ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

গণগ্রন্থাগারে সপ্তাহব্যাপী ঢাকা বিভাগীয় বইমেলা

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

গণগ্রন্থাগারে সপ্তাহব্যাপী ঢাকা বিভাগীয় বইমেলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চেতনার জাগরণে বই প্রতিপাদ্যে শুরু হলো ঢাকা বিভাগীয় বইমেলা। শাহবাগের সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে শুক্রবার থেকে সপ্তাহব্যাপী এ মেলার সূচনা হয়। গণগ্রন্থাগারের উন্মুক্ত আঙিনায় স্টলে স্টলে শোভা পাচ্ছে গল্প-কবিতা কিংবা উপন্যাসের বই। আছে পাঠকের চৈতন্যে কড়া নাড়া ভ্রমণকাহিনী থেকে শুরু করে আত্মজীবনী, প্রবন্ধ, অনুবাদ গ্রন্থ, রাজনৈতিক বিষয়সহ রকমারি বিষয়ের বই। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় মেলার আয়োজন করেছে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র। জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি এবং পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির অংশগ্রহণকৃত মেলায় রয়েছে সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টল। বৈশাখী বিকেলে গণগ্রন্থাগারের উন্মুক্ত আঙিনায় বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন অতিথিরা। এরপর শওকত ওসমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় উদ্বোধনী আলোচনা। এতে উদ্বোধকের বক্তব্য দেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন গণগ্রন্থাগার অধিদফতরের মহাপরিচালক আশীষ কুমার সরকার। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের পরিচালক এ কে এম রেজাউল করিম। উদ্বোধনী বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বই আমাদের সামনে চলতে শেখায়। বই পড়ে আমরা একইসঙ্গে জ্ঞান অর্জন ও আনন্দ লাভ করি। বই হাতে নিয়ে মেতে উঠি খুশিতে। তাই প্রযুক্তির যতই বিকাশ হোক, বইয়ের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কখনও দূর হবে না। ই-বুক চালু হলেও ছাপা বই কেনার জন্য এখনও মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। বইয়ের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক চিরস্থায়ী, এটা কখনও মোচন হওয়ার নয়। আর এ ধরনের মেলা যত বেশি অনুষ্ঠিত হবে বইয়ের প্রতি পাঠকের আগ্রহও তত বাড়বে। বক্তব্যে তিনি বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে বিশ্ব সাহিত্যের সংযোগে ঢাকা আন্তর্জাতিক বইমেলা ফের আয়োজনে গুরুত্বারোপ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ক্লাসের বই পড়তে পড়তে ছেলেমেয়েরা এখন আর বাইরের বই পড়ার ফুরসত পায় না। অথচ আমরা যে মানবিক কিংবা উন্নত সমাজ গঠনের কথা বলি, সাংস্কৃতিক বিকাশের পথে রুচিশীল মনন গঠনের কথা বলছি, সেজন্যই বই পড়াকে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। সংস্কৃতিবান্ধব সমাজ গড়তে বই পড়ার বিকল্প নেই। এ কারণেই সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়মিত বইমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি পুনরায় যেন ঢাকা আন্তর্জাতিক বইমেলার আয়োজন করা যায়। ফরিদ আহমেদ বলেন, স্বল্প পরিসরের কারণে এই মেলায় অনেক খ্যাতনামা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানই অংশ নিতে পারেনি। ভবিষ্যতে এ মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে এটির পরিসর বাড়ানোর বিষয়ে নজর দিতে হবে। ৫টি সরকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৪৬টি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে মেলায়। বেসরকারী প্রকাশনা সংস্থার মধ্যে রয়েছে ঐতিহ্য, পাঠক সমাবেশ, বাতিঘর, মুক্তধারা, মাওলা ব্রাদার্স, সৃজনী, ভাষাচিত্র, এ্যাডর্ন, জয়তী, বেঙ্গল পাবলিশার্স, অনিন্দ্য, জনান্তিক ইত্যাদি। সরকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, চলচ্চিত্র প্রকাশ অধিদফতর ইত্যাদি। আগামী ৩ মে পর্যন্ত চলবে মেলা। রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা এবং শুক্র ও শনিবারসহ ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে মেলা শুরু হয় চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। ছায়ানটে কমলিনী মুখার্জীর সঙ্গীতসন্ধ্যা ॥ সুরেলা কণ্ঠের আশ্রয়ে রাজধানীর শ্রোতার হৃদয় রাঙালেন কমলিনী মুখার্জী। ভারতীয় এই শিল্পী ইতোমধ্যে মার্কিন মুলুকের সঙ্গীতানুরাগীদের মন জয় করেছেন। শুক্রবার তিনি গানে গানে মুগ্ধ করলেন ঢাকার শ্রোতাদের। শোনালেন রবীন্দ্রসঙ্গীত। সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো এই শিল্পীর রবীন্দ্র সঙ্গীতসন্ধ্যা। সঙ্গীতাসরটির আয়োজন করে ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্দী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আইজিসিসি)। অনুষ্ঠানে শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইজিসিসির পরিচালক জয়শ্রী কু-ু। এরপরে মঞ্চে আসেন শিল্পী। রবীন্দ্রনাথের পূজা পর্বের গান দিয়ে পরিবেশনা পর্বের সূচনা হয়। গেয়ে শোনান ‘আমার মাথা নত করে দাও হে’। এরপর কমলিনী মুখার্জী একে একে গেয়ে শোনান- বহে নিরন্তর, কেন চোখের জলে, আমার ভাঙা পথের, তোমার খোলা হাওয়া দীপ নিবে গেছে, তোরা যে যা বলিস ভাই, ভরা থাক, আমার প্রাণের পরে ও বরিষ ধরা মাঝে। গানের ফাঁকে ডালিয়া আহমেদ স্বপ্নময় চক্রবর্তীর ‘পারিবারিক চালচিত্র’ কবিতাটি পাঠ করেন। কমলিনীর গানের সিডি বেরিয়েছে বেশ কয়েকটি। রাষ্ট্রপতি ভবনে একক সঙ্গীত আসর করেছেন। তাছাড়া ভারতের রেডিও টিভিতেও নিয়মিত একক গানের আসর হয় এ শিল্পীর।
×