ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মজিদের ডাবল সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় মধ্যাঞ্চলের

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

মজিদের ডাবল সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় মধ্যাঞ্চলের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের (বিসিএল) ষষ্ঠ বা শেষ রাউন্ডের দ্বিতীয়দিন শেষ হয়েছে। দ্বিতীয়দিন ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল ও প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল রানের পাহাড় গড়েছে। রাজশাহীতে ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে আব্দুল মজিদের ডাবল সেঞ্চুরিতে ৫৪৬ রান করেছে মধ্যাঞ্চল। জবাবে পূর্বাঞ্চল ৩ উইকেট হারিয়ে লিটন কুমার দাসের সেঞ্চুরিতে ২৬৪ রান করে। মধ্যাঞ্চল এখনও ২৮২ রানে এগিয়ে রয়েছে। খুলনায় ইমরুল কায়েসের সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৬৫ রান করতেই ইনিংস ