ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সেমিনারে বক্তাদের অভিমত

পর্যাপ্ত সুবিধা ও নিরাপত্তা নেই বাংলাদেশ-ভারত স্থলবন্দরে

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ৩০ এপ্রিল ২০১৮

পর্যাপ্ত সুবিধা ও নিরাপত্তা নেই বাংলাদেশ-ভারত স্থলবন্দরে

স্টাফ রিপোার্টার ॥ রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেলেও পণ্য আমদানি রফতানিতে পর্যাপ্ত সুবিধা এবং নিরাপত্তার অভাব রয়েছে স্থল বন্দরে। রবিবার ঢাকায় একটি পাঁচতারকা হোটেলে এড্রেসিং ল্যান্ড পোর্ট ইস্যুজ ফর বেটার ইন্দো-বাংলা ট্রেড শীর্ষক এক সেমিনারে এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন বক্তারা। আমদানি-রফতানি সহজিকরণে এখনও অনেক বিষয়ে কাজ করার সুযোগ থাকলেও তা হয়নি বলে তারা অভিযোগ করেন। এজন্য দুই দেশের সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যৌথভাবে বাংলাদেশ-ভারতের কাজ করা উচিত বলে মনে করেন বক্তারা। ভারতীয় হাইকমিশন এবং ভারত- বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি দিনব্যাপী এ সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে বলা হয়, আমেরিকা এবং পাশর্বর্তী কানাডার বাণিজ্যের ৭০ ভাগই হয়ে থাকে স্থল বন্দরের মাধ্যমে। সেখানে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বাণিজ্যের ৫০ ভাগ বা অর্ধেক হয়ে থাকে স্থল বন্দরের মাধ্যমে। বাংলাদেশের সমীন্তের ৯৫ ভাগ এলাকায় ভারতের সীমান্ত রয়েছে। অন্যদিকে দেশের মোট বাণিজ্যের ১০ ভাগ স্থলবন্দরের মাধ্যমে হয়ে থাকে। বলা হচ্ছে ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে স্থল বন্দরে মোট আয়ের পরিমাণ ছিল ২৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা সেখানে ২০১৬-১৭ তে যা বেড়ে ১১১ কোটি ৪৭ লাখে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ের মধ্যে চার গুণের বেশি আয় বৃদ্ধির বিপরীতে সেবা বা নিরাপত্তা বৃদ্ধির পরিমাণ হতাশাজনক। সেমিনারে যোগ দেয়া ভারত-বাংলাদেশ চেম্বারের (আইবিসিসিআই) আমদানি রফতানি বিষয়ক সাব-কমিটির সদস্য মতিয়ার রহমান বলছেন, বেনাপল বন্দরে কোন সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। নেই কোন বিশেষায়িত নিরাপত্তা বাহিনীও। মাত্র ১০০ জন আনসার এবং ২০ জন আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান (এপিবিএন) সদস্য দিয়েই বন্দরের নিরাপত্তা বিধান করা হচ্ছে। ইক্লিয়ারেন্স এর কোন সুবিধা এত দিনেও সৃষ্টি সম্ভব হয়নি। বন্দরের সবকাজই চলে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। যাতে পণ্যের আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে টেবিলে টেবিলে ঘুরতে হয়। সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের কথায়ও নিরাপত্তা ঘাটতির বিষয়টি উঠে আসে। তিনি জানান, বিশ^ব্যাংকের অর্থায়নে শেওলা, রামগড়, ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল বন্দরের সিসিটিভি সংস্থাপন করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প কেবলমাত্র অনুমোদন করা হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যের সিংহভাগ বেনাপল বন্দরের মধ্যেমে হলেও এই বন্দরে কেন সিসিটিভি ক্যামেরা নেই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেমিনারেই বক্তারা অভিযোগ করেন, বিশেষ পক্ষ এতে সুবিধা পেয়ে থাকেন। সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলে যা সম্ভব হতো না। মন্ত্রী বলেন, সরকার ২০০১ সালে ১২টি স্থল বন্দরের গেজেট করে। এর মধ্যে দুটি সচল ছিল। ২০০৯ সালে সরকার আবার দায়িত্ব নেয়ার পর ১২টি থেকে ২৩টি স্থল বন্দর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯টি চালু করা হয়েছে। স্থল, নৌ ও সমুদ্র বন্দরগুলোর উন্নয়ন এবং গতিশীল করার মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। সেমিনারের মূল প্রবন্ধ বিপুল চ্যাটার্জি বলেন, স্থল বন্দরের উন্নয়নে ভারত এবং বাংলাদেশ দুই দেশের এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। কোন একপক্ষ পরিস্থিতির উন্নয়ন করল অন্যপক্ষ তা থেকে বিরত থাকলে সত্যিকার অর্থে সুফল মিলবে না।
×