ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আইনী লড়াই ছাড়া খালেদাকে মুক্ত করার কোন পথ নেই ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১ মে ২০১৮

আইনী লড়াই  ছাড়া খালেদাকে  মুক্ত করার  কোন পথ  নেই ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনী লড়াই ছাড়া বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার দ্বিতীয় কোনও পথ খোলা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সোমবার রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসনে মেট্রোরেল প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। ‘নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দেয়ার কৌশল নিয়েছে আওয়ামী লীগ, বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে কাদের বলেন, ‘সরকার খালেদা জিয়াকে তো জেলে রাখছে না। রাখছেন আদালত। আদালতে তারা ফাইট করুক।’ তিনি বলেন, তারা এখন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছে। এ আন্দোলন আদালতের বিরুদ্ধে। কারণ দুর্নীতি মামলায় খালেদার বিরুদ্ধে দায় দিয়েছেন আদালত। সরকার তো কোন রায় দেয়নি। তাই ব্যস্ত কারণেই আন্দোলনে কেউ সাড়া দেবে না। আন্দোলনে সাড়া দেয়ার সময়ও নেই। সময় অনেক পেরিয়ে গেছে। জনগণ এখন নির্বাচনের মুডে আছে, আর তারা ডাক দিচ্ছে আন্দোলনের। খালেদা জিয়ার বিষয়টায় তারা আইনীভাবে গেলে ভাল করবে। আইনী লড়াই ছাড়া খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার দ্বিতীয় কোনও পথ নেই।’ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করছে দাবি করে কাদের বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা বেগম জিয়াকে দেখেছেন। বিএনপি নেতারা যেভাবে কথা বলছেন ও চিৎকার করছেন, আমার কাছে মনে হচ্ছে তারা বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়েও রাজনীতি করছে। এখানে চিকিৎসাটা দরকার, সে বিষয়ে সরকারের কোনও গাফিলতি হবে না। তবে তারা মনে হয় রাজনীতি শুরু করছে। উল্লেখ্য বিএনপি দলীয় চিকিৎসকদের দিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেই সঙ্গে বিএনপিপন্থি’ ডাক্তারদের পক্ষ থেকে খালেদার চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে কাদের বলেন, জাতীয়তাবাদী চিকিৎসক দল থেকে যদি সার্টিফাই করা হয়, তাহলে তো হবে না। এখানে চিকিৎসক যারা আছেন, তাদের কোনও দলীয় পরিচয় নেই। তাদের যে দু’জন বারবার সার্টিফাই করছেন, দু’জনই কিন্তু তাদের দলীয় চিকিৎসক। রাজনীতির টোন এ্যান্ড টেননের সুরে তাদের কথাবার্তা আমরা বুঝতে পারছি।’ চিকিৎসার বিষয় বিএনপি বা আওয়ামী লীগের নয় জানিয়ে কাদের বলেন, ‘আমি এটুকু বলতে পারি, এ বিষয়টিকে এভাবে-সেভাবে অর্থাৎ উদাসীনভাবে দেখানোর সুযোগ নেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একজন কারাবন্দীর চিকিৎসা কোথায় হবে, এটা বিএনপি ঠিক করে দেবে? আমাদের নেত্রী যখন কারাগারে ছিলেন, তখন আমরা কিন্তু বলিনি এই হাসপাতালে নিয়ে আসুন, ওই হাসপাতালে নিয়ে আসুন। এটা চিকিৎসকরাই ঠিক করবেন। দরকার হলে মেডিক্যাল বোর্ড ঠিক করবে।’ তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন। সেখানে জেল কোড অনুযায়ী সব ব্যবস্থাই নেয়া হবে। চিকিৎসায় যেখানে যেটা প্রয়োজন, সেখানে সেটাই জেল কোড অনুযায়ী করা হচ্ছে। খালেদা জিয়াকে দু-একদিনের মধ্য বেসরকারী হাসপাতালে নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ‘যা-ই হবে, সংশিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা ও চিকিৎসকরা ঠিক করবেন। এখানে বিএনপির কথা আর আওয়ামী লীগের কথায় বেগম জিয়ার চিকিৎসা হবে না। চিকিৎসার বিষয়টা ভিন্ন। এখানে কারাগারের নিয়ম আছে। চিকিৎসক আছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অনুষ্ঠানে ২০২০ সালের মধ্য মেট্রোরেলের কাজ শেষ হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মেট্রোরেল এমআরটি লাইন ৬-এর কাজ পুরোদমে চলছে। হলি আর্টিজান ট্রাজেডির জন্য আমরা ছয় মাস পিছিয়ে ছিলাম। তবে জাপানিজ কোম্পানি ও জাইকার স্পিড কিন্তু কমেনি, এটা খুশির খবর। ছয় মাসে আমরা সেটা কাভার করে ফেলেছি। ২০১৯ সালে আগারগাঁও পর্যন্ত এবং ২০২০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত পুরো মেট্রোরেলের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হবে। প্রজেক্ট কিন্তু শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালে। জাপান আমাদের কোয়ালিটি কাজ দিচ্ছে। চমৎকার একটা পার্টনারশিপ এখানে কাজ করছে। এর আগে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভায়াডাক্ট স্টেশন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দুটি চুক্তি সই করা হয়। বিএনপি নির্বাচনের আগেই হেরে যায় ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনের আগেই হেরে যায়। বিএনপি কি জনমত দেখে আঁচ করতে পারছে যে গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি অনিবার্য? এ কারণে আগেভাগে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনার ক্ষেত্র তৈরি করছে। সোমবার বিকেলে ঢাকার খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কৃষক লীগের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর কৃষক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, এই দলকে (বিএনপি) মানুষ কেন ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে? এরা ক্ষমতায় এলে আবার দুর্নীতি করবে। হাওয়া ভবন খুলবে। সারাদেশে সন্ত্রাস-লুটপাটের রাজত্ব তৈরি করবে। সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীরা বড় ধরনের নাশকতা চালাতে পারে বলেই পুলিশ গোপন বৈঠককারীদের গ্রেফতার করেছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, এটি কী ভীতি প্রদর্শনের মধ্যে পড়ে? বিএনপি যদি নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোন প্রমাণ দেখাতে পারে, সেটি দেখাক। বিএনপি আচরণবিধি লঙ্ঘনের সেই প্রমাণ অভিযোগ আকারে নির্বাচন কমিশনের কাছে দিতে পারে। কিন্তু মিথ্যা অভিযোগ করার কারণ কী ? বিএনপি অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, গাজীপুর ও খুলনার কোথাও আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়নি। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাইরে আওয়ামী লীগ নেতারা যদি বৈঠক করেন, তাতে অন্যায় কী? এটা সিটি কর্পোরেশন এলাকা নয়। অথচ বিএনপি আচরণবিধি লঙ্ঘনের ভুয়া অভিযোগ করছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, তারেক রহমানের পাসপোর্ট, নাগরিকত্ব থাকল কিনা-তা নিয়ে দেশের জনগণের মাথাব্যথা নেই। ঢাকা মহানগর উত্তর কৃষক লীগের সভাপতি মাকসুদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী এ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট খোন্দকার শামসুল হক, মহানগর উত্তর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিম খান প্রমুখ। বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে- ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে মিথ্যাচার চালানোর ক্ষেত্রে এখন রুহুল কবির রিজভী ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার গ্লোবাল উইমেন্স লিডারশিপ এ্যাওয়ার্ড লাভ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি জিন্নাত আলী জিন্নাহ’র আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
×