ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুই সিটির নির্বাচনী মাঠে কেন্দ্রীয় নেতাদের পদচারণা

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

দুই সিটির নির্বাচনী মাঠে কেন্দ্রীয় নেতাদের পদচারণা

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, গাজীপুর/ নূরুল ইসলাম, টঙ্গী ও অমলসাহা, খুলনা ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এবারের নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর প্রথম শুক্রবার প্রার্থীগণ গণসংযোগ, বৈঠক আর মিছিল-সমাবেশ করে ব্যস্ত দিন কাটিয়েছেন। জুমাবার হওয়ায় এদিন প্রার্থীরা তাদের কর্মী-সমর্থক নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। এ সময় তারা মুসল্লিদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেছেন এবং ভোট ও দোয়া চেয়েছেন। দিনটি সরকারী ছুটির দিন হওয়ায় প্রার্থীদের সমর্থনে দিনভর তারা ভোটারদের বাড়ি, শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভিড় জমিয়েছেন এবং নানা আশার বাণী শুনিয়ে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় দিনভর গণসংযোগ করেছেন। দলীয় প্রার্থীর গণসংযোগে একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাও অংশ নিয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পদচারণায় ইতোমধ্যে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনী মাঠ জমে উঠেছে। এদিকে, খুলনায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায় বলেছেন, আমরা নির্বাচনের মাঠে থাকতে চাই। তিনি বলেন, এই নির্বাচনেই প্রমাণ হবে আগামী জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে। বিএনপির নির্বাহী কমিটি সদস্য ও মিডিয়া সেলের প্রধান ডাঃ মাজহারুল আলম জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারে শুক্রবার ২০ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। জোটপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নিজ বাসভবনে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নির্বাচনী প্রস্তুতি বিষয়ক আলোচনা করেন। এ সময় ড্যাব মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এ জেড এম জাহিদ, অধ্যাপক ডাঃ মোস্তাক রহিম স্বপন, অধ্যাপক ডাঃ রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, ডাঃ এবিএম মূসা, ডাঃ এম. এ কামাল, ডাঃ মোঃ আবুল কালাম, ডাঃ মোঃ শফিকুল ইসলাম, ডাঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম, ডাঃ মোঃ সালমান উপস্থিত ছিলেন। এর পর সকাল ১০ টার দিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারদলীয় নেতা-কর্মীকে নিয়ে খাইলকৈরের নিজের প্রতিষ্ঠিত বাদশা মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন আপন মার্কেটে পথসভার মধ্য দিয়ে দিনের নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। তিনি গাছার বাদশা মিয়া স্কুল, আপন বাজার, হিন্দু বাড়ীর মোড়, ডেগের চালা, বটতলা, মৈরানসহ বিভিন্ন স্পটে ব্যাপক গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন। তিনি স্থানীয় ডেগেরচালা জামতলা এলাকার জামে মসজিদে নামাজ আদায় করেন। এ সময় তিনি মুসল্লিদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন এবং ভোট ও দোয়া প্রার্থনা করেন। এদিন সকাল হতেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান দলের নেতা-কর্মী নিয়ে শুক্রবার গাজীপুরের টংগী ও গাছার বিভিন্ন ওয়ার্ডে মেয়র পদে ধানের শীষের প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে গণসংযোগ করেছেন। পরে সেখান থেকে তিনি গাছার ৩৮নং ওয়ার্ডের বটতলায় মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের সঙ্গে মিলিত হয়ে গণসংযোগে অংশ নেন। এ সময় তিনি এক পথসভায় বক্তব্য রাখেন। এদিকে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব) আলতাফ হোসেন, নির্বাচন পরিচালনা প্রধান ফজলুল হক মিলন ও মিডিয়া সেল প্রধান ডাঃ মাজহারুল আলম, পৌর বিএনপি সভাপতি মীর হালিমুজ্জামান ননী গাজীপুর শহরের জোড়পুকুর এলাকায় দলের নেতাকর্মীর সঙ্গে ঘরোয়া নির্বাচনী সভা করেছেন। এদিকে সকাল থেকেই ঘরোয়া বৈঠক আর গণসংযোগ করে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সকালে হাজীরপুকুর এলাকায় দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনী প্রচার সম্পর্কে নানা পরামর্শ দেন। পরে তিনি দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গাছা, বোর্ডবাজার, শরীফপুর, বাদেকলমেশ্বর, বড়বাড়ি, তারগাছ, আইইউটিসহ বিভিন্ন এলাকায় দিনভর গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি ভোটারদের খোঁজখবর নেন এবং নানা আশার বাণী শুনিয়ে ভোটারদের কাছে তাদের ভোট ও দোয়া প্রার্থনা করেন। গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহাম্মদ হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মোজাম্মেল হক, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মহি উদ্দিন, কাজী ইলিয়াস, মোকসেদ আলমসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় অনুষ্ঠিত পথসভায় মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্বাচন হবে উৎসবমুখর পরিবেশে। সাধারণ মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে। আমরা চাই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিয়ে সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বোর্ডবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। নামাজের পর তিনি মুসল্লিদের নিকট নৌকা মাকায় ভোট চান। বিকেলে তিনি সিটি কর্পোরেশনের ৩৫,৩৬ ও ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে গনসংযোগ ও পথসভায় এলাকাবাসীর নিকট নৌকা মাকায় ভোট প্রার্থনা করেন। এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত অপর মেয়র প্রার্থী কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মোঃ ফজলুর রহমান শুক্রবার চান্দনা চৌরাস্তা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। এ সময় তিনি মুসল্লিদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং মিনার প্রতীকে ভোট ও দোয়া চান। এ ছাড়াও তিনি টঙ্গী বাজার, কলেজ গেট, চেরাগ আলী, স্টেশন রোড কোনাবাড়ি, কাশিমপুরসহ সিটির বিভন্ন এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগ করেন এবং ভোটারদের কাছে দোয়া ও ভোট চান। