ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ

বিএসএমএমইউ হবে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ৩০ এপ্রিল ২০১৮

বিএসএমএমইউ হবে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়

’৬০-এর দশকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চিকিৎসা শিক্ষায় স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়াশোনার কোন ব্যবস্থা ছিল না। স্নাতকোত্তর কোর্স প্রদান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় শাহবাগ হোটেলের জায়গায় ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন এ্যান্ড রিসার্চ (আইপিজিএমআর) প্রতিষ্ঠিত হয়। স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা ও গবেষণায় দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও এই সংস্থার ডিগ্রী প্রদানের ক্ষমতা ছিল না। এটি ন্যস্ত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর। ১৯৭১ সালে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সার্বিক পুনর্বাসন ও উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করলে বঙ্গবন্ধু তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডাঃ নুরুল ইসলামকে তৎকালীন আইপিজিএমআরের উন্নয়নের সার্বিক দায়িত্ব প্রদান করেন। দেশে চিকিৎসা শিক্ষায় উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা প্রবর্তন করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরিতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। এদেশের মানুষের রক্তের প্রয়োজনে নিরাপদ রক্ত সরবরাহ ও পরিসঞ্চালনের জন্য বঙ্গবন্ধু তৎকালীন আইপিজিএমআর-এ প্রথম ব্লাড ব্যাংক স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে এই ব্লাড ব্যাংকের উদ্বোধন করেন। আজও বঙ্গবন্ধুর হাতের ছোঁয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগে বিদ্যমান। বঙ্গবন্ধুই প্রথম এ দেশের চিকিৎসকদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে তাদের চাকরি দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করেছিলেন। বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এদেশের ছাত্র-যুবক, শিক্ষক-চিকিৎসক, কৃষক-শ্রমিক-জনতাসহ সব পেশার মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিল। স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশী-বিদেশী চক্রান্তে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে লক্ষ্যচ্যুত হয় বাংলাদেশ। আবার এ দেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয় অগণতান্ত্রিক সামরিক স্বৈরশাসন। স্বৈরতান্ত্রিক অপশাসনের ফলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়তে থাকে। স্বাস্থ্যখাত তার মধ্যে অন্যতম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্বে তৎকালে ১৩টি সরকারী ও ৫টি বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ এবং নিপসমসহ ৫টি পোস্ট গ্রাজুয়েট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেশের চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও সেবার মান উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা পালনে সক্ষম হচ্ছিল না। বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষ করে উচ্চ শিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন দেশে একটি স্বতন্ত্র ও গবেষণাসমৃদ্ধ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং সকল মেডিক্যাল কলেজের স্বায়ত্তশাসন দাবি করে আসছিল। উল্লেখ্য, ’৬৯-এর ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের দেয়া ১১ দফার মধ্যেও চিকিৎসকদের দাবির কথা উল্লেখ ছিল। বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও আইপিজিএমআর শিক্ষক সমিতি একটি স্বতন্ত্র ও গবেষণাসমৃদ্ধ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। প্রত্যেকটি সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর কোন সরকারই স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের দীর্ঘ ২১ বছর পর বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর চিকিৎসক সমাজ এ দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নয়নে তাদের সকল প্রত্যাশা পূরণের ভরসাস্থলের সন্ধান পান। সংবিধান স্বীকৃত জনগণের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং দেশের চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল তৎকালীন ‘আইপিজিএমআর’কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উন্নীত করার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম স্বতন্ত্র পাবলিক মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক এমএ কাদেরী স্যারকে আমি সে সময় প্রশাসনিক রেজিস্ট্রার হিসেবে কাজে সহায়তা করি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা এ দেশের চিকিৎসক সমাজের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবি যেমন বাস্তবায়ন করছেন, তেমনি উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষা ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী অগ্রযাত্রার সূচনা করেন। বাংলাদেশের প্রথম স্বতন্ত্র পাবলিক মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অবদান চিকিৎসক সমাজ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে চিরদিন স্মরণ করবে। এ ছাড়াও তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী মরহুম সালাহউদ্দীন ইউসুফ, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ এম আমানুল্লাহ ও স্বাস্থ্য সচিব মোহাম্মদ আলীর অবদান উল্লেখযোগ্য। