[কবি ও কলামিস্ট স্বদেশ রায় প্রিয়জনেষু]
চারুকলা থেকে গতকাল ভোরে
যখন মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হলো
উল্লাসে তখন এক নববধূ ঘোমটা সরিয়ে
বিজলি মুখে খিলখিল করে হেসে ওঠে;
এবং আমার বুক পরিণত হয়
নক্ষত্রখচিত এক শূন্যেরমণ্ডলেÑ
গৌরবের অনাবৃত গন্ধে নাচে
হাজার আলোর রাঙা প্রজাপতি,
আর তার সঙ্গে
নাচে
কত শত কল্লোলিত কুসুমকুমারী!
এ দৃশ্যে পাগল হয়ে নদীসহ উড়ে আসে
মীনকন্যা, মেঘপরী- তার পাশে শাদা কানাবগি
কী সুন্দর মরমী ভঙ্গিতে
ধ্যান থেকে উঠে আসে-
আলোর পাখায়
মমতা ও মিলনের রঙ্গম ফুটায়!
হরিণ বাঘের পিঠে হরিণীকে জড়িয়ে ধরেছে :
আজ কোনো মৃত্যু নয় জীবনের পরম উত্থান-
সভ্যতা নতুন স্বপ্নে ঘর তোলে মানবসভায়।
২.
অথচ দু’ দিন আগে,
হ্যাঁ, এই তো সেদিন
এখানে কী তাণ্ডব চালায়
কতিপয় নির্বোধ চণ্ডাল!
আর আজ?-
সব কিছু ধুয়ে মুছে
আবার নতুন করে তৈরি হলো বাঘ
আবার নতুন হাতি এগিয়ে চলেছে
ঢুল ও বাঁশির শব্দে খুলে যায় রঙের পোশাক
প্রাণের মহোৎসবে খিড়কিপথে বেরিয়ে পড়েছে
ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে
ভালোবাসা রাজহাঁস জুটি;
স্বপ্নগুলো ঘুড়ি হয়ে উড়ে যাচ্ছে অনেক উপরে
চারদিকে এত আলো ও আনন্দ!
ক্লান্তি জরা অবসাদ ঝেড়ে
নতুনের হাত ধরে
অই হাঁটে পুরনো গয়াল।
বৈশাখী হাওয়ার টানে
সব কিছু ভেঙেচুড়ে
সমুদ্র পাহাড় নদী
ওলোট- পালোট করে
আকাশ কাঁপিয়ে
দুর্বিনীতা চণ্ডালিনী বাতাসের
ঝুটি ধরে, দ্যাখো
কে আজ এগিয়ে যাচ্ছে
সভ্যতার মানবশেকড়ে;
দ্যাখো ভাই দ্যাখো বোন
দ্যাখো বন্ধু প্রিয়জন
বর্বরতা খর্ব হয়ে পেছনে হঠেছে।
বাঙালী মানব হয়ে মিলনের মোহনার চরে
তৈরি করে আজ এক গোত্রহীন আলোর বসতি।
২ বেশাখ ১৪২৫