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এবারের নির্বাচনের অন্য প্রার্থীরা দিনভর গণসংযোগ করে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। নারী পুরুষ কর্মী সমর্থকরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে দিনভর গণসংযোগ ও সমাবেশ করেছেন। বিএনপির কেন্দ্র কমিটির সমন্বয়কারীদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে গাজীপুর সাবেক পৌর এলাকার ভোট কেন্দ্রের সমন্বয়কারীদের এক কর্মশালা শহরের দক্ষিণ ছায়াবীথিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলন। প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী। কর্মশালায় বাংলাদেশ লেবার পার্টির সভাপতি ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেজর মিজানুর রহমান, ডাঃ মাজহারুল আলম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আফজাল হোসেন কায়সার, আহাম্মদ আলী রুশদী, সাবেক পৌর বিএনপির সভাপতি আলহাজ মীর হালিমুজ্জামান ননী, জেলা যুগ্ম সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সবুজ, কাজী মাহবুবুল উল হক গোলাপ, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, গাজীপুর জেলার সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যপক আসাদুজ্জামান আকাশ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির মহানগর সভাপতি প্রিন্সিপাল হুমায়ুন কবির, লেবার পার্টি মহানগরের সভাপতি আহসান হাবিব ইমরুজ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ মোল্লা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এসকে জবি উল্লাহ, কৃষকদল মহানগর সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান এলিসসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। খুলনা ॥ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বোঝা যাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে। সেই কারণে এই দুটি সিটির নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের সময় দ্রুত এগিয়ে আসছে। সাধারণ মানুষ এখন খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন কেমন হবে তা পর্যবেক্ষণ করছে। আমরাও এ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে আমরা শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতে চাই। অনেক সময় আমাদের মাঠে থাকতে দেয়া হয় না। তবে সরকার ও প্রশাসন অস্ত্র দেখিয়ে তাড়িয়ে না দিলে আমরা মাঠেই থাকব। খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনী কার্যক্রম সমন্বয় করার দায়িত্ব পালনের জন্যে খুলনায় অবস্থানরত গয়েশ্বর চন্দ্র রায় শুক্রবার সকালে খুলনা প্রেসক্লাবে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে একথা বলেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সিটি নির্বাচনে আমি খুলনার আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীকে শক্তিশালী প্রার্থী মনে করি না। কারণ, গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগের কর্মকা-ে তাদের নৌকা মার্কার প্রতি মানুষের আস্থা সৃষ্টি হয়নি। তারপরও বলছি, নৌকার মাঝি যতই শক্তিশালী প্রার্থী হোক না কেন, নৌকার তলা যেখানে ঠিক নেই সে নৌকায় কোনভাবেই পার হওয়া (জেতানো) সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমরা ক্লিন ইমেজের প্রার্থী দিয়েছি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ভাল মানুষ হলেও তার মার্কা নৌকা। তাই নৌকা মার্কার যত দায় তা তার ওপর বর্তাবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় রাজনীতির চেয়ে জাতীয় রাজনীতি বেশি গুরুত্ব পাবে। আমরা ভোটারদের কাছে আমাদের নেত্রীর (খালেদা জিয়া) মুক্তির কথা তুলে ধরছি। খুলনা সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের ক্লিন ইমেজ ও উন্নয়নে কে কেমন অবদান রাখতে পারবেন এমন প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, স্বাধীনতাপূর্বকালে স্থানীয় সরকারের অনেক ক্ষমতা ছিল। কিন্তু স্বাধীনতা উত্তরকালে তা কমে গেছে। উন্নয়ন ছাড়াও স্থানীয় সরকারের নেতাদের আরও অনেক কাজ রয়েছে। স্থানীয় সরকারে নির্বাচিতদের মাধ্যমে কাজ না হলে উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অনেক সামাজিক সমস্যাও তৈরি হয়। আর এই সমস্যার প্রধান কারণ সরকার ও সংসদ সদস্যরা। মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী ও জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, বিএনপির কেন্দ্রী নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, শেখ মুজিবুর রহমান, অধ্যাপক ডাঃ গাজী আব্দুল হক, কাজী আলাউদ্দীন, খান রবিউল ইসলাম ও মনিরুজ্জামান মন্টু। নির্বাচিত হলে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে-খালেক ॥ খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ তালুকদার আব্দুল খালেক শুক্রবার সকালে ১৬ নং ওয়ার্ডে ও পরে ১৭ নং ওয়ার্ডসহ অন্যান্য এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেন। সকালে রায়ের মহল এলাকায় গণসযোগসহ স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি বলেছেন, ২০০৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি সিটি কর্পোরেশনের ১২ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করে পরিকল্পিতভাবে খুলনার উন্নয়ন করেছেন। তারই অংশ হিসেবে খুলনা নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণে নানা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। ২২টি খালকে চিহ্নিত করে অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে জলাবদ্ধতা নিরসন হয়েছিল। ২০১৩ সাল থেকে ৫ বছরে আবারও খুলনা শহর পিছিয়ে পড়েছে। থমকে গিয়েছে খুলনার উন্নয়ন। তিনি বলেন, নগরবাসীর সহযোগিতায় পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হলে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সকল নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এজন্য তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে খুলনার উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা, দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী এনায়েত হোসেন, নগর আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসান ইফতেখার চালু, শেখ মোশাররফ হোসেন, অসিত বরণ বিশ্বাস, সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক তসলিম আহমেদ আশা, কাজী মুজিবুল হক, শেখ ফারুক হাসান হিটলু, শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজনসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। শিল্পাঞ্চল খালিশপুরে মঞ্জুর গণসংযোগ ॥ খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ২০ দলীয় জোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু শুক্রবার নগরীর খালিশপুর ১০ ও ৭ নং ওয়ার্ডে ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন। সকাল ৯টা থেকে তিনি খালিশপুর পৌর সুপার মার্কেট এলাকা থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। এরপর তিনি চিত্রালী বাজার, বঙ্গবাসী স্কুল মোড়, নতুন কলোনি, মানসি বিল্ডিং মোড়, পিপলস পাঁচতলা মোড়, লাল হাসপাতাল রোড, বিআইডিসি রোড, ভাটিয়াপাড়া এলাকা, উত্তর কাশিপুর, রায়পাড়া, মেঘনা ও পদ্মা রোড, কাশিপুর ক্রস রোড, রাজধানীর মোড়, বিএল কলেজ বাইলেন, পশ্চিমপাড়া, মালা গ্যারেজ মোড়সহ বিভিন্নস্থানে গণসংযোগ করেন। এ সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির পাশাপাশি খুলনাকে পরিচ্ছন্ন, মাদক ও জলাবদ্ধমুক্ত এবং গ্রীন-ক্লিন সিটি গড়ে তুলতে মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করা হয়। এ সময় মেয়র প্রার্থী মঞ্জুর সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা লতিফুর রহমান লাবু, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, সিরাজুল ইসলাম, এ্যাডভোকেট বজলুর রহমান, স ম আব্দুর রহমান, শেখ খায়রুজ্জামান খোকা, এ্যাডভোকেট ফজলে হালিম লিটন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রশিদ, আবু হোসেন বাবু, শাহিনুল ইসলাম পাখি, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা এসএম কামাল হোসেনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। মেয়র প্রার্থী বাবুর ১৭ দফা ইশতেহার ঘোষণা ॥ জবাবদিহিমূলক ও স্বশাসিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনকে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে ১৭ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন সিপিবি মনোনীত ও বাসদ-বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মিজানুর রহমান বাবু। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এ ইশতেহার ঘোষণা করেন। এ সময় সিপিবির জেলা সভাপতি ডাঃ মনোজ দাস, নগর সভাপতি এইচএম শাহাদাত, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএ রশিদ, নগর সহসম্পাদক এ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন। সিপিবি প্রার্থীর নির্বাচনী ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশনকে স্বশাসিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠা, অনিয়ম-দুর্নীতিমুক্ত সিটি কর্পোরেশন, জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ, বন্ধ কল-কারখানা চালু ও হকার পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান ও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি, শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসার, প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণ, দরিদ্রবান্ধব আবাসন সৃষ্টি, সুপেয় পানি, বর্জ্য ও পয়োনিষ্কাশন, স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, সড়ক-মহাসড়ক সংস্কার, যানজট ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রভৃতি। ইশতেহার ঘোষণার পর বাম দলের এ মেয়র প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, কালো টাকা, পেশিশক্তি, প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার চলছে। লোক ভাড়া করে জনগণের ভোট আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি নির্বাচন কমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও দলীয় বলয়ভুক্ত বলে মন্তব্য করেন এবং এ থেকে সংশ্লিষ্টদের বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।
×