ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনাল খেলা আমাদের প্রাপ্য, অভিমত লিভারপুল কোচ জার্গেন ক্লপের

রেফারির প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তে হতাশ রোমা

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৪ মে ২০১৮

রেফারির প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তে হতাশ রোমা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রোমার হৃদয় ভেঙ্গে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের ফাইনালের টিকেট পেয়েছে লিভারপুল। বুধবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে জেতার পরও বিদায় নিতে হয়েছে ইতালির রাজধানীর ক্লাবটিকে। এ জন্য রোমা অবশ্য ভাগ্যকে দোষারোপ করার পাশাপাশি রেফারিং নিয়েও সমালোচনা করছে। এরপরও অবশ্য রোমার সমর্থকরা সান্ত¡না নিচ্ছে এই ভেবে যে, তাদের সাবেক খেলোয়াড় মোহাম্মদ সালাহ ফাইনালে খেলবেন। আর লিভারপুল কোচ জার্গেন ক্লপ বলেছেন, ভাগ্য সহায় থাকলেও ফাইনালে খেলার যোগ্য তার দল। তবে রেফারির ভুলের কারণেই নাকি রোমার প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরার যজ্ঞের ফাইনালে খেলা হচ্ছে না। দলটির কর্মকর্তারা অন্তত এমনই মনে করছেন। ম্যাচের ৪৯ মিনিটে এডিন জেকোকে ডি বক্সে ফেলে দেন লিভারপুল গোলরক্ষক লোরিস কারিয়ুস। যেটা পেনাল্টি তো হতোই সঙ্গে গোলরক্ষককেও হয়তো হলুদ কার্ড দেখতে হতো। কিন্তু লাইন্সম্যান ভুল অফসাইডের সিদ্ধান্ত দিলে বেঁচে যায় লিভারপুল। আর ৬৩ মিনিটে এল শারাউইয়ের গোলের দিকে যাওয়া শট হাত দিয়ে ফিরিয়ে দেন আলেক্সান্ডার-আরনল্ড। নিয়ম অনুয়ায়ী শুধু পেনাল্টিই নয়, লাল কার্ডও দেখতে হতো আরনল্ডকে। কিন্তু রেফারি ডামির স্কোমিনা দুটোই এড়িয়ে যান। স্বাগতিকদের মূল হতাশা ৬৩ মিনিটের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে। সেই সঙ্গে উয়েফার ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার না করাটাও তাদের আপত্তির কারণ। ভিডিও এ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারিং প্রযুক্তি এরই মাঝে ব্যবহার করা হচ্ছে ইতালিতে। রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে কোন সন্দেহ থাকলে ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারে সিরি’এ দলগুলো। কিন্তু এই ম্যাচে সেসব হয়নি। রোমা চেয়ারম্যান জেমস পালোট্টা তাই রেফারি নয়, খেপেছেন উয়েফার ওপর। তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ভিএআর দরকার, কারণ এমন ভুল হতে দেয়া যায় না। আপনারা সবাই চাইলে ভিডিওটা আবার দেখে নিতে পারেন। আমি জানি রেফারিং করা খুব কঠিন কিন্তু এটা খুবই লজ্জার যখন এভাবে আমাদের বিদায় নিতে হয়। এটা লাল কার্ড হওয়া উচিত ছিল, তাহলে ওরা ৬৩ মিনিটের পর থেকে ১০ জন নিয়ে খেলত। পালোট্টা বলেন, লিভারপুল অসাধারণ এক দল, তাদের অভিনন্দন। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এমন মুহূর্তগুলোয় ভিএআর না থাকাটা নির্মম রসিকতা। ফুটবল পরিচালক মঞ্চি প্রথম লেগেও লিভারপুলের পক্ষে রেফারিং হয়েছে এমন দাবি তুলেছেন। সে সঙ্গে পুরো আসরেই যে রেফারিংয়ে ভুল হচ্ছে সেটা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, প্রথম লেগেও আমরা একটা গোল খেয়েছি এটা অফসাইড ছিল (সাডিও মানের গোল)। এখানে দুটো পেনাল্টি আমাদের দেয়া হয়নি, আর মধ্যে একটি পরিষ্কার লাল কার্ড ছিল। সময় হয়েছে এ নিয়ে প্রতিবাদ করার। শুধু রোমা তো নয়, জুভেন্টাসকেও রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে এভাবে ভুগতে হয়েছে। রেফারির প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তে হতাশ রোমার মিডফিল্ডার আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি বলেন, আমরা যা দেখলাম তা খুবই অন্যায়। খুবই কষ্ট পেয়েছি। রেফারি বেশ কিছু ভুল করেছে। প্রথম ম্যাচে ভাল খেলিনি সে দায়টাও আছে। তবে আমরা মাথা উঁচু করেই বিদায় নিচ্ছি, আমরা শতভাগ দিয়েছি। আসলে আর্থিকভাবে কিংবা ইউরোপিয়ান ঐতিহ্য অনুয়ায়ীই মানুষ রিয়ালের বিপক্ষে রোমা নয় লিভারপুলকে চাইছিল। এমন মনে করেন ফ্লোরেঞ্জি। বলেন, লিভারপুল ফাইনালে উঠেছে। আমার মনে হয়, রোমা-রিয়াল মাদ্রিদ ফাইনালের হয়তো অতটা আবেদন থাকত না, আগ্রহ থাকত না। তবে আমি মনে করি না এটা আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। লিভারপুল কোচ জার্গেন ক্লপ বলেন, ফাইনাল আমাদের প্রাপ্য, এটা শতভাগ নিশ্চিত। আপনি ভাগ্য ছাড়া এগোতে পারবেন না। এই ম্যাচে আমাদের ভাগ্যের দরকার হয়ে পড়েছিল। রিয়াল মাদ্রিদেরও এটা দরকার হয়েছিল। ব্যাপারটা এমনই। ছেলেদের এটা প্রাপ্য ছিল। ওরা যে সাহসিকতা দেখিয়েছে এবং যে ফুটবল খেলেছে সেটা অনবদ্য।
×