ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শোবিজের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিকা পারভিন পপি। এক সময়ের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী মাঝখানে বড় পর্দায় অনুপস্থিত থাকলেও আবারও সিনেমায় তুমুল ব্যস্ত হয়েছেন। এবার অবশ্য নিজেকে তিনি উপস্থাপন করছেন সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে। বড় পর্দা কাঁপানো এই অভিনেত্রী তার সমসাময়িক নায়িকাদের

যৌথ প্রতারণা নয় : পপি

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ৩ মে ২০১৮

যৌথ প্রতারণা নয় : পপি

আনন্দকণ্ঠ : ‘পার্বতী’ চরিত্রটি প্রসঙ্গে- পপি : ‘শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের’ বিখ্যাত উপন্যাস দেবদাস। তার বিখ্যাত চরিত্র হচ্ছে ‘পার্বতী’। ‘পার্বতী’ আমার অনেক স্বপ্নের একটি চরিত্র। চলচ্চিত্রটির গল্প বলার ধরন আমার কাছে ভীষণ ভাল লেগেছে। ‘পার্বতী’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নিজেকে একটু বেশিই তৈরি করেছি। ফেরদৌসের সঙ্গে কয়েক বছর পর কাজ করছি। আশা করছি সবমিলিয়ে বেশ ভাল একটি ছবি হবে।’ আনন্দকণ্ঠ : দেবদাস উপন্যাসটি পড়া হয়েছিল কী? পপি : হ্যাঁ পড়া হয়েছে। আনন্দকণ্ঠ : ভারত উপমহাদেশে এ পর্যন্ত দেবদাস উপন্যাসটি বিভিন্ন ভাষায় চিত্রায়িত হয়েছে ২২ বার। বিভিন্ন ভাষাভাষীর ২২ জন অভিনেত্রী ‘পার্বতী’ চরিত্রটিতে অভিনয় করেছেন। আপনি তাদের কাউকে অনুসরণ করছেন কী? পপি : না! আমি উপন্যাস অনুসরণ করছি। কারণ বিখ্যাত নায়িকা সুচিত্রা সেন, কবরী ম্যাডাম তারা কাজ করেছেন তাদের অনুসরণ করার কিছু নেই। তাদের মতো করতেও পারব না হয়ত বা। কিন্তু শরৎচন্দ্র্র্র চট্টোপাধ্যায়ের যে গল্পটি নিয়ে ছবিটি হচ্ছে সেটি অনুসরণ করছি। এখানে কাউকে অনুসরণ করার কোন প্রকার সুযোগ নেই। কারণ ‘পার্বতী’ চরিত্রে ভিন্ন ভিন্ন ২২ জন অভিনেত্রী অভিনয় করলেও তারা প্রত্যেকেই হয়ে উঠেছেন উপন্যাসের ‘পার্বতী’। কিন্তু তাদের কারও সঙ্গে লেখকের দেখা হয়নি। আমি উপন্যাসের ‘পার্বতী’ হলেও আমার চরিত্রটির সঙ্গে লেখকের দেখা হচ্ছে। আমি তার সঙ্গে কথা বলতে পারছি। তার কাছ থেকে জেনে নিতে পারছি আমাকে কেন সৃষ্টি করা হয়েছে। ‘চরিত্রের সৃজনশীলতা যদিও একটি আপেক্ষিক বিষয় তবুও আমি নিজেকে এর মধ্যে অন্তর্লীন করার চেষ্টা করছি। তবে লেখকের সঙ্গে আমি কথা বলতে পারছি, এটাই আমার কাছে নতুন প্রাপ্তি।’ আনন্দকণ্ঠ : আসন্ন ঈদে ছোট পর্দায় দেখা যাবে? পপি : এখনও বলতে পারছি না। কেননা, এখনও অনেক সময় বাকি আছে। দেখা যাক কি হয়। স্ক্রিপ্ট অনেকেই দিয়ে রাখছে। দেখি কার স্ক্রিপ্ট ভাললাগে। গল্প ভাললাগলে কাজ করব। ব্যাটে বলে মিলে গেলেই আগামী ঈদে ছোট পর্দায় দেখা যেতে পারে। আনন্দকণ্ঠ : যৌথ প্রযোজনার ছবি সম্পর্কে মতামত কী? পপি : যৌথ প্রযোজনা ভাল জিনিস, কিন্তু যৌথ প্রতারণা নয়। যৌথ প্রযোজনার ক্ষেত্রে ৫০-৫০ সবকিছু হবে বাংলাদেশ ভারত মিলে। সেটি শিল্পী থেকে শুরু“করে প্রতিটি ক্ষেত্রে সমান হতে হবে নিয়মনীতি মেনে। এর নামেই যৌথ প্রযোজনা। আনন্দকণ্ঠ : হাতে কয়টি ছবি রয়েছে? পপি : ‘যুদ্ধশিশু’, ‘টার্ন’ ও ‘সাহসী যোদ্ধা’সহ ৭-৮টা ছবি রয়েছে। আনন্দকণ্ঠ : চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা কেমন মনে হচ্ছে? পপি : যে অবস্থান থাকা উচিত এবং যে অবস্থান আমরা আশা করি কিন্তু সেই অবস্থান নেই। আগে বছরে ১০০ থেকে ১৫০ ছবি নির্মাণ হতো। কিন্তু সেটা এখন শূন্যের কোটায় চলে এসেছে। আনন্দকণ্ঠ : এ থেকে উত্তরণের উপায়? পপি : এই সমস্যার প্রধানত কারণ হচ্ছে আমাদের সিনেমা হল নেই। সাড়া বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় ডিজিটাল সাউন্ট সিস্টেম দিয়ে সিনেমা হল করে দেয়া হয় তাহলে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন পরিবর্তন হয়ে যাবে। কারণ আপনি বিরিয়ানি রান্না করলেন সেটার পরিবেশন ভাল হলো না। আমার প্লেটে দিলেন না তাহলে ওই বিরিয়ানির ভেলু শূন্য। পরিবেশন প্রদর্শন গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান এবং প্রথম সমস্যা হচ্ছে আমাদের সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া। সবাই তা দেখে কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিজ নিয়ে কেউ চিন্তুা করে না। পরিবেশ পরিবর্তন হলে আমাদের দেশে আরও ভাল ভাল সিনেমা তৈরি হতো। এবং বিশ্বদরবার পর্যন্ত পৌঁছে যেত। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা আছে সে ক্ষেত্রে আরও কয়েক হাজার গুণ বাড়াতে হবে। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা লাগবে এবং সেটি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। আনন্দকণ্ঠ : এতদিনের ক্যারিয়ারে স্বপ্নের কোন চরিত্র রয়েছে, যে এখনও সেই চরিত্রে অভিনয় করতে পারেননি? পপি : স্বপ্নের চরিত্র এ রকম হাজারও রয়েছে। একজন শিল্পী যতই কাজ করুক না কেন তার কাজের ক্ষুধা কখনই কমে না। ভিন্ন গল্প, ভিন্ন চরিত্র পছন্দ করি। সে ক্ষেত্রে একটু ভিন্নতা খুঁজি। চ্যালেঞ্জিং চরিত্র খুঁজি, মাটি ও মানুষের কথা খুঁজি। সে ক্ষেত্রে ভিন্ন ধাঁচের গল্প হলে কাজ করতে আগ্রহী। নারী প্রধান চরিত্র অনেক আছে সেগুলোতে কাজ করতে চাই। উপন্যাসে অনেক বিখ্যাত চরিত্র আছে সেগুলো নিয়ে ছবি নির্মাণ করলে অনেক ভাল ছবি হবে তাতে কাজ করতে চাই। আনন্দকণ্ঠ : ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী? পপি : ভাল ভাল কিছু কাজ করে যেতে চাই। ভাল কিছু গল্পে নিজেকে ফুঁটিয়ে তুলতে চাই। দর্শকদের ভাল কিছু কাজ উপহার দিতে চাই। যেটা মৃত্যুর পরও মানুষ বলতে পারে পপি নামে একজন অভিনেত্রী ছিল। এটাই টার্গেট।
×