ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জবির চাকরিচ্যুত শিক্ষককে পুনর্বহাল দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ৩০ এপ্রিল ২০১৮

জবির চাকরিচ্যুত শিক্ষককে পুনর্বহাল দাবিতে মানববন্ধন

জবি সংবাদদাতা ॥ সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইংরেজী বিভাগের এক শিক্ষককে অন্যের লেখা নিজের নামে প্রকাশের অভিযোগে চাকরিচ্যুত করার ঘটনায় সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা ওই শিক্ষককে স্বপদে পুনর্বহালের দাবিতে রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে। মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে শাস্তি প্রত্যাহার না করলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করার পাশাপাশি আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দেয় তারা। উল্লেখ্য, জবি ইংরেজী বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের একাংশের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমদকে প্রকাশনা জালিয়াতির অভিযোগে এনে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৭তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে চাকরিচ্যুত করা হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রকাশনা জালিয়াতির একই অভিযোগে বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা হোসনে আরা জলিকে শাস্তি হিসেবে পদোন্নতি আটকে দেয়া হয়েছিল। বরং ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আরও গুরুতর ছিল। এছাড়া বক্তারা আরও বলেন, ঢাবি শিক্ষক সামিয়া রহমানের জালিয়াতির বিষয়টা দেশে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। এখন পর্যন্ত তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি। অথচ ছাত্রবান্ধব শামছুজ্জোহা নামে খ্যাত নাসির স্যারকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্র। তাই চাকরিচ্যুত ওই শিক্ষককে স্বপদে ফেরানোর জোরালো দাবি জানান তারা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তিনি চীন থেকে প্রকাশিত একটি লেখা হুবহু কপি করেছেন এবং যা ভিক্টোরিয়া ইউনির্ভাসিটিতে প্রকাশের জন্য গৃহীত হয়। তবে ওই শিক্ষক দাবি করেন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। কেননা ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্র্র্সিটি থেকে তার কোন লেখাই প্রকাশিত হয়নি। বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সমর্থনে অবস্থান নেয়ায় ভিসির রোষানলে পড়েন তিনি। এসব কারণেই মিথ্যা অভিযোগ এনে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে দাবি ওই শিক্ষকের। এর চেয়েও গুরুতর অভিযোগ প্রকাশ পাওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বেশ কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের জন্য ঠুনকো শাস্তির জ্বলন্ত উদাহরণ রয়েছে অনেক। অনুসন্ধানে জানা যায়, নাসির উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে যে প্রকাশনা জালিয়াতির অভিযোগে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে সে লেখাটি তার নামে এখন পর্যন্ত কোথাও প্রকাশিত হয়নি। ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটিতে যৌথভাবে একজন ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আকরামুজ্জামানের সঙ্গে জমা দেয়া হয়েছিল। সেটা অবশ্য নাসির উদ্দিন আহমদের একক নামে জমা দেন সহকারী অধ্যাপক আকরামুজ্জামান। যা ভুল করে জামা দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন আকরামুজ্জামান। আকরামুজ্জামান এবং নাসির উদ্দিন আহমদের যৌথ ওই লেখা নিয়ে অভিযোগ উঠায় যাচাই বাছাইয়ের আগেই নাসির উদ্দিন আহমেদ লেখাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে প্রকাশনা জালিয়াতির অভিযোগের কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়। ২ অক্টোবর তিনি নোটিসের জবাব দেন তিনি। এর আগেই তিনি ভিক্টোরিয়া কর্তৃপক্ষকে তার লেখা প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৩ জুলাই ২০১৭ ভিক্টোরিয়া কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাহারও করে। অর্থাৎ যে লেখাটি নিয়ে নাসির উদ্দিন আহমদকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এমন লেখার কোন অস্তিত্ব নেই। এরপরও তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
×