ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের সারিতে নামল এবি

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ৪ মে ২০১৮

আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের সারিতে নামল এবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে এতদিন একমাত্র আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক সর্বনিম্ন ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকলেও সেই তালিকায় এবার যোগ দিচ্ছে এবি ব্যাংক। যে ব্যাংকটির ২০১৭ সালের দ্বিতীয়ার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ০.৮৩ টাকা। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে একমাত্র আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দিয়ে আসছিল। তবে এ তালিকায় এবার এবি ব্যাংকের নাম লেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পর্ষদ। যাতে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের পরে এবি ব্যাংক ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে যাচ্ছে। যা ৩ মে থেকে কার্যকর হবে। অর্থপাচার ও ঋণ জটিলতায় ব্যাংকটির ২০১৭ সালের ব্যবসায় বড় পতন হয়েছে। এই বছরটিতে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে মাত্র ০.০৫ টাকা। যার পরিমাণ আগের বছরে হয়েছিল ২ টাকা। এ হিসাবে ইপিএস কমেছে ১.৯৫ টাকা বা ৯৮ শতাংশ। ব্যাংকটির ২০১৭ সালে প্রথমার্ধে বা প্রথম ২ প্রান্তিকে মুনাফা হলেও শেষ ২ প্রান্তিকে লোকসান হয়েছে। যাতে প্রথমার্ধে শেয়ার প্রতি ০.৮৮ টাকা মুনাফা হওয়া এবি ব্যাংকের বছর শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ০.০৫ টাকায়। দেখা গেছে, ব্যাংকটির ২০১৭ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ইপিএস হয় ০.৩৫ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) হয় ০.৫৩ টাকা। তবে তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই- সেপ্টেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ০.১৭ টাকা। আর এই লোকসানের পরিমাণ শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বেড়ে হয়েছে ০.৬৬ টাকা। যাতে বছর শেষে নিট ইপিএস হয়েছে ০.০৫ টাকা। ২০১৭ সালের ব্যবসায় পতনের কারণে এবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া ব্যাংকটি নগদ লভ্যাংশ দেয়ার মতো সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। কারণ ওই বছরটিতে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ হয়েছে ঋণাত্মক ১২.২২ টাকা। ১৯৮৩ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ব্যাংকটি ভুয়া অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের নামে ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের কারণে জটিলতায় পড়ে। এই অর্থপাচারের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় গত ২৫ জানুয়ারি ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার অন্য দু’জন হলেন-ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন এ্যান্ড ট্রেজারি শাখার প্রধান আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও মূল পরিকল্পনাকারী ব্যাংকের গ্রাহক আটলান্টিক এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইফুল হক। গ্রেফতারের আগে একই অভিযোগে এই তিনজনসহ মোট আটজনকে আসামি করে রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। অন্য পাঁচ আসামি হলেন ব্যাংকের সাবেক এমডি শামীম আহমেদ চৌধুরী, মোঃ ফজলুর রহমান, ব্যাংকের হেড অব কর্পোরেট মাহফুজ উল ইসলাম, হেড অব অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট (ওবিইউ) মোহাম্মদ লোকমান ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ নুরুল আজিম। এদিকে সিটিসেলের নামে এবি ব্যাংকের গ্যারান্টি নিয়ে আটটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনিয়মের মাধ্যমে ৩৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগেও দুদক মামলা করে। এক্ষেত্রে আসামি করা হয় এবি ব্যাংকের সাবেক সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাইজার আহমেদ চৌধুরী, এম ফজলুর রহমান, শামীম আহম্মেদ চৌধুরী, বর্তমান এমডি মসিউর রহমান চৌধুরীকে। এছাড়া ব্যাংকের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা সালমা আক্তার, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মহাদেব সরকার সুমন, এসভিপি ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার সৈয়দ ফরহাদ আলম, আরশাদ মাহমুদ খান, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম।
×