ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শব-ই-বরাতের আগেই বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও মাছের দাম

প্রকাশিত: ০৫:১০, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

শব-ই-বরাতের আগেই বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও মাছের দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শব-ই-বরাতের আগেই বেড়ে গেছে ব্রয়লার মুরগি ও মাছের দাম। চাল, ডাল, চিনি, ভোজ্যতেল, ছোলা ও পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। অন্যান্য সবজির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও পেঁপে ও আলুর মতো সবজির দাম বেড়ে গেছে। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বেড়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শবেবরাত সামনে রেখে সব ধরনের মুরগির দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। মুরগির পাশাপাশি নিত্যপণ্যের বাজারে মাছের দামও বেশি। তবে গরু ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার, ফার্মগেট কাঁচাবাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট এবং মিরপুর-১ সিটি কর্পোরেশন বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। শবেবরাত সামনে রেখে শুক্রবার ছুটির দিনে রাজধানীর বাজারগুলোতে ছিল ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। বেশিরভাগ ক্রেতা অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে মুরগি ও মাছ কিনেছেন। এতে করেও বাজারে মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে যায় বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঝড়-বৃষ্টি-বাদলার কারণে সরবরাহের ঘাটতি হয়েছে। সেকারণে মুরগির দাম একটু বাড়তে পারে। ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি পাকিস্তানী নামে পরিচিতি মুরগির দামও বেড়েছে। মাঝারি সাইজের পাকিস্তানী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা জোড়া। গত সপ্তায় এই মুরগির জোরা ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া লেয়ার ও ককটেল মুরগির দামও বেড়েছে বলে জানা গেছে। তবে শবেবরাত সামনে রেখে দাম বাড়াতে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি রয়েছে বলে মনে করছেন এই খুচরা বিক্রেতারা। তাদের মতে, পাইকারি বাজারে মুরগির দাম বাড়তি। কাপ্তান বাজারের মুরগি বিক্রেতা হাবিব জনকণ্ঠকে বলেন, দুই দিন আগেও আমরা প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেছি ১৪০ টাকায়। আজ (শুক্রবার) সেটা ১৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। মুরগির পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে চড়া মাছের বাজারও। সব ধরনের মাছের দাম বেড়ে গেছে। প্রতিজোড়া মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকায়। এছাড়া রুই ২৮০-৩০০, চিংড়ি ৬০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাওরান বাজারে প্রতিকেজি করল্লা ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ টাকা, ঢেঁড়শ ২৫ টাকা, পটল ৪০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দুদিন ধরে বেগুন ও পেঁপের দাম কিছুটা বাড়তি বলে জানান, কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা খালেক মিয়া। কেজিতে ২ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৮-২২ টাকায়। এছাড়া বাজারে পেঁপে ও বেগুনের দাম সবচেয়ে বেশি বাড়তে দেখা গেছে। ফার্মগেট কাঁচাবাজারে প্রতিকেজি পেঁপে ৫০ টাকা এবং বেগুন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান আবুল হোসেন। এছাড়া দেশী ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে রসুনের দাম কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে বলে জানান মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটের বিক্রেতা রমজান আলী। ওই বাজারে দেশি পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়, ভারতীয় পেঁয়াজ ১২০ টাকায়। সেই হিসাবে কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজের দাম পড়ে ২৪ টাকা। গত এক সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আগে দাম আরেকটু বেশি ছিল। বাজারে দীর্ঘদিন ধরে আদা রসুনের দাম স্থিতিশীল থাকলেও নতুন করে রসুনের দাম বাড়ার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন ধরে ৮০ টাকা দরে চায়না রসুন বিক্রি হলেও শুক্রবার মোকামে দাম বেড়েছে কেজিতে অন্তত ৫ টাকা। সামনের দিনগুলোতে রসুনের দাম কিছুটা বাড়তে পারে। এছাড়া কারওয়ান বাজারের দোকানগুলোতে মিনিকেট ৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৫৫ টাকা থেকে ৭৮ টাকা, পাইজাম ৪৪ টাকা থেকে ৪৬ টাকা এবং মোটা স্বর্ণা চাল ৪২ থেকে ৪৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলেন, গত এক মাস ধরে চালের বাজার স্থিতিশীল আছে। এখন বোরো মৌসুমের নতুন ধান উঠা শুরু হয়েছে। সামনে চালের দাম আরেকটু কমবে। এছাড়া শবেবরাত সামনে রেখে ছোলা ও বুটের ডালের চাহিদা বেড়েছে। তবে এখনও দাম বাড়েনি। এ বছর রমজান সামনে রেখে ইতোমধ্যে চাহিদার তুলনায় বেশি পরিমাণ ছোলা আমদানি করা হয়েছে। প্রতিকেজি ছোলা জাত ও মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮৫ টাকায়। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। তবে প্যাকেটজাত চিনি ৬৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে খুচরা পর্যায়ে।
×