ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে পবিত্র শব-ই-বরাত পালিত

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৩ মে ২০১৮

ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে পবিত্র শব-ই-বরাত পালিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র সৌভাগ্যের রজনী শব-ই-বরাত পালিত হয়েছে। ধর্মগ্রাণ মুসলমানেরা মহান আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় নফল নামাজ, পবিত্র কোরান তিলাওয়াত, জিকির, ওয়াজ, মিলাদ মাহফিলসহ ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে রাতটি অতিবাহিত করেন। আরবি বর্ষ পঞ্জিকা অনুযায়ী মধ্য-শাবানে লাইলাতুল বরাত নামের এই পূণ্যময় রজনীটি পালিত হয়। এই রাতকে আরবিতে ‘লাইলাতুল বারাআত’ বলা হয়। আরবি ‘বারাআত’ শব্দটির অর্থ নিষ্কৃতি। মুসলমানদের বিশ্বাস মতে, এ রাতে বহুসংখ্যক বান্দা আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও আশীর্বাদ লাভ করে জাহন্নাম থেকে নিষ্কৃতি লাভ করেন। তাই, এ রজনীকে আরবিতে ‘লাইলাতুল বারাআত’ বা ‘নিষ্কৃতির রজনী’ বলা হয়। উপমহাদেশে বিশেষ করে বাংলাদেশে একটু বিস্তৃত আয়োজনে শব-ই-বরাত পালিত হয়। ইতিহাসবিদরা বলেন, উনিশ শতকে ঢাকার নবাবরা বড় আয়োজনে শব-ই-বরাত পালন শুরু করেন। তখন থেকে শব-ই-বরাতে মিষ্টি বিতরণ শুরু করা হয়। মিষ্টি ছিল প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) পছন্দের খাবার। কিন্তু ওই সময়ে মিষ্টির পর্যাপ্ত কারিগর না থাকায় হালুয়া রুটিও বিতরণ করা হতো। শব-ই-বরাতে প্রতিবেশীর সঙ্গে সৌহার্দ্য ভালবাসা ভাগাভাগি করে নিতে আজও এই প্রথা প্রচলিত রয়েছে। মঙ্গলবার মহিমান্বিত এ রজনীতে মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশ্বের মুসলমানরা বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া করেন। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মসজিদে সারা রাতই ইবাদত বন্দেগি করেছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দেন। কেন্দ্রীয় ভাবে ইসলামিক ফাইন্ডেশন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে রাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওয়াজ মাহফিল, কোরান তিলাওয়াত, মিলাদ, হামদ, নাত, নফল ও তাহাজ্জুতের নামাজ আদায় এবং আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে রাতটি পালন করে মুসলিমরা। নানা সামাজিক সংগঠন দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে স্থানীয়ভাবে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পবিত্র এই রজনীতে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের মুসলমানেরা কোরান তিলাওয়াত, নফল নামাজ ও বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মহান সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবে। এ উপলক্ষে ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষ নফল রোজাও পালন করেছেন। পবিত্র রাতে মুসলমানেরা মৃত মা-বাবা, আত্মীয়স্বজনসহ প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করছেন। তাই এ রাতে কবরস্থানগুলোতেও মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারী টিভি চ্যানেল ও রেডিও এ উপলক্ষে ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। পবিত্র শব-ই-বরাত সুষ্ঠুভাবে পালনের লক্ষ্যে ঢাকা নগরীতে আতশবাজি, পটকা ফাটানো এবং যেকোন ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য বহন নিষিদ্ধ করে ডিএমপি।
×