ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

কাজী আরিফ স্মরণে ‘অঞ্জলি লহো মোর’

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২৯ এপ্রিল ২০১৮

কাজী আরিফ স্মরণে ‘অঞ্জলি লহো মোর’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এ দেশের বাচিকশিল্পের অগ্রপথিক শিল্পী কাজী আরিফ। আজ রবিবার এই মুক্তিযোদ্ধা আবৃত্তিশিল্পীর প্রথম প্রয়াণবার্ষিকী। মৃত্যবার্ষিকীর আগের দিন শনিবার স্মরণ করা হলো এই শিল্পীকে। গানের সুরে ও কবিতার ছন্দে ভালবাসা জানানো হলো আবৃত্তিশিল্পে অনন্য ভূমিকা রাখা শিল্পীকে। সুহৃদদের কথনে উঠে এলো তার কীর্তিময় জীবনের। বৈশাখী বিকেলে তাকে নিবেদিত আয়োজনটির শিরোনাম ছিল ‘অঞ্জলি লহো মোর’। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে যৌথভাবে এ স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে শিল্পীর পরিবার ও বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ। স্মরণানুষ্ঠানের শুরুতে কাজী আরিফের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। গান ও কবিতায় সাজানো আয়োজনের ফাঁকে ফাঁকে ছিল আলোচনায়। সেই কথনে অংশ নেন কাজী আরিফের মেয়ে অন্তরা বিনতে আরিফ, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য গোলাম সারোয়ার, স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল। আশরাফুল আলম বলেন, বেতারের উপস্থাপক হিসেবে দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন কাজী আরিফ। তার আবৃত্তি ও উপস্থাপনার প্রশংসা করে শ্রোতারা প্রচুর চিঠি লিখতেন। তার ব্যক্তিত্ব ও পরিবেশনার গ্রহণযোগ্যতা ছিল অসাধারণ। আবৃত্তির জগতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন তিনি। গোলাম সারোয়ার বলেন, ঝকঝকে বাংলা পড়তে পারতেন আরিফ। শব্দকে এ রকম ঘষে মেজে ঝকঝকে-থকথকে করে উচ্চারণ করতে কম লোককে দেখেছি। কাজী আরিফের কণ্ঠেই এদেশে প্রথম আবৃত্তি সংকলন প্রকাশিত হয়েছিল। নিজে আবৃত্তি করার পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবেও আবৃত্তিচর্চায় রেখেছেন অনন্য ভূমিকা। অন্য বক্তারা বলেন, এ দেশের আবৃত্তিশিল্পের ইতিহাসে কাজী আরিফকে কখনও এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আবৃত্তিশিল্পের অগ্রগতিতে এগিয়ে যেতে হলে কাজী আরিফকে ধারণ করতে হবে। সাংস্কৃতিক চেতনায় আপ্লুত হয়ে বাংলার ইতিহাসকে তুলে ধরে তিনি এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করে গেছেন। সংস্কৃতি অঙ্গনে সকলের কাছে তিনি ছিলেন প্রিয় মানুষ। অনুষ্ঠানে কাজী আরিফের প্রিয় গান ও কবিতা পরিবেশিত হয়। আব্দুল ওয়াদুদ গেয়ে শোনান রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘এবার আমায় ডাকলে দূরে’। বাচিকশিল্পী ডালিয়া আহমেদ পাঠ করেন রবীন্দ্রনাথের কবিতা ‘মরণ’। কাজী আরিফের লেখা কবিতা থেকে পাঠ করে তার সংগঠন মুক্তকণ্ঠের আবৃত্তিশিল্পী আঞ্জুমান আরা পর্ণা। ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠ করেন রবীন্দ্রনাথের কবিতা ‘কৃষ্ণকলি’। রূপা চক্রবর্তী পাঠ করেন কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ‘একই বৃন্তে’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আবৃত্তিশিল্পী মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল। প্রতœনাটক মহাস্থানের কারিগরি মঞ্চায়ন ॥ হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এই ভূখ-। তেমনই এক প্রাচীন পুরাকীর্তিসমৃদ্ধ স্থান বগুড়ার মহাস্থানগড়। প্রসিদ্ধ এই নগরী একসময় ছিল বাংলার রাজধানী। প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে এখানে জনপদ গড়ে উঠেছিল। এবার আড়াই হাজার বছরের এই জনপদের বয়ান উঠে এলো প্রতœনাটকে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে প্রতœনাটক ‘মহাস্থান’। ড. সেলিম মোজাহারের রচনায় প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন লিয়াকত আলী লাকী। দীর্ঘ ৬ মাসের মহড়া শেষে শনিবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় প্রতœনাটক মহাস্থানের কারিগরি মঞ্চায়ন হয়। এই প্রতœনাটকে কাজ করেছেন তিন শতাধিক শিল্পী ও কলা-কুশলী। মহাস্থান নাটকে আমাদের জাতিসত্তার ইতিহাসকে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। মহাস্থানগড়ের প্রাচীন ইতিহাসের সঙ্গে সময়ের পরম্পরায় বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম পর্যন্ত সময়কালকে একক গ্রন্থনায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নাটকে প্রাচীন শিকারযুগ থেকে শুরু করে বৈদিকযুগ, আদিবাসী পর্ব, রামায়নের গীত, কালিদাসের কাব্য, চর্যাপদ, সুফিসামা, বৈষ্ণব পদাবলী, ব্রাহ্মসংগীত, লোকগান, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ব্রতচারীদের গান, পঞ্চকবির গান, ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ইতিহাস, কাব্য-গীত ও ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা পালাগানরূপে প্রকাশিত হয়েছে। আজ বিশ্ব নৃত্য দিবস ॥ আজ ২৯ এপ্রিল রবিবার বিশ^ নৃত্য দিবস। ১৯৯২ সালে দিবসটি ইউনেস্কোর স্বীকৃতি লাভ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৫ সাল থেকে বাংলাদেশে পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব নৃত্য দিবস। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা, সম্মাননা প্রদান ও নৃত্যানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী দিবসটি উদযাপন করবে দেশের নৃত্য সংগঠনগুলো। বিশ্ব নৃত্য দিবস উদযাপনে ২৩ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা প্লাজায় চলছে সপ্তাহব্যাপী নৃত্যমেলা। সেই প্রতিদিন সন্ধ্যায় পরিবেশিত হচ্ছে বিভিন্ন নৃত্যসংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নৃত্যানুষ্ঠান। আজ রবিবার এ আয়োজনের সমাপনী দিন। এ উপলক্ষে সকালে শিল্পকলায় একাডেমি থেকে বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। সন্ধ্যায় একাডেমির নন্দনমঞ্চে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী। এ বছর নৃত্যগুরুমাতা রাহিজা খানম ঝুনু স্মরণে নৃত্য দিবসের সম্মাননা জানানো হবে নৃত্যজন সেলিনা হককে। নাট্যশালায় মঞ্চস্থ রাজা হিমাদ্রি ॥ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে শনিবার সন্ধ্যায় দৃষ্টিপাত নাট্যদল মঞ্চস্থ করেছে নাটক রাজা হিমাদ্রি। গ্রীক ট্র্যাজিক নাট্যকার সফোক্লিসের অসামান্য নাট্যকর্ম ‘ইডিপাস’ অবলম্বনে নাটকটি রূপান্তরের পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন ড. খন্দকার তাজমি নূর। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন খন্দকার তাজমি নূর, অধরা প্রিয়া, আবদুল হালিম আজিজ, জাহাঙ্গীর কবির বকুল, রাকিব হোসান ইভন, শ্রেয়া খন্দকার, রফিকুল ইসলাম, সুনীল কর্মকার, সুজন খান, সুপ্তি হালদার, রাজ আহমেদ ও রুনা আঁখি।
×