বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ ॥ নওগাঁর আত্রাই-পতিসর সড়ক বেহাল। দীর্ঘদিন থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করছে। আত্রাই থেকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের পতিসর ১৫ কি মি সড়কের মধ্যে ১২ কি মি চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তার কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
আত্রাই-পতিসর সড়ক একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। পতিসরে রয়েছে বিশ^কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারিবাড়ি। কবি তার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এলাকার অবহেলিত মানুষের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করেছেন এই পতিসরে। প্রতি বছর ২৫ বৈশাখ অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে কবিগুরুর জন্ম বার্ষিকী পালিত হয় এই পতিসরে। এদিকে পতিসরে রবীন্দ্র স্মৃতি দর্শনে প্রতিদিন বিপুল দর্শনার্থী এ সড়ক দিয়ে পতিসরে যাতায়াত করে থাকেন। এমনকি বিদেশী পর্যটকরাও আসেন এই পতিসরে। উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ি, সোনাইডাঙ্গা, লাকবাড়ি, বাঁকা ও মনিয়ারী ইউনিয়নের পালশা, নওদুলী, চৌথল, কয়েড়া, নৈদিঘি, দিঘিরপাড়, মস্কিপুর, পতিসরসহ অর্ধশতাধিক গ্রামের লোকজনকে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একমাত্র এই সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়াও আত্রাই-কালীগঞ্জ হয়ে আত্রাই-সিংড়া ও আত্রাই- বগুড়ার একমাত্র সড়কপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয় সড়কটি। ফলে এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত সিএনজি, ভটভটি, ব্যাটারি চালিত টমটমসহ নানা ধরনের যানবাহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে থাকে। বিশেষ করে বগুড়া যাতায়াতের জন্য বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় অটোরিক্সা চালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সিএনজিতে গ্যাস উত্তোলনের জন্য এ রাস্তা দিয়ে বগুড়া যাতায়াত করে থাকে।
হিসাবদিনগর গ্রামের আব্দুল মুমিন বলেন, আমাদের উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা এটি। দীর্ঘদিন থেকে রাস্তাটি মেরামত না করায় আমাদের চলাচল খুবই কষ্টকর হয়েছে। বিশেষ করে রোগীদের জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে নিতে চাইলে এ দুর্ভোগের শেষ থাকে না। আত্রাই-পতিসর সড়কে সিএনজি চালক উজ্জল, রুবেল, শহিদুল ও রবিউল বলেন, সড়কটি ক্ষতবিক্ষত হয়ে থাকায় প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এ সড়কে যানবাহন চালানোতে একদিকে যানবাহনের ক্ষতি আবার যাত্রীদের চরম কষ্ট। তারপরও আমরা পেটের দায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চালাই।
আত্রাই উপজেলা প্রকৌশলী মোবারক হোসেন বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ও বরাদ্দ পেলে সংস্কার কাজ করা হবে।
