ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তুষারকে ছাড়িয়ে লিটন

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

তুষারকে ছাড়িয়ে লিটন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগে (বিসিএল) ব্যাটসম্যানদের মধ্যে হয়েছে তুমুল লড়াই। রান করার মহোৎসবে মেতে ছিলেন যেন সবাই। সবমিলিয়ে ৬ রাউন্ডে সেঞ্চুরি হয়েছে ৩৮টি, আর অর্ধশতক এসেছে ৪৯টি। তবে ধারাবাহিকতার দিক থেকে নিশ্চিতভাবেই নজরকাড়া নৈপুণ্য দেখিয়েছেন অভিজ্ঞ তুষার ইমরান। কিন্তু শেষ মুহূর্তে প্রায় ট্রিপল ছুঁয়ে ফেলা একটি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রান সংগ্রহের তালিকায় সবার ওপরে চলে গেছেন লিটন কুমার দাস। ব্যাটিংয়ে শীর্ষস্থান দখলে এ দু’জনের লড়াই হলেও বোলিংয়ে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। ৪৩ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। এবার বিসিএলে প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জিতেছে। যদিও এবারের আসরে বিসিবি উত্তরাঞ্চলের প্রায় হাতের মুঠোয় চলে এসেছিল চ্যাম্পিয়নশিপ। কিন্তু যে দলে তুষার ও রাজ্জাকের মতো দুই অন্যতম ধারাবাহিক পারফর্মার তারা একেবারে শেষ রাউন্ডে ভেল্কি দেখিয়েছে। এবারের আসরে প্রথম জয়টা দক্ষিণাঞ্চল পায় উত্তরাঞ্চলের বিরুদ্ধে শেষ রাউন্ডে। আর সেই জয়টা ছিল ইনিংস ব্যবধানে। আর এতেই অবিশ্বাস্যভাবে শিরোপা জয় করে দক্ষিণাঞ্চল। এই দলের হয়ে ব্যাটিংয়ে একাই প্রতিপক্ষকে ভুগিয়েছেন তুষার। এক সময় জাতীয় দলে খেলা ৩৪ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার ধারাবাহিকভাবেই রানের ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন। ৪টি সেঞ্চুরি ও ৩টি হাফসেঞ্চুরি হাঁকান তিনি ৯ ইনিংস ব্যাট করে। রান করেছেন ৯০.৬২ গড়ে ৭২৫। শেষ ম্যাচে একটি ইনিংস ব্যাট করতে পারেননি বলেই হয়তো ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের হয়ে ১০ ইনিংস ব্যাট করা লিটন তাকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছেন। লিটন ৯৭.৩৭ গড়ে ৭৭৯ রান করেছেন। ৩টি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি হাঁকানো লিটন শেষ রাউন্ডে ২৭৪ রানের একটি অবিশ্বাস্য ইনিংস উপহার দেন। আর সে কারণেই তিনি টপকে যান দারুণ ধারাবাহিক তুষারকে। এটি দেশের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ইতিহাসে পঞ্চম সেরা ব্যক্তিগত ব্যাটিং নৈপুণ্য। ২০০৬-০৭ মৌসুমে বরিশাল বিভাগের হয়ে রকিবুল হাসান অপরাজিত ৩১৩ রান করেছিলেন সিলেট বিভাগের বিপক্ষে ফতুল্লায়। এটিই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এবং দেশের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরির ঘটনা। ২০১৪-১৫ মৌসুমের জাতীয় ক্রিকেট লীগে (এনসিএল) ১০২৪ রান করে সবাইকে বিস্মিত করেছিলেন লিটন। ২০১৪-১৫ মৌসুমে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এক আসরে ভারতের রনজি ট্রফিতে রবীন উথাপ্পার সংগ্রহকে ( ১১ ম্যাচে ৯১২) ছাড়িয়ে জাতীয় লীগে ১০২৪ রানে গড়েছিলেন লিটন দাস রেকর্ড। এরপরই জাতীয় দলে জায়গা করে নেন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে চলতি বছর সারাবিশ্বের নৈপুণ্য হিসেব করলেও লিটন এক বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছেন। এ বছর ৯১০ রান করেছেন তিনি ৮ ম্যাচে ৩ সেঞ্চুরি, ৪ ফিফটিতে। তার ওপরে আছেন শুধু আফগানিস্তানের দরবেশ রসুলি (১০৭৩ রান) ও শ্রীলঙ্কার রোশেন সিলভা (১০৫২ রান)। জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত অবশ্য টেস্ট ক্রিকেটে খুব বড় কোন ইনিংস খেলে নজর কাড়তে পারেননি কিন্তু ২৩ বছর বয়সী এ তরুণ আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন চারদিনের ম্যাচগুলোয়। ব্যাটিংয়ে তার সঙ্গে এবার অভিজ্ঞ তুষার একাই পাল্লা দিয়েছেন। কিন্তু এরপরে তৃতীয় অবস্থানে থাকা তরুণ ক্রিকেটার সাদমান ইসলাম করেছেন ৫০০ রান। বিশাল ব্যবধান লিটন-তুষারের চেয়ে। কিন্তু বোলিংয়ে ৩৪ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার রাজ্জাকের ধারে কাছেও নেই কেউ। এ অভিজ্ঞ বোলার এবার শিকার করেছেন ২৫.০০ গড়ে ৪৩ উইকেট (১১ ইনিংস)। ৫ ইনিংসে নিয়েছেন ৫টি করে উইকেট। ৯ ইনিংস বোলিং করে ২৯ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন পূর্বাঞ্চলের অফস্পিনার সোহাগ গাজী।
×