ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনকে অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ৪ মে ২০১৮

কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনকে অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনের দুই শেয়ারবাজার শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বৃহস্পতিবার এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর আগে সোমবার দুপুর আড়াইটায় চীনের দুই শেয়ারবাজার শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদন দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শেয়ারহোল্ডাররা। একই দিন বিকেলে অনুমোদনের জন্য বিএসইসিতে প্রস্তাব জমা দেয় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ। ডিএসইর নব নির্বাচিত পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, বিএসইসি ৩০ এপ্রিল চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে মাইলফলকের সৃষ্টি হয়েছে। আর বিএসইসির এই অনুমোদনের মধ্য দিয়ে শেয়ারবাজার সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি চীনের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদনের জন্য ডিএসইর সেক্রেটারি মোঃ আসাদুর রহমান বিএসইসিতে প্রস্তাব জমা দিয়েছিল। তবে ১৯ মার্চ ডিএসইর দেয়া চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী করার প্রস্তাব অনুমোদন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। তবে কিছু শর্তসাপেক্ষে ডিএসই কর্তৃপক্ষকে নতুন করে সংশোধিত প্রস্তাব করার সুযোগ দেয়। এরই আলোকে ৩০ এপ্রিল ইজিএম আয়োজন করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। বিএসইসির ওই শর্তগুলোর মধ্যে ছিল- কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে এমন কোন চুক্তি করা যাবে না, যা দেশের আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং ডিএসইর সাধারণ শেয়ারহোল্ডার এবং শেয়ারবাজারের উন্নয়নের পরিপন্থী। আর ডিএসইর আর্টিকেলের পরিপন্থী কোন সংশোধনী গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ছাড়া বিএসইসিতে প্রস্তাবের আগে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে হবে, ডিএসইর সাধারণ সভায় বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটির পর্যবেক্ষণ ও প্রত্যাহার করা শর্তগুলো জানাতে হবে এবং সাধারণ সভায় গৃহীত প্রস্তাব, সংশোধিত চুক্তি ও অন্যান্য ডকুমেন্টস কমিশনে দাখিল করার শর্ত দেয়া হয়েছে। এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভায় চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে বেছে নেয়া হয়। আর ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে চীনের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদনের জন্য ডিএসইর সেক্রেটারি মোঃ আসাদুর রহমান বিএসইসিতে প্রস্তাব জমা দেয়। এর আলোকে একই দিনে ডিএসইর প্রস্তাব যাছাই-বাছাইয়ের জন্য বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদকে আহ্বায়ক ও নির্বাহী পরিচালক মোঃ মাহবুবুল আলমকে সদস্য সচিব করে ৪ সদস্যের কমিটি করে বিএসইসি। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন নির্বাহী পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান ও নির্বাহী পরিচালক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম। ডিএসইর প্রস্তাব যাছাই-বাছাইয়ে বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটি চীনা কনসোর্টিয়ামের কিছু শর্তের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ডিএসইকে লিখিতভাবে জানায় বিএসইসি। এরই আলোকে ডিএসই কর্তৃপক্ষ ৪ মার্চ ব্যাখ্যা দিয়েছে। তবে সেই ব্যাখ্যায় বিএসইসি সন্তুষ্ট হতে পারেনি। জানা গেছে, চীনের কনসোর্টিয়াম ডিএসইর প্রতিটি শেয়ারের দাম দিতে চেয়েছে ২২ টাকা। তবে শর্তানুযায়ী, ডিএসইর শেয়ারহোল্ডাররা এরই মধ্যে শেয়ার প্রতি ১ টাকা লভ্যাংশ নেয়ায়, সমপরিমাণ দর কমে এসেছে। এক্ষেত্রে ডিএসইর ১৮০ কোটি শেয়ারের ২৫ শতাংশ বা ৪৫ কোটি শেয়ার প্রতিটি ২১ টাকা দামে ৯৪৫ কোটি টাকায় কিনবে। পাশাপাশি ডিএসইর কারিগরি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ৩০০ কোটিরও বেশি টাকা (৩৭ মিলিয়ন ডলার) ব্যয় করবে। যাতে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হতে ১ হাজার ২৪৫ কোটিরও বেশি টাকা পাবে ডিএসই।
×