ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজই শুরু হয়নি

টেলিটক জুনেও ফোরজি সেবা চালু করতে পারবে না

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ৩০ এপ্রিল ২০১৮

 টেলিটক জুনেও ফোরজি সেবা চালু করতে পারবে না

ফিরোজ মান্না ॥ রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন মোবাইল অপারেটর টেলিটক আগামী জুনেও ফোর জি (চতুর্থ প্রজম্মের) সেবা চালু করতে পারবে না। তাদের এখনও পর্যন্ত ফোর জি যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ শুরুই হয়নি। অথচ টেলিটক দেশে সব অপারেটরের আগে থ্রী জি (তৃতীয় প্রজম্মের) নেটওয়ার্ক চালু করেছিল। টেলিটকের এক বছর পরে অন্য অপারেটরগুলো থ্রিজি সেবা চালু করে। এবার টেলিটকের আগে বেসরকারী অপারেটররা ফোরজি (চতুর্থ প্রজম্মের) নেটওয়ার্ক চালু করেছে। যত সময় যাবে টেলিটক বেসরকারী অপারেটর থেকে ফোরজি সেবা দিতে পিছিয়ে পড়বে। বলা হয়েছিল মার্চের মধ্যে টেলিটক ফোরজি সেবায় যাবে। এখন তারা ঠিক কবে নাগাদ এই সেবায় যেতে পারবে-তার কোন নিশ্চয়তা নেই। সূত্র জানিয়েছে, এ বছরের শুরুতে লাইসেন্স পেয়ে গ্রামীণফোন, রবি, এয়ারটেল ও বাংলালিংক ফোরজি চালু করেছে। থ্রিজি লাইসেন্স দেয়ার সময় সব অপারেটরকে এক দিনে লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল। কিন্তু টেলিটক বাদে অন্য অপারেটরগুলো এক বছর পরে থ্রিজি সেবা চালু করার অনুমতি পায়। থ্রিজি সেবায় টেলিটক এগিয়ে থাকলেও তারা এবার আধুনিক প্রযুক্তি সেবা ফোরজি থেকে কেন পিছিয়ে পড়লো তা প্রতিষ্ঠানটির এমডি বলতে পারেননি। তবে টেলিটকের এমডি বলেছেন, তারা শীঘ্রই দেশব্যাপী একযোগে ফোরজি সেবা চালু করবেন। এজন্য কিছুটা সময় লাগবে। কারণ ফোরজি সেবার যন্ত্রপাতি বসানোর কাজ এখনও শেষ হয়নি। জানা গেছে. ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর টেলিটক থ্রিজি সেবা চালু করে। অন্য অপারেটরগুলো ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে থ্রিজি সেবায় আসে। টেলিটকের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা ফোরজি সেবা চালু করার জন্য কাজ করছি। শীঘ্রই ফোরজি নিয়ে চলে আসব। তবে কবে এ সেবা চালু হবে তা বলা কঠিন। কারণ এখনও ফোরজি যন্ত্রপাতি স্থাপন কাজ শেষ হয়নি। আগে ঢাকার পাশাপাশি বিভাগীয় শহরগুলোতে চালুর মাধ্যমে ফোরজি যুগে প্রবেশ করা সম্ভব হবে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ক্লাবে ফোরজির লাইসেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে টেলিটকের এমডি গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা শীঘ্রই মার্কেটে চলে আসব। অন্য অপারেটরগুলোর সঙ্গে ফোরজি চালু করা সম্ভব হয়নি তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারী প্রতিষ্ঠান তো, অনেক ধরনের নিয়ম-কানুনের মধ্য দিয়ে চলতে হয়। এ কারণে সময় লাগছে। তবে বেশি দিন লাগবে না। ফোরজি চালুর জন্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ এখনও শেষ করা সম্ভব হয়নি। এ খাতে আর্থিক বিষয়টি জড়িত রয়েছে। এখানে অর্থই বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। সূত্র জানিয়েছে, ফোরজি চালুর জন্য নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য দুটি প্রকল্প একনেকে দুবার অনুমোদন করা হয়। অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় ৬৭৫ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় দীর্ঘদিন ধরে অর্থ ছাড় না করায় টেলিটকের নেটওয়ার্ক উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে কিছু পরিমাণ অর্থ টেলিটকের অনুকূলে ছাড় করা হয়েছে। মূলত অর্থ প্রাপ্তির পর থেকেই টেলিটকের কাজে গতি এসেছে। ফোরজির প্রকল্পটি কোথায় কোথায় সেবা দেবে এ বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে এখনও অনুমোদন দেয়নি কোথায় কোথায় টেলিটক ফোরজি সেবা চালু করবে। মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘসূত্রতার কারণে অপারেটরটি দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। এমনিতে অপারেটরটি অন্য যে কোন অপারেটরের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষুদ্র। অনুমোদন পেলে দ্রুতই তারা ফোরজি সেবা গ্রাহকদের দিতে পারবেন। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশন (বিটিআরসি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারির ৩১ তারিখ পর্যন্ত টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা মাত্র ৪৫ লাখ ৫৩ হাজার। কিছুদিন আগে টেলিটক শুধু নারীদের জন্য অপরাজিতা নামে ২০ লাখ সিম বাজারে ছেড়েছিল। সেই সিমের ৮০ শতাংশ বিক্রি শেষ হওয়ার আগেই প্যাকেজটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ওই সময় অপরাজিতা সিমের ৬০ শতাংশ এখন চালু রয়েছে। অপরাজিতা সিমের চালু থাকার কারণে অপারেটরটি নেটওয়ার্কের দিক থেকে চরম দুর্বল হয়ে পড়ে।
×