ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পিয়ংইয়ংয়ের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে ॥ ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ২৯ এপ্রিল ২০১৮

পিয়ংইয়ংয়ের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে ॥ ট্রাম্প

দশককালেরও বেশি সময় পর দুই কোরিয়ার ঐতিহাসিক বৈঠকে উত্তর ও দক্ষিণের শীর্ষ নেতৃত্ব কোরীয় উপদ্বীপকে ‘সম্পূর্ণ পারমাণবিক মুক্ত’ করার লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘নিষেধাজ্ঞা এবং অন্যান্য উপায়ে’ পিয়ংইয়ংয়ের ওপর চাপ অব্যাহতই থাকবে বলে জানিয়েছেন। শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন ও দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের মধ্যে বৈঠককে স্বাগত জানালেও পারমাণবিকীকরণ বন্ধে পিয়ংইয়ংয়ের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা ছাড়া ওয়াশিংটন পিছু হটবে না বলেও জানান ট্রাম্প। খবর ফক্স নিউজ ও দ্য অস্ট্রেলিয়ানের। দুই কোরিয়ার শীর্ষ সম্মেলনের ধারাবাহিকতায় মে মাসের শেষে কিংবা জুনের শুরুতে ট্রাম্প-কিম বেঠকের প্রস্তুতির মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতির এ নাটকীয় পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তার প্রশাসনের নেয়া পদক্ষেপেরও কৃতিত্ব দেন। ওয়াশিংটনে জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেলের সঙ্গে বৈঠকের পর হওয়া সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আগের প্রশাসনের ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি করব না আমরা। পারমাণবিক মুক্ত অবস্থা অর্জন করার আগ পর্যন্ত সর্বোচ্চ চাপ অব্যাহত থাকবে।’ কিমকে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের কর্মসূচী বাতিল করতে হবে মন্তব্য করে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আগের মার্কিন প্রশাসনগুলোকে পিয়ংইয়ং ‘বেহালার মতো বাজিয়ে’ নিজেদের কার্য উদ্ধার করেছিল বলেও অভিযোগ তার। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, হাস্যেজ্জ্বল, করমর্দন আর ‘সমৃদ্ধি ও শান্তির ভবিষ্যতের’ প্রত্যাশা ব্যক্ত করে দুই কোরিয়ার শীর্ষ সম্মেলন শেষ হলেও পিয়ংইয়ং যে তার পারমাণবিক অস্ত্রাগার বন্ধ করবে এমন কোন নিশ্চয়তা মেলেনি। শুক্রবার পানমুনজমের ‘পিস হাউসে’ উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন ইন ঘোষণা দিয়েছেন, কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করতে একসঙ্গে কাজ করবেন তারা। সেই সঙ্গে অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করে এ বছরই একটি শান্তি চুক্তিতে সই করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার এসেছে দুই নেতার কাছ থেকে। ঘোষণায় দুই কোরিয়া নিজেদের মধ্যে হামলা বা সামরিক কর্মকা- বন্ধ, সীমান্তের ‘ডিমিলিটারাইজড জোন’কে শান্তির অঞ্চলে পরিণত করা, যুদ্ধে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া দুই দেশের পরিবারগুলোর পুনর্মিলনের ব্যবস্থা করাসহ সীমান্তে সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যৌথভাবে অংশগ্রহণেরও প্রতিশ্রুতি দেয়। চীন দুই দেশেরই নেতার সাহস এবং রাজনৈতিক সঙ্কল্পের প্রশংসা করেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রগতির এ ধারা চলমান থাকবে বলেই তারা আশা করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তাৎক্ষণিক টুইটে দুই নেতার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত উত্তর কোরিয়া হয়ত এই সম্মেলনকে আন্তর্জাতিক পরিসরে নিজেদের ভাবমূর্তি বাড়ানোর কাজেই ব্যবহার করছে বলেও ধারণা কিছু কিছু বিশ্লেষকদের। কোরীয় যুদ্ধের পর কিমই প্রথম উত্তর কোরীয় শীর্ষ নেতা, যিনি সামরিক সীমারেখা অতিক্রম করে দক্ষিণে গেলেন।
×