ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিডনিতে টার্নবুলের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ

ইরান চুক্তি কঠোর করতে চাই

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ৩ মে ২০১৮

ইরান চুক্তি কঠোর করতে চাই

ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বুধবার ইরানের সঙ্গে পাঁচ জাতির পারমাণবিক চুক্তির প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, কেউ ওই অঞ্চলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আর বাড়াতে চায় না বরং চুক্তির শর্তাবলী আরও কঠোর করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। গত সপ্তাহে ফরাসী প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। সে সময় তিনি ট্রাম্পকে চুক্তি থেকে সরে না যাওয়ার জন্য বোঝানোর চেষ্টা করেন। ম্যাক্রোঁ বলেন, তিনি জানেন না চুক্তির বিষয়ে ট্রাম্পের কি সিদ্ধান্ত রয়েছে। খবর এএফপির। দুদিনের অস্ট্রেলিয়া সফরকালে সিডনিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ১২ মে কি সিদ্ধান্ত জানাবেন তা আমি জানি না। আমি শুধু বলতে চাই যে, সিদ্ধান্ত যাই নেয়া হোক না কেন আমাদের বিশদ আলোচনার ও বৃহত্তর চুক্তির প্রস্তুতির ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। কেননা আমি মনে করি যে, কেউই ওই অঞ্চলে যুদ্ধ-উন্মাদনা চায় না এবং কেউই দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনাকর পরিস্থিতিও চায় না। ম্যাক্রোঁ বিদ্যমান চুক্তিটি যথেষ্ট নয় বলে মত দিলেও এটি বিশদ আলোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ দিয়ে চুক্তিটি করা হয়েছে বলে জানান। ইংরেজীতে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, চুক্তিটিতে তিনটি অতিরিক্ত স্তম্ভ থাকা প্রয়োজন। যার একটি হবে ২০২৫ সালের পর পারমাণবিক কর্মসূচী সম্পর্কে নির্দিষ্ট সীমা, দ্বিতীয়টি হচ্ছে ইরানের কার্যকলাপের ওপর নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ, তৃতীয় হল ওই অঞ্চলে ইরানের কার্যকলাপ সংযত রাখা, বিশেষত ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেনের ওপর ইরানের প্রভাব রয়েছে। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার দাবি করেছেন, তার কাছে নতুন প্রমাণ আছে যাতে দেখা গেছে, ইরান তার পারমানবিক কর্মসূচী যে কোন সময় কার্যকর করার পরিকল্পনা করছে। ইরান সবসময় পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কথা অস্বীকার করে আসছে। তারা দাবি করছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচী বেসরকারী খাতে বিদ্যুত ও জ্বালানি সঙ্কট মোকাবেলায় হাতে নেয়া হয়েছে। যদিও ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রীর দাবি সম্পর্কে ম্যাক্রোঁ কোন মন্তব্য করেনি। তারপরও তিনি জানিয়েছেন, ফ্রান্স ওই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষার চেষ্টায় জড়িত। সে কারণে আমরা জার্মানি ও ব্রিটেনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় যুক্ত হয়ে কাজ করতে চাই। আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করব যাতে প্রত্যেকেই আগামী দিনে, সপ্তাহে ও মাসগুলোতে এই ধরনের আলোচনার জন্য সবাইকে বোঝানো সম্ভব হয়। যা ওই অঞ্চলের অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার জন্য একমাত্র উপায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে সরে আসার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ১২ মে তার সিদ্ধান্ত জানানোর সময় সীমা বেঁধে দিয়েছেন। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির এই চুক্তিটি হয়েছিল। চুক্তিটিতে ইরানের পারমানবিক কর্মসূচী প্রত্যাহারের বিনিময়ে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচীকে সীমিত করা নিয়ে চুক্তিকে ট্রাম্প পাগলামি ও হাস্যকর বলে অভিহিত করেছেন। তিনি একে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীর সম্পূর্ণ বিরোধী এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে এর সহায়তায় জঙ্গী তৎপরতার সমর্থনে কাজ করছে বলে মত দেন। ইরানের সঙ্গে করা বর্তমান চুক্তির মাধ্যমে দেশটির ওপর থেকে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে এবং পাশাপাশি ইরানও নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচী শুধু বেসামরিক খাতে ব্যবহার করে জ্বালানি সঙ্কট দূর করা হবে। কোন রকম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজে ব্যবহৃত হবে না।
×