ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্ঘটনায় হাত হারানো শিশুর কৃত্রিম হাত সংযোজনের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২৭ এপ্রিল ২০১৮

দুর্ঘটনায় হাত হারানো শিশুর কৃত্রিম হাত  সংযোজনের উদ্যোগ

সমুদ্র হক ॥ জীবনকে বুঝে ওঠার আগেই সড়ক দুর্ঘটনায় হাত হারানো আট বছরের শিশু সুমিকে সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স। শিশুর আগামী দিনগুলোকে যতটা পারা যায় সুন্দর করে দিতে পাশে দাঁড়িয়েছেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী। তিনি বিত্তবানদের প্রতি এই শিশুর মুখে হাসি ফোটানোর আহ্বান জানিয়েছেন। সুমিকে কৃত্রিম হাত সংযোজন করা হবে। গেল ২২ এপ্রিল বগুড়ার শেরপুরের শেরুয়া বটতলা এলাকায় বগুড়া-ঢাকা মহাসড়ক পার হওয়ার সময় সুমির বাম হাত ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়। তখনই দেহ থেকে খসে পড়ে হাতটি। টিকে থাকে সামান্য অংশ। এরপর তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই সে চিকিৎসাধীন। শিশুর পরিবার খুবই দরিদ্র। মা মরিয়ম খাতুন গৃহকর্ত্রী। বাবা দুলাল খান একসময় রিক্সা চালাত। বর্তমানে ছোট্ট মুদি দোকানে কোন রকমে জীবন চলে। তাদের তিন মেয়ের মধ্যে ছোট সুমি। সে ব্র্যাক স্কুলের শিক্ষার্থী। গুরুতর অবস্থায় সুমিকে শজিমেক হাসপাতালে ভর্তির পর বগুড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকসহ সাংবাদিকরা তার পাশে দাঁড়ান। দ্রুত ছটে যান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী। চিকিৎসকগণ সর্বোচ্চ সেবা দিতে এগিয়ে আসেন। সুমির মায়াবি মুখ আপন করে নিতে সবাইকে ভুলিয়ে দেয়। দুইজন নার্স মায়ের মমতা দিয়ে শিশুকে বাঁচনোর জন্য রক্ত দেয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী আকুল হৃদয়ের ব্যাকুল আবেদনে বলেছেন, শিশু সুমিকে আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা যাবে না। তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা যেতে পারে। চিকিৎসকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, সুস্থতা সাপেক্ষে এক মাসের মধ্যে আরেকটি অপারেশনের পর কৃত্রিম হাত সংযোজন (পুনর্স্থাপন) করা যাবে। দেশেই তা সম্ভব। সুমিকে ঢাকায় বিশেষায়িত হাসপাতালে নিতে হবে। এ জন্য জেলা প্রশাসন যতটা সম্ভব সহযোগিতা দেবে। তারপরও উন্নত কৃত্রিম হাত পুনর্স্থাপনে প্রয়োজন অর্থের। বিত্তবানরা এগিয়ে এলে শিশুটি আগামীতে লিখাপড়া করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ছেলেবেলার একটি দুর্ঘটনাকে শক্তিতে পরিণত করতে পারে। শিশুকে সহায়তা দিতে জেলা প্রশাসক তার ফেস বুকে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তহবিলের একটি হিসাব নম্বর দিয়েছেন।
×