স্টাফ রিপোর্টার ॥ খুলনা এখন মাইকের নগরী। সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের প্রচারে ব্যস্ত প্রার্থীরা একদিকে চষে বেড়াচ্ছেন পাড়া-মহল্লা, অন্যদিকে তাদের প্রচারণায় শহরজুড়ে ছুটে বেড়াচ্ছে অসংখ্য মাইক। ফলে এ শহরের বাসিন্দাসহ শহরে পা রাখা যে কোনও আগন্তুকও বুঝতে পারছেন খুলনা নগরীতে এখন চলছে নির্বাচনী উৎসব।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর অলিগলিতে প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলছে প্রার্থীদের ভোট প্রার্থনার মাইকিং। প্রার্থীরাও লিফলেট হাতে ছুটে বেড়াচ্ছেন বাজার থেকে বাসা পর্যন্ত। সেই সঙ্গে প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রত্যেক প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। দলীয় প্রতীকে মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণা তো আছেই তারচেয়েও বেশি ব্যস্ততা ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থীদের। আর ছাপাখানাগুলোয় চলছে প্রার্থীদের পোস্টার ছাপানোর ব্যস্ততা। সব মিলিয়ে জমে উঠেছে খুলনা সিটি নির্বাচন।
গত মঙ্গলবার জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রতীক হাতে পেয়েই মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রচার শুরু করেন।
প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকরা উৎসাহ, উদ্দীপনার মধ্য দিয়েই চলাচ্ছেন প্রচারণা। তীব্র রোদ মাথায় দাবদাহ উপেক্ষা করে তারা ছুটছেন বাড়ি বাড়ি, এ পাড়া থেকে ও পাড়ায়। বিকাল হলেই চলছে নগরজুড়ে চলছে মাইকিং। প্রচার বাড়তি উৎসাহ দেখা যাচ্ছে কাউন্সিলর প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে। এ অবস্থার মধ্যে মৌসুমী বিক্রেতারা নানা রঙের প্রতীক-ব্যানার নিয়ে নেমে পড়েছেন। প্রতীক বরাদ্দের সঙ্গে সঙ্গে প্রচারণা শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। আহসান আহমেদ রোডের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, পুরো খুলনায় নির্বাচনী উৎসব চলছে। ভোটারদের বাড়ি, পাড়া-মহল্লায় প্রার্থী ও সমর্থকদের পদচারণা বাড়ছে। সড়কে বের হলেই কোন না কোন প্রার্থীর সমর্থক ও কর্মীরা করমর্দন করাসহ ভোট প্রার্থনা করছেন। হঠাৎই বদলে গেছে খুলনার পরিবেশ। সবখানেই এখন নির্বাচন নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে।
১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আশফাকুর রহমান কাকন বলেন, নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীরা মাতামাতি করবেন এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এবার নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। ভোটাররা অনেক সচেতন।
প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরই প্রার্থীর পোস্টার ছাপাতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ছাপাখানা কর্মীরা। ছাপাখানার মালিক ও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় মেয়র পদের পোস্টার আগেই সাজিয়ে রাখা হয়।
প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরই প্রার্থীর সংকেত পেয়ে তা ছাপার কাজ শুরু হয়। আর কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারের আকার ও নক্সা আগেই তৈরি রাখা হয়। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই প্রতীকটি জানানোর পর পোস্টার ছাপানোর কাজ শুরু করা হয়। এ অবস্থায় হঠাৎ করেই চাপ সৃষ্টি হয়।
খুলনার ফ্রেন্ডস প্রিন্টার্সের মিজানুর রহমান মোড়ল বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীরা পোস্টার ও লিফলেট ছাপাতে এসেছেন। লিফলেট আগে দেয়া হচ্ছে। পোস্টার ছাপানোর জন্য দিন-রাত কাজ করতে হচ্ছে। এখানে ২০ জন নিয়মিত থাকলেও নির্বাচন উপলক্ষে আরও ১২ জন শ্রমিক বাড়ানো হয়েছে।
স্মৃতি কম্পিউটার এ্যান্ড প্রিন্টার্স কারখানার শাকিল আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার বিকাল থেকেই কাজের চাপ বেড়েছে। এর আগে প্রার্থীদের লিফলেট ও পোস্টারের নক্সা তৈরিতে অনেক সময় দিতে হয়েছে। এখন চলছে পোস্টার ছাপানোর কাজ। কোহিনূর প্রিন্টিং প্রেসের কলিমুর রহমান বলেন, খুলনা মহানগরে ২৭টি বড় ছাপাখানা থাকলেও ডিজিটাল প্লেট তৈরি করার মতো মাত্র তিনটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ কারণে প্রচ- চাপে থাকতে হয়।
উল্লেখ্য, খুলনা সিটি নির্বাচনে ৫ জন মেয়র প্রার্থী, ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৪৭ জন ও ১০টি সংরক্ষিত আসনে ৩৮ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। আগামী ১৫ মে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ভোট গ্রহণ করা হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: