ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রয়টার্স সাংবাদিকদের মুক্তি দাবি

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

রয়টার্স সাংবাদিকদের মুক্তি দাবি

মিয়ানমারের মানবাধিকার গ্রুপ বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেন্টের কাছে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। তারা অবিলম্বে রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা পুলিশ কর্মকর্তাদের সরকারী গোপন নথির মামলাকে অযৌক্তিক বলে দাবিও করেছে তারা। খবর ইয়াহু নিউজের। প্রেসিডেন্ট উইন মিনতের কাছে পাঠানো খোলা চিঠিতে ১৬৩টি মানবাধিকার গোষ্ঠীর স্বাক্ষর রয়েছে। চিঠিতে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে ন্যায়বিচার ও সত্য অনুসন্ধানের পাশাপাশি বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বজায় রাখতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হাতই মানবাধিকার কর্মীদের খোলা চিঠির বিষয়ে মন্তব্য করতে অনুরোধ করা হলে তিনি তাতে কোন সাড়া দেননি। তিনি বিষয়টি সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আদালতের পূর্ববর্তী শুনানি সম্পর্কে বলেন, বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। ইয়াঙ্গুনের একটি আদালতে রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সরকারের করা মামলার প্রাথমিক শুনানি চলছে। জানুয়ারির পর থেকে সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) ও কাইয়া সো ওও’র (২৮) বিরুদ্ধে ঔপনিবেশিক যুগের ‘অফিসিয়াল সিক্রেট এ্যাক্ট’ আইনের অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের ১৪ বছরের জেল হতে পারে। ডিসেম্বরে মিয়ানমার সরকার দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে। যাদের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মামলায় জড়িত ছিল বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। গত সপ্তাহে এক পুলিশ কর্মকর্তা আদালতকে জানান, গত ডিসেম্বরে তাদের উর্ধতন এক কর্মকর্তা তাদের আদেশ দিয়েছেন গ্রেফতারকৃত দুই সাংবাদিকের একজনকে গোপন নথি দেয়ার কথা বলে ফাঁদে ফেলতে। সে সময় ওই সাংবাদিকরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাদের নির্মূল অভিযান চলাকালে দশজন রোহিঙ্গাকে হত্যার বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছিলেন। জাতিসংঘের সংস্থা জানায়, প্রায় সাত লাখ লোক সেই সেনা অভিযানের সময় পালিয়ে বাংলাদেশে চলে যায়। পুলিশের ক্যাপ্টেন মোঃ ইয়ান নাইং আদালতকে জানান, কিভাবে পুলিশ পরিকল্পনা করে গোপন নথি দেয়ার কথা বলে সাংবাদিকদের ডেকে পাঠায়। পুলিশের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বর্তমানে পুলিশ আইন ভঙ্গ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে এখন দু’বছরের জেল ও বরখাস্ত করা হয়েছে। সপ্তাহের শেষে মোঃ ইয়ানের পরিবারকে পুলিশের আবাসিক ভবন থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। যা মিয়ানমারের সংবাদপত্রগুলোর প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে। অনেকে পুলিশ পরিবারটির প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, আদালতে মোঃ ইয়ান নাইংয়ের সাক্ষ্য দেয়ার সঙ্গে তার পরিবারের উচ্ছেদ হওয়ার বিষয়টি সম্পৃক্ত নয়। এছাড়া তারা আর বিস্তারিত কিছু জানায়নি। প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো পিটিশনে সহায়তাকারী থাতো আউং জানান, আমরা বিশ্বাস করি এটি সঠিক মামলা নয়.. যেজন্য আমরা সবাই চাই সত্য উদঘাটিত হোক এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হোক। জাতিসংঘের উর্ধতন কর্মকর্তারা, পশ্চিমা দেশগুলো ও বাক স্বাধীনতার পক্ষে তৎপর সংস্থাগুলো রয়টার্সের সাংবাদিকদের মুক্তি দিতে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে। মিয়ানমার পুলিশের ক্যাপ্টেন মোঃ ইয়ানের সাক্ষ্য বিশ্বাসযোগ্য কিনা সে বিষয়ে আগামী সপ্তাহে বিচারক তার রায় জানাবেন।
×