ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সীমান্তে হত্যাসহ সব অপরাধ বন্ধে বিজিবি বিএসএফ ঐকমত্য

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২৭ এপ্রিল ২০১৮

  সীমান্তে হত্যাসহ সব অপরাধ বন্ধে বিজিবি বিএসএফ ঐকমত্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সীমান্তে হত্যাসহ সব ধরনের অপরাধ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে একমত বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এজন্য বাহিনী দুইটির মহাপরিচালকরা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান। প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার ফলে চলতি বছর সীমান্তে কোন হত্যাকান্ডে ঘটনা ঘটেনি। এমন সুযোগে অপরাধীরা বিএসএফের ওপর আক্রমণ করে যাচ্ছে। আক্রমণে তিন ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পিলখানার বিজিবি সদর দফতরে বিজিবি-বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ে ৪৬ তম সীমান্ত সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলনের যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরিত হয়। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যাসহ সব ধরনের অপরাধ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে বিজিবি ও বিএসএফ একমত। সীমান্তে প্রাণহানি এড়াতে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার বিষয়েও তারা একমত হয়েছেন। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিএসএফ সীমান্তে অনেক দিন ধরেই প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করছে না। ফলে সীমান্তে হত্যা অনেক কমে এসেছে। বিগত বছরগুলোতে সীমান্তে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তবে চলতি বছর এখন পর্যন্ত একটিও সীমান্ত হত্যার ঘটনা ঘটেনি। বিএসএফ সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার ফলে তারা অপরাধীদের হামলার শিকার হচ্ছেন। ফেলানী হত্যা মামলাটি ভারতের আদালতে বিচারাধীন থাকায় এ বিষয়ে কেউ কথা বলেননি। বিএসএফ মহাপরিচালক কে কে শর্মা বলেন, তারাও সীমান্তে আর কোন হত্যা চান না। সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তবে সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার ফলে বিএসএফ সদস্যরা অপরাধীদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। ইতোমধ্যেই অপরাধীদের হাতে তিন জন ভারতীয় নাগরিকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তারপরেও তারা সীমান্তে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করছেন। সীমান্তে আর কোন মানবাধিকার লঙ্ঘন হোক, এটা তাদের কাম্য নয়। তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গাদের কাজে লাগিয়ে কোন স্বার্থান্বেষী মহল যেন কোনও কিছু করতে না পারে সে বিষয়ে তারা সতর্ক রয়েছেন। অস্ত্র চোরাচালানসহ নানা বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেনসিডিলসহ নানা ধরনের মাদক প্রবেশের বিষয়টি তারা নজরদারি করছেন। নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। বিজিবি মহাপরিচালক ও বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে গবাদি পশু ও মাদক চোরাচালানপ্রবণ এলাকায় সমন্বিত যৌথ টহল পরিচালনা, সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বিধি-নিষেধ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম বন্ধে যৌথ পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে একমত হয়েছেন। যৌথ সিদ্ধান্তের ফলেই ভারতের আগরতলায় ইটিপি এবং বাংলাদেশের আখাউড়া আইসিপির ভারতীয় অংশে বক্স কালভার্ট ড্রেনেজ নির্মাণের কাজ চলছে। এতে করে দুই দেশের ওইসব এলাকা দূষণ কমবে। আজ শুক্রবার বিকেল তিনটায় পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা আইসিপিতে বিজিবি মহাপরিচালক ও বিএসএফ মহাপরিচালক যৌথভাবে উভয় বাহিনীর জয়েন্ট রিট্রিট সেরিমনি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। শুক্রবারই ভারতীয় প্রতিনিধি দল স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করবে। সম্মেলনে বিএসএফ মহাপরিচালক কে কে শর্মার নেতৃত্বে দশ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দল ও বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেন। এছাড়া সীমান্ত সম্মেলন উপলক্ষে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) পরিচালিত ‘বিএসএফ ওয়াইভস ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন’ এর ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিজিবি পরিচালিত ‘সীমান্ত পরিবার কল্যাণ সমিতির (সীপকস্) বিভিন্ন কর্মকা- পরিদর্শন করে।
×