ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২৬ ॥ আয়োজক হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা ট্রাম্প প্রশাসন!

প্রকাশিত: ০৭:৩৩, ২৯ এপ্রিল ২০১৮

বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২৬ ॥ আয়োজক হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা ট্রাম্প প্রশাসন!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে যৌথভাবে আয়োজক হওয়ার লড়াইয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। তাদের সামর্থ্য ও অবকাঠামোগত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ফিফা) ইতোমধ্যেই প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল। এ সফরে তারা সার্বিক বিষয়াদি দেখে তাদের বিশ্লেষণ প্রতিবেদন দেবে। এ তিন যৌথ আয়োজকের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী মরক্কো। সেখানেও পরিদর্শন শেষ করেছে ফিফা প্রতিনিধিদল। আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরুর আগেরদিনই ২০২৬ বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজকের নাম ঘোষণার কথা ফিফার। সবাই ধরে নিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো এক্ষেত্রে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এ বিষয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তাতে করে বিষয়টি জটিল হয়ে গেছে। ট্রাম্প প্রশাসন মনে করছে মেক্সিকো-কানাডার সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গেলে রাজনৈতিক সম্পর্কের যে টানাপোড়েন রয়েছে সেই অবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। মাত্র সপ্তাহ খানেক পরেই ভোটাভুটির আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই বক্তব্য মরক্কোকে ভোটে এগিয়ে রাখবে এমনটাই মনে করছেন এখন সবাই। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ ভিন্ন মাত্রার এক ইতিহাস গড়বে। কারণ এই বিশ্বকাপ থেকেই সর্বোচ্চ ৪৮ দেশ অংশ নেবে। সেদিক থেকে ইতিহাসের সর্ববৃহৎ বিশ্বকাপ হিসেবে রেকর্ড সৃষ্টি হবে। ঐতিহাসিক এই বিশ্বকাপ আয়োজনের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী মাত্র দুটি। একদিকে মরক্কো একাই লড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর সম্মিলিত শক্তির সঙ্গে। সেদিক থেকে প্রায় সুনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল মরক্কোর পক্ষে আয়োজক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া অসম্ভব। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্যে হাওয়া এখন প্রবাহিত হতে শুরু করেছে মরক্কোর দিকেই। ট্রাম্প সম্প্রতি তার টুইটারে লিখেছেন, ‘কানাডা-মেক্সিকোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে বেশ শক্ত বিড করেছে ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য। কিন্তু এটা খুবই লজ্জাজনক ব্যাপার হবে যে দেশগুলোকে সবসময়ই আমরা বিভিন্ন কারণে সমর্থন দেই তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিডের বিপক্ষে থাকে। আমরা কেন এই দেশগুলোর পক্ষে থেকে সমর্থন দেব যারা এমনকি জাতিসংঘেও বিভিন্ন ইস্যুতে বিরোধিতা করে?’ ট্রাম্পের এই টুইট সাড়া ফেলে দিয়েছে বিশ্ব ফুটবলে। তিনি একপ্রকার সতর্কতাই জানিয়েছেন মার্কিন ফুটবল কর্তৃপক্ষকে যে যৌথ আয়োজক হওয়ার স্বীকৃতি পেলে একটা রাজনৈতিক অসামঞ্জস্যতা তৈরি হবে এবং কূটনৈতিক কৌশলের সঙ্গে বিষয়টি সাংঘর্ষিক হবে। ফিফা প্রতিনিধিদল কিছুদিন আগেই তাদের পর্যবেক্ষণ শেষ করেছে। ৪ দিনব্যাপী তারা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো সফর করেছে। এরপর মরক্কোতেও পরিদর্শন শেষ। এখন ভোটাভুটির পালা। এক সপ্তাহ পরেই আয়োজক নির্ধারণে ভোটাভুটি হবে ফিফায় যার ফলাফল ঘোষণা করা হবে রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরুর আগেরদিন। মস্কোয় ১৩ জুন চূড়ান্ত সেই ঘোষণাটি দেয়ার কথা। কিন্তু ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর নিশ্চিতভাবেই বিডে অনেকখানি দুর্বল হয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। বিশ্বকাপ আয়োজনে ইতোমধ্যেই এই দেশগুলো অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিপুল অর্থ খরচা করেছে। বিশেষ করে মেক্সিকো তৈরি করেছে আকর্ষণীয় ও অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন স্টেডিয়াম। রাজধানী শহরে নির্মিত হয়েছে এ্যাজটেকা স্টেডিয়াম, যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও আনা হয়েছে ব্যাপক উন্নতি। কিন্তু আগে থেকেই মরক্কোর সঙ্গে আফ্রিকান দেশগুলো ছাড়াও ইউরোপের অনেক দেশই সমর্থনে ছিল। বিশেষ করে ইউরোপ থেকে সবচেয়ে বড় সমর্থনটা তারা পেয়েছে ফ্রান্সের কাছ থেকে। এবার ট্রাম্প প্রশাসনের এমন নীতির কারণে নিশ্চিতভাবে সমর্থনের পাল্লা আরও ভারি হবে মরক্কোর ব্যাপারে। উত্তর আমেরিকার এ যৌথ আয়োজক বিডাররা জানিয়েছে বিশ্বকাপের ৬০টি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রে। কানাডা ও মেক্সিকোয় হবে ১০টি করে ম্যাচ। এর মধ্যে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে শুরু করে ফাইনাল পর্যন্ত সবগুলো ম্যাচই হবে যুক্তরাষ্ট্রে।
×