ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শতভাগ মেধার ভিত্তিতে ভর্তি

কোটা ব্যবস্থার সংস্কার এনে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১ মে ২০১৮

কোটা ব্যবস্থার সংস্কার এনে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোটা ব্যবস্থায় সংস্কার এনে নতুন শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণীর ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালা অনুযায়ী, এবার কলেজে শতভাগ আসনে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। তবে মেধার ভিত্তিতে ভর্তির পর যদি কোন বিশেষ অগ্রাধিকার কোটার আবেদনকারী থাকে, তাহলে মোট আসনের অতিরিক্ত হিসাবে নির্ধারিত কোটায় ভর্তি করা যাবে। সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি নিয়ে আয়োজিত এক বৈঠকে নতুন নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে বৈঠকে এ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, রাজধানীর সরকারী-বেসরকরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে জানানো হয়, আগামী ৬ মে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর একাদশে ভর্তি আবেদন কার্যক্রম শুরু হবে ১৩ মে থেকে। গত বছর ৮৯ ভাগ মেধার ভিত্তিতে এবং বাকি ১১ ভাগ কোটায় ভর্তি করা হয়। এবার শতভাগ মেধার ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। তবে তার পরে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অগ্রাধিকার কোটার আবেদনকারী অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে। নির্ধারিত কোটা অনুযায়ী ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা তাঁদের সন্তানদের জন্য, ৩ শতাংশ বিভাগীয় ও জেলা সদরের বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য, ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধস্তন দফতরগুলো ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারী এবং নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সন্তানদের জন্য শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বিকেএসপির জন্য এবং শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। অর্থাৎ এবার মোট ১১ শতাংশ নির্ধারিত কোটা রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোটায় যদি প্রার্থী না পাওয়া যায়, তবে এ আসনগুলোর কার্যকারিতা থাকবে না। অর্থাৎ এসব কোটায় উপযুক্ত শিক্ষার্থী না পাওয়া গেলে অন্য কাউকে ভর্তি করা যাবে না। নীতিমালা অনুযায়ী, এবারও একজন শিক্ষার্থী কমপক্ষে ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। অনলাইন এবং এসএমএস উভয় পদ্ধতিতেই আবেদন করা যাবে। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে, তার মধ্য থেকে গেল বছরের মতো শিক্ষার্থীর মেধা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজ নির্ধারণ করে দেয়া হবে। তবে ভর্তিতে আগের মতো এবারও স্কুল, কলেজ ও সমমানের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভর্তিতে অগ্রাধিকার পাবে। ভর্তির জন্য অনলাইন ও এসএমএসে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে আগামী ১৩ মে থেকে। আবেদনের শেষ সময় ২৪ মে। তবে পুনঃনিরীক্ষণে যাদের ফল পরিবর্তন হবে, তাদের আবেদন আগামী ৫ ও ৬ জুন গ্রহণ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে ১০ জুন। এরপর আরও একাধিক ধাপে ফল প্রকাশ ও মাইগ্রেশনসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে ২৭ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রম চলবে। ১ জুলাই থেকে ক্লাস শুরু হবে। এবার আগের মতোই ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকার মধ্যে আংশিক এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য ৯ হাজার টাকা (বাংলা মাধ্যম) ও ১০ হাজার টাকা (ইংরেজী মাধ্যম) ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হবে। সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য উন্নয়ন ফি ৩ হাজার টাকার বেশি আবেদন করা যাবে না। প্রতিটি খাতে অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে রশিদ প্রদান করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও মফস্বল ও পৌর এলাকার জন্য ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার টাকা, পৌর জেলা সদরে ২ হাজার টাকা, ঢাকা ব্যতীত অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি নেয়া যাবে না। ভর্তি নীতিমালা লঙ্ঘন করা হলে বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পাঠদান অনুমতি বা এমপিওভুক্তি বাতিল করা হবে এবং সরকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×