ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পরিবহন খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার দাবি

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

 পরিবহন খাতকে রাজনৈতিক  প্রভাবমুক্ত  করার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতিকে সড়ক দুর্ঘটনার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে হলে শক্ত হাতে রাজনৈতিক প্রভাবের লাগাম টেনে ধরতে হবে। এজন্য গণপরিবহন খাতকে সব ধরনের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত ‘সড়ক দুর্ঘটনাবিরোধী মানববন্ধন ও সমাবেশে’ রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক নেতা ও আইনজীবীসহ বিশিষ্ট নাগরিকেরা এসব কথা বলেন। এ সময় তারা এক শ্রেণীর পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতার মুনাফালোভী বেপরোয়া মনোভাব পরিবর্তনের আহ্বান জানান। অব্যাহত সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির জন্য গণপরিবহন খাতের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকে দায়ী করে বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, বাস মালিক সমিতি ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের দুই শীর্ষ নেতাই মন্ত্রী। ফলে বাস-ট্রাক মালিক ও শ্রমিকেরা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। সাধারণ মানুষের সেবা ও নিরাপত্তা নয়, তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য শুধুই মুনাফা অর্জন। বাংলাদেশের পরিবহন শ্রমিকেরা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উচ্ছৃঙ্খল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ইশতিয়াক রেজা বলেন, মালিকদের বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি আর শ্রমিকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো যাচ্ছে না। সব ধরনের গণপরিবহনে চাঁদাবাজি রোধ এবং বাসের মধ্যে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়াবাবদ নগদ টাকা নেয়া বন্ধ করে কার্ড পদ্ধতিতে ভাড়া নেয়ার দাবি জানান তিনি। গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতিম-লীর সদস্য নুরুর রহমান সেলিম বলেন, গণপরিবহন খাতকে সব ধরনের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। শক্ত হাতে সড়ক দুর্ঘটনার লাগাম টেনে ধরে জাতিকে দুর্ঘটনার অভিশাপ মুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি। রাজু আহমেদ বলেন, ১৩ লাখ লাইসেন্সবিহীন চালক সারাদেশে যানবাহন চালাচ্ছেন। এসব অবৈধ চালককে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। দক্ষ চালক তৈরির জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস বাধ্যতামূলক করার পক্ষে মত দেন গাজী টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক রাজু আহমেদ। সাংবাদিক নিখিল ভদ্র বলেন, দুর্ঘটনায় যারা নিহত হন, তারা তো মরেও বেঁচে যান। কিন্তু তার স্বজনেরা চরম অসহায় হয়ে পড়েন। আর যারা পঙ্গু হন, তাদের সারা জীবন এই অভিশাপ বয়ে বেড়াতে হয়, বেঁচে থাকতে হয় পরিবারের বোঝা হয়ে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সহ-সভাপতি আজমল হক হেলাল বলেন, দু-চারজন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ বা কমানো সম্ভব হচ্ছে না। তাদের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। এসব সুযোগসন্ধানী ও অর্থলোভী মালিক-শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
×