ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সেবা পাওয়া যাবে উৎক্ষেপণের ৩ সপ্তাহ পর থেকে

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৩০ এপ্রিল ২০১৮

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সেবা পাওয়া যাবে উৎক্ষেপণের  ৩ সপ্তাহ পর থেকে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দুই দফা পিছিয়ে সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ মে। আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক অবস্থা অনুকূলে থাকলে এদিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে মহাশূন্যে উৎক্ষেপণ করা হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে মহাশূন্যে অবস্থান করবে বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে এই প্রকল্প অনেক বেশি ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশের নিজস্ব মালিকানাধীন স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ ছিল নিছক স্বপ্ন। তবে সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবের পথে। আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক কারণে কয়েক দফা পিছিয়ে বাংলাদেশের নিজস্ব মালিকানাধীন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ মে। উৎক্ষেপণের পরে মহাশূন্যে স্যাটেলাইটটির নিজস্ব অরবিট অর্থাৎ কক্ষপথে পৌঁছাতে সময় লাগবে ৩ সপ্তাহ। মূলত উৎক্ষেপণের পর ইন অরবিট টেস্ট বা আইওটি শেষে ৩ মাস পরে সেবা পাওয়া যাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ থেকে। বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বিদ্যুতের জন্য যে টাকা খরচ হচ্ছে, সেই টাকাটাও বাঁচল। আর বাইরে যেটা বিক্রি করব সেখান থেকেও টাকা উপার্জন করব। প্রতিরক্ষা দফতরকে দুইটা ট্রান্সপন্ডার দেয়া হয়েছে। আবহাওয়ার জন্য এটা আপাতত আমরা করছি না। কিন্তু ভবিষ্যতে করা হবে। ফ্রান্সের স্যাটেলাইট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান থ্যালাস এ্যালেনিয়া স্পেস-এর তত্ত্বাবধানে নির্মিত স্যাটেলাইটটি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটে করে মহাকাশে পৌঁছে দেবে বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ এক ধরনের এক আকাশ বিজয়ী করতে যাচ্ছে। আকাশে বাংলাদেশর অস্তিত্ব, পতাকা ও চিহ্ন সেখানে যাচ্ছে। এটি তথ্যপ্রযুক্তি যোগাযোগ ক্ষেত্রে খুবই ভাল অবস্থান হবে বাংলাদেশের। ইন্টারনেটের ব্যাক-বুন হিসেবে স্যাটেলাইট ব্যবহৃত হতে পারে। সেই সঙ্গে আমাদের ই-গবর্নেন্সেরও সুবিধা বাড়বে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার বা যোগাযোগ চ্যানেল থাকবে। যার মধ্যে ২০টি বাংলাদেশ ব্যবহার করবে। বাকি ২০টি বিদেশী সংস্থার কাছে ভাড়া দেয়া হবে। মূলত যোগাযোগ নির্ভর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর প্রধান ব্যবহারকারী হবে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন টিভি চ্যানেল। এর মধ্য দিয়ে প্রতিবছর বিদেশী স্যাটেলাইট ব্যবহার বাবদ দেশের ১২৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সময় টেলিভিশনের সম্প্রচার ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ এবং সময়ের ওয়েবের প্রধান সালাউদ্দীন সেলিম বলেন, ‘এই স্যাটেলাইট কতটুকু কাভার করবে কি করবে না। এই নিয়ে অনেকের মধ্যে বিচ্ছিন্ন ভাবনা আছে। সেই জায়গায় এখনও টেলিভিশন মালিক কর্তৃপক্ষ ক্লিয়ার না। এছাড়াও যদি বিটিআরসি বলে খুব শীঘ্রই আমাদেরকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে আসতে হবে তা কিন্তু সম্ভব হবে না। কেননা স্যাটেলাইট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রত্যেকটা টেলিভিশন প্রায় দুই বছরের চুক্তিবদ্ধ। তাদেরকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে নিয়ে আসতে আরও দুই-তিন বছরের সময় লাগবে।’ উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার পরে চতুর্থ দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
×