ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

বিদ্যুত সুবিধা বঞ্চিত ২০ হাজার শিক্ষার্থী পাবে ‘শিক্ষা বন্ধুবাতি’

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

বিদ্যুত সুবিধা বঞ্চিত ২০  হাজার শিক্ষার্থী পাবে   ‘শিক্ষা বন্ধুবাতি’

শংকর লাল দাশ, গলাচিপা থেকে ॥ বিদ্যুত বিহীন দুর্গম এলাকায় বসবাসরত প্রতিবন্ধী, গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের কাছে বিনামূল্যে সৌরবিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেয়ার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে-আলোর অভাবে যাতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ব্যাহত না হয়। প্রকৃত অর্থেই সৌর বিদ্যুতের আলো শিক্ষার্থীদের কাছে যেন বন্ধু হয়ে উঠতে পারে, এ জন্য প্রকল্পটির নামকরণ করা হয়েছে ‘শিক্ষা বন্ধুবাতি’। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে প্রথম পর্যায়ে দেশের পাঁচটি বিভাগের ১৪ উপজেলার ২০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীকে দেয়া হচ্ছে শিক্ষা বন্ধুবাতি। এর মধ্যে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের তিন হাজার শিক্ষার্থীর হাতে শীঘ্রই শিক্ষা বন্ধুবাতি তুলে দেয়া হবে। বর্তমানে কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। সূত্র জানায়, দেশের বহু দুর্গম এলাকায় এখনও বিদ্যুত সুবিধা পৌঁছেনি। কেরোসিন তেল কিনে বাতি জ্বালিয়ে প্রতিষ্ঠানিক পাঠক্রম অব্যাহত রাখা দেশের অসংখ্য পরিবারের শিক্ষার্থীর কাছে বাড়তি বোঝা। এ অবস্থায় শুধুমাত্র আলোর অভাবে মাধ্যমিক পর্যায়ে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান সরকার পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলের অর্থায়নে প্রথম বারের মতো শিক্ষা বন্ধুবাতি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক ও প্রকল্পের উপপরিচালক শাকিলা ইয়াসমিন ফোনে জানান, উপজেলাগুলোর মোট ২০ হাজার ৬৬০ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বন্ধুবাতি দেয়া হবে। ছোট আকারের সৌর সিস্টেমকে শিক্ষা বন্ধুবাতি উল্লেখ করে নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিদ্যুত সুবিধা নেই এমন দরিদ্র পরিবারের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত প্রতিবন্ধী ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে একটি করে শিক্ষা বন্ধুবাতি দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যুতবিহীন দুর্গম এলাকা প্রাধান্য দেয়া হবে। তবে একটি পরিবারে একাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও কেবলমাত্র একটি বাতি দেয়া হবে। শ্রেণীকক্ষে প্রথম থেকে পঞ্চম ক্রমিক নম্বরের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও স্কুল পরিচালনা কমিটির তত্ত্বাবধানে প্রধান শিক্ষকের বাছাই করা তালিকানুযায়ী শিক্ষার্থীদের বাতি দেয়া হবে। শিক্ষা বন্ধুবাতির জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সার্ভিস চার্জ হিসেবে মাত্র ১ শ’ টাকা দিতে হবে। এর বাইরে আর কোন অর্থ দিতে হবে না। প্রতিটি বাতি ব্যবহারে থাকছে পাঁচ বছরের নিশ্চয়তা বা ওয়ারেন্টি।
×