ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চাইলেই তারেককে দেশে আনা যাবে না ॥ মোশাররফ

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

চাইলেই তারেককে দেশে আনা যাবে না ॥ মোশাররফ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মহিলা দল আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য সরকারের শর্তপূরণ করেই তারেক রহমান রাজনৈতিক আশ্রয়ে লন্ডনে আছেন। তাই কেউ চাইলেই তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবে না। ড. মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগ জানে দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে পরাজিত হবে। তাই তারা সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ ভোট দিতে ভয় পায়। খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে একটি পাতানো নির্বাচন করতে চায় আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু দেশের জনগণ তাদের সেই স্বপ্ন কখনও পূরণ হতে দেবে না। খন্দকার মোশাররফ বলেন, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দেয়ার পরও আপীল বিভাগের মাধ্যমে তাঁর জামিন স্থগিত করা হয়েছে। আইনের মারপ্যাঁচে খালেদা জিয়ার জামিন বিলম্বিত করা হচ্ছে। আমরা তাঁর নিঃশর্ত মুক্তি চাই। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া অনেক বেশি অসুস্থ, তাই সুচিকিৎসার জন্য আমরা তার মুক্তি চাই। কারণ, তিনি অনেক বেশি অসুস্থ। আমরা আশা করি, সরকার তাকে মুক্তি দিয়ে নিজের ইচ্ছামতো চিকিৎসা নিতে সুযোগ দেবে। ড. মোশাররফ বলেন, তারেক রহমান সব আইন মেনেই যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। কিন্তু সরকার তাকে যে কোন মূল্যে দেশে ফিরিয়ে আনবেন বলে একটা ধূম্রজাল তৈরি করছেন। তারেক রহমান যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন। কারণ, এ দেশের সরকার তাকে সহ্য করতে পারে না। তিনি বলেন, যতদিন না তারেক রহমান যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলবেন-আমি বাংলাদেশে যাব, বাংলাদেশ আমার জন্য নিরাপদ; ততদিন তাকে যে কেউ চাইলেই দেশে ফেরত আনতে পারবে না। তারেক রহমান অবশ্য বাংলাদেশে আসবেন। এ দেশের জনগণ তাকে বীরের বেশে দেশে ফিরিয়ে আনবে। কিন্তু শেখ হাসিনা যেভাবে আনতে চান, সেভাবে তাকে ফেরত আনা কোনভাবেই সম্ভব নয়। ড. মোশাররফ বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্র ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই সূত্রে গাঁথা। কারণ, খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে দেশে গণতন্ত্র মুক্ত হবে না, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে না। সরকার খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে বাইরে রেখে আবার একটি পাতানো নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশে এটি আর কখনও হবে না। এবারের নির্বাচন হবে হবে সব দলের অংশগ্রহণে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সাবেক সভাপতি নূরে আরা সাফা প্রমুখ। খালেদাকে জেলে রেখে নির্বাচনের নীল নক্সা করছে সরকার- খসরু ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে সরকার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নীল নক্সা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সনের মুক্তির দাবিতে খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। খসরু বলেন, খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে না বলে নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগের ইচ্ছের প্রতিফলন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর অধীনে যে ৪টা নির্বাচন হয়েছে, তার কোনটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি। সেনাবাহিনী সারাবিশ্বের মানুষের আপদে-বিপদে সব সময় পাশে দাঁড়িয়েছে। শুধু নির্বাচন থেকে সেনাবাহিনীকে বাদ দেয়া পিছনের উদ্দেশ্যটা কি? দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে খসরু বলেন, নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারের সুযোগ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। সেটা নিয়ে কমিশন উঠেপড়ে লেগেছে। অথচ এক সপ্তাহ আগেই আমরা কিছু প্রস্তাব দিলেও সেগুলো নিয়ে কোন আলোচনাই করছে না ইসি। খসরু বলেন, তারেক রহমানের পরিচয় কোন পাসপোর্টের ভিত্তিতে হতে পারে না। কারণ, নাগরিকত্বের সঙ্গে পাসপোর্টের কোন সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, বিএনপিতে তারেক রহমানের নেতৃত্ব এত বেশি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ যে, সেটি ক্ষমতাসীনদের পীড়া দিচ্ছে। ফলে তারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। উনার অসুস্থতা আজকে জাতিকে শঙ্কার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। নয়াপল্টনে বিএনপি শামসুল ইসলামের প্রতি নেতাকর্মীদের শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন ॥ নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের নেতা ও সাবেক মন্ত্রী এম শামসুল ইসলামের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে দলের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার বেলা ১১টায় তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সেখানে তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মাওলানা এমএ মালেক জানাজা নামাজ পড়ান। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশান আজাদ মসজিদে প্রথম এবং শুক্রবার সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ শামসুল ইসলামের প্লাজায় দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জানাজায় অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল-নোমান, আহমদ আজম খান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
×