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য তৎকালীন বিএমএ মহাসচিব ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ডাঃ বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, অধ্যাপক ডাঃ কাজী শহিদুল আলম, ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, ডাঃ কামরুল হাসান খান, ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া, ডাঃ জাহিদ হোসেন (শিশু কার্ডিওলজি), প্রয়াত ডাঃ জাকারিয়া স্বপনসহ আরও অনেকের অবদানও চিকিৎসক সমাজ কৃতজ্ঞচিত্তে মনে রাখবে। জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত দেশের একমাত্র পাবলিক মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের চিকিৎসক সমাজ আন্তর্জাতিক মান অর্জন করে দেশের আপামর জনসাধারণের সুচিকিৎসায় নিয়োজিত হবেন এ আকাক্সক্ষা নিয়ে যে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছিল, প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছরের মাথায় ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর কেবল হীন রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতায় বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ করে আবারও আইপিজিএমআর করার উদ্যোগ নেয় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন করেছিলাম তাদের বিরুদ্ধে নানাবিধ মামলা হামলা করেছিল তৎকালীন সরকারের লেজুড়ভিত্তিক চিকিৎসক সংগঠন ড্যাব ও কর্মচারী গোষ্ঠী। এহেন ন্যক্কারজনক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দেশের সব পেশাজীবী ও আপামর জনসাধারণ তীব্র ক্ষোভ এবং আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তীব্র আন্দোলনের ফলে বিএনপি-জামায়াত সরকার তাদের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়। তবুও ক্ষোভের বশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামফলক থেকে জাতির পিতার নাম মুছে ফেলে সংক্ষেপে বিএসএমএমইউ লিখে পরিচিতি দেয়। এমনকি তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকা থেকে গাজীপুর, টুঙ্গিপাড়া বা অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়ার হীন উদ্যোগ গ্রহণ করে। জনসাধারণের বিপুল সমর্থনে আবারও ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সেলেন্সে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের জন্য প্রধানমন্ত্রী বারডেম সংলগ্ন বেতার ভবনের জমি ও হাসপাতালের উত্তর পাশের ১২ বিঘা জমির স্থায়ী বন্দোবস্ত করে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে ৫২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ সহায়তা ও দিকনির্দেশনায় খুব দ্রুত নতুন কেবিন ব্লক সম্প্রসারণ, অনকোলজি ভবন, নতুন টুইন টাওয়ার বহির্বিভাগ, আধুনিক আইসিইউ, ওটি কমপ্লেক্স, মেডিক্যাল কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান, চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোটা প্রবর্তনসহ নানামুখী কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন। এরই অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা সেল গঠন করা হয়েছে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা, কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা, আলাদা কেবিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে রেসিডেন্সি প্রোগ্রামে চান্সপ্রাপ্ত বেসরকারী প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে মাসিক সম্মানী দশ হাজার টাকা থেকে বিশ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ এম এ কাদেরী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নিরলস পরিশ্রমে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আধুনিক ও উন্নতমানের করে গড়ে তুলতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এম এ কাদেরী স্যারের আমলে যে রেসিডেন্সি কোর্স চালু হয় তা ২০০১ সালে তৎকালীন প্রশাসন বাতিল করে দেয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা আবার এমডি, এমএস, রেসিডেন্সি কোর্স চালু করি। দেশের সকল চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম চালু হওয়ায় এখানে উচ্চতর সকল ডিগ্রী প্রদান করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে কোন্ বিষয়ে কতজন বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন সে অনুসারে উচ্চ শিক্ষার প্রসার দরকার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যাবধি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। বর্তমানে সব মেডিক্যাল কলেজসহ সব পোস্ট গ্রাজুয়েট চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে দেশের উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষা ডিগ্রী ও কোর্সসমূহকে একই মানে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে দেশের উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষার ব্যাপক উন্নয়ন ও প্রসার ঘটেছে। একই সঙ্গে সেবার মান বেড়েছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও অধ্যাপকদের প্রাতিষ্ঠানিক বৈকালিক প্র্যাকটিস, ২৪ ঘণ্টা ল্যাবরেটরি সুবিধা এবং জরুরী চিকিৎসা বিভাগ চালুর মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষ স্বল্প অর্থ ব্যয় করে উন্নত বিশ্বের ন্যায় আধুনিক ও মানসম্পন্ন সেবা পাচ্ছে। বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৬৪০তম স্থানে। তবে সব শিক্ষক-চিকিৎসকের ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিসের ব্যবস্থা করা, প্রণোদনা ভাতা প্রদান, যানবাহন প্রদান করা, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি। চিকিৎসা শাস্ত্রের উৎকর্ষ সাধনে গবেষণার বিকল্প নেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী গবেষণার এ বিষয়টি সবার্ধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এ লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আইআরবি (Institutional Research Board) গঠন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে গবেষণার কাজ সুচারুরূপে চলছে। ভবিষ্যতে নতুন নতুন গবেষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি আন্তর্জাতিক সূচকে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হবে এ প্রত্যাশা আমাদের সকলের। Rockefeller-এর সহায়তায় Public Health Dept সহ অন্যান্য বিভাগে গবেষণার কার্যক্রম আরও ত্বরান্বিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি সেকশনকে আপগ্রেড করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ডিজিটাল লাইব্রেরি গঠন করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করে Research and Education-এর আওতায় আনা হয়েছে। ভার্চুয়াল ক্লাসরুমসহ Digitali“ation-এ অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কোরিয়া সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার ১০০০ শয্যাবিশিষ্ট কোরিয়া মৈত্রী বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যা অচিরেই বাস্তবায়ন শুরু হবে। রোগীবান্ধব পরিবেশে চিকিৎসাসেবা প্রদান, চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সংযুক্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে এই প্রত্যাশা প্রতিষ্ঠানটির। লেখক : প্রো ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
×