আওতায় পড়ে না। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিএনপির যে অভিযোগ, তা ইসির এখতিয়ারে নেই। সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, এই প্রশ্নের জবাব গতকাল প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন, কাজেই আমি এটা নিয়ে কথা বলব না। প্রাইম মিনিস্টার কালকে বলেছেন, গোটা জাতি শুনেছে।
×