ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে না ॥ ইসি

প্রকাশিত: ০৫:০২, ২৭ এপ্রিল ২০১৮

খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে না ॥ ইসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে আশাবাদী কমিশন। এ দুই সিটিতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কাও নেই বলে মনে করছে তারা। র‌্যাব পুলিশ বিজিবি মোতায়েন করেই সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী মোতায়েনের কোন চিন্তাভাবনা নেই বলে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বলেন, বিগত দিনে আপনাদের সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচন সফল হয়েছে। এই নির্বাচনও সফল হবে বলে আশা করছি। সেই আপনাদের পরামর্শও প্রত্যাশা করছি। গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে এ বৈঠক আহ্বান করা হয়। আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে বেলা ১১টা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে এ সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিজিবি-র‌্যাবের মহাপরিচালকসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় কমিশনার, খুলনা-গাজীপুরের প্রশাসন-পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে গত ২৭ দিনে গাজীপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোন অবনতি হয়েছে বলেও প্রতিবেদন আসেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরাও সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হয় না উল্লেখ করে বলেন, খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে না। তবে পর্যাপ্তসংখ্যক নিয়মিত বাহিনীর (পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার) সদস্য থাকবেন। প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করে ভোটের মাঠের পরিস্থিতি সামাল দেয়ার ব্যবস্থা নেবে তারা। ইসি সচিব বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে কোনভাবেই সেনা মোতায়েন করা হবে না- এ সিদ্ধান্ত রয়েছে কমিশনের। আগেও বলেছি বিজিবি-র‌্যাব-পুলিশসহ আধা সামরিক বাহিনী থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক। প্রয়োজনে দেশের যে কোন এলাকা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর আরও বেশি সদস্য আনা হবে বলে উল্লেখ করেন। বলেন, কমিশনের প্রতি আস্থা রয়েছে বলেই বিএনপি ভোটে অংশ নিচ্ছে। আস্থা না থাকলে কেমন হবে! তারা তো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দল ও প্রার্থীসহ সবাইকে সিইসি বলেছেন- প্রচারে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, আগামী ১৫ মে নির্বাচনের দিন গাজীপুরের গার্মেন্টস কারখানাগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটা নিয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এ্যাসোসিয়েশন ও পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের আশঙ্কার বিষয় উল্লেখ করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার হয়। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার উদাহরণ দিয়ে বলেন, এটা কীভাবে ঠেকানো যায়, তা নিয়ে কিছু প্রস্তাব এসেছে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সঙ্গে এ বিষয়ে মতবিনিময় বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে। ভোটকেন্দ্রে সংবাদ সংগ্রহ করার বিষয়ে সংবাদকর্মীরা কীভাবে কাজ করবেন, এ নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে ইসি একটি মতবিনিময় সভা করবে। তবে এ বিষয়ে এখনও তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে একটি পারস্পরিক বোঝাপড়া তৈরির জন্য সব ধরনের মতবিনিময় বৈঠকের বিষয়ে তারা চিন্তা করছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে গাজীপুরের এসপিকে প্রত্যাহার করতে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসতে হবে। সেখানে তিনি (এসপি) অসহযোগিতা করছে কিনা দেখতে হবে। এখন পর্যন্ত তার বিষয়ে নির্বাচন কর্মকর্তা বা কেউ কোন অসহযোগিতার রিপোর্ট আসেনি। এ সময় ইসি সচিব বলেন, দুই সিটিতে স্বল্প পরিসরে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন কোন কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে তা নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানান। এদিকে ইসির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠকের কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে পুলিশ-এপিবিএন-আনসার ব্যাটালিয়ান সদস্য নিয়ে গঠিত মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে ১৯টি। এছাড়া র‌্যাবের ৫৭টি টিম ও ২৯ প্লাটুন বিজিবি থাকবে। আচরণ বিধিমালা প্রতিপালন ও নির্বাচনী অপরাধে তাৎক্ষণিক সাজা দিতে গাজীপুরে ৮৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হবে। অন্যদিকে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে পুলিশ-এপিবিএন-আনসার ব্যাটালিয়ান সদস্য নিয়ে গঠিত ১০টি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স, র‌্যাবের টিম থাকবে ৩১টি; বিজিবি থাকবে ১৬ প্লাটুন। এছাড়া এ সিটিতে ৪৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১০জন বিচাকির ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।
×