ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে শিশু তামিম হত্যার রহস্য উন্মোচন

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ১ মে ২০১৮

রাজশাহীতে শিশু তামিম হত্যার রহস্য  উন্মোচন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ গোদাগাড়ীতে শিশু তামিম হোসেন খুনের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। ফুফুর হাতেই ‘অনিচ্ছাকৃতভাবে’ তিন বছরের এই শিশু খুন হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ শহীদুল্লাহ তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। নিহত তামিম উপজেলার মাটিকাটা বাইপাস-উজানপাড়া গ্রামের রাসেলের ছেলে। গত শুক্রবার সকালে বাড়ির সামনের একটি মাচার নিচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। পেটের সঙ্গে পা বাঁধা এবং পলিথিন, জাল ও ওড়না দিয়ে জড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায় লাশ। নিহত তামিমের বাবা পেশায় একজন নির্মাণশ্রমিক। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল তার ছেলে। এরপর বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে তামিমের লাশ পাওয়া যায়। রাসেলের ছোট বোন সোনিয়া খাতুন (১৪) প্রথমে তামিমের লাশ দেখতে পায়। পুলিশ বলছে, এই সোনিয়ার হাতেই ‘অনিচ্ছাকৃতভাবে’ খুন হয়েছে শিশু তামিম। সংবাদ সম্মেলনে এসপি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে হাঁসুয়ায় সবজি কাটছিল সোনিয়া। এ সময় হাঁসুয়ার নিচের অংশ থেকে কাঠের বাঁট খসে পড়ে। এতে হাঁসুয়ার বাঁট লাগানোর সরু লোহার অংশটি বেরিয়ে যায়। মাটিতে বাড়ি দিয়ে সোনিয়া সেই বাঁট লাগানোর চেষ্টা করছিল। এ সময় তামিম সেখানে ঢুকে পড়লে তার মাথায় হাঁসুয়ার সরু লোহার অংশ ঢুকে যায়। এতে তার মাথায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। সঙ্গে সঙ্গে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশু তামিম। ওই সময় তামিমের মা ঘুমাচ্ছিলেন। সোনিয়া বিষয়টি প্রথমে তার বড় বোন রাবেয়া খাতুন (২২) ও পরে মা নার্গিস বেগমকে (৪৭) জানায়। এভাবে শিশুটির মৃত্যু হওয়ায় তারা ভয় পেয়ে যান। এরপর তারা সবাই মিলে লাশটি মাচার নিচে নিয়ে গিয়ে রেখে দেন এবং ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন। এসপি জানান, ঘটনার পর পরিবারের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু কারও সঙ্গে কারও কথার মিল পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই রবিবার সোনিয়া, রাবেয়া ও তাদের মা নার্গিসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হলে রাতে তারা তামিমের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা পুলিশের কাছে বর্ণনা করেন। এ ঘটনার জন্য তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে তোলা হয়। সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন।
×