কাবুলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে দুটি ভয়াবহ বিস্ফোরণে সাত সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন নিহত এবং ৪৯ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। সোমবার সকালের ব্যস্ত সময়ে বিস্ফোরণ দুটি ঘটে। জঙ্গী গোষ্ঠী আইএস এর দায় স্বীকার করেছে। সাংবাদিকরা প্রথম বিস্ফোরণটির সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। এতে এএফপির ফটোসাংবাদিক শাহ মারাইসহ সাত সাংবাদিক নিহত হন বলে জানিয়েছে আফগানিস্তান জার্নালিস্ট সেইফটি কমিটি। খবর এএফপি ও বিবিসির। কাবুলের একটি ভোটার নিবন্ধন কেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৬০ জন নিহত হওয়ার ঠিক এক সপ্তাহ পর জোড়া এ হামলাটি চালানো হলো। অক্টোবরে পরিকল্পিত পার্লামেন্টে নির্বাচনের আগে এ ধরনের হামলার ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে সতর্ক করেছিলেন। সোমবারের প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে নগরীর শাশদারাক এলাকায়। এখানে ন্যাশনাল ডিফেন্স সার্ভিসের (এনডিএস) গোয়েন্দা দফতর ভবনের কাছে নগর উন্নয়ন ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের সদরদফতরের বাইরে প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। লোকজন যখন সরকারী ওই দফতরটিতে প্রবেশ করছিল তখনই বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রথম বিস্ফোরণের সংবাদ সংগ্রহের জন্য জড়ো হওয়া সাংবাদিকদের পাশে আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে বহু ফটোগ্রাফার ও ক্যামেরাম্যান হতাহত হন বলে জানিয়েছেন রয়টার্সের প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক। আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাজিব দানেশ জানিয়েছেন, আত্মঘাতী হামলাকারী সাংবাদিকের ছদ্মবেশ ধরে সাংবাদিক ও জরুরী বিভাগের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখানে এসে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিবিসি জানিয়েছে, মোটরসাইকেলে করে আসা এক হামলাকারী প্রথম হামলাটি চালিয়েছে। এর ১৫ মিনিট পর দ্বিতীয় হামলাটি চালানো হয়। দ্বিতীয় বিস্ফোরণে কাবুলে এএফপির প্রধান ফটো সাংবাদিক শাহ মারাই নিহত হয়েছেন বলে নিজেদের টুইটার এ্যাকাউন্টে জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি। বিস্ফোরণের পর ছুটন্ত শার্পনেলের আঘাতে রয়টার্সের এক ফটো সাংবাদিকও সামান্য আঘাত পেয়েছেন। কাবুল পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হাশমত স্টানকজাই ২৫ জন নিহত ও ৪৯ জন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। আফগানিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াহিদুল্লাহ মাজরোহ জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে অন্তত ছয় সাংবাদিক রয়েছেন। শাশদারাক এলাকায় আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, গোয়েন্দা সংস্থা ও ন্যাটোর দফতর আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। প্রথম বিস্ফোরণটিও একটি আত্মঘাতী হামলা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন কাবুল পুলিশের মুখপাত্র। গত সপ্তাহে তালেবান জঙ্গীরা তাদের বসন্তকালীন অভিযান শুরু করার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি এলাকায় সরকারী বাহিনীর সঙ্গে গোষ্ঠীটির তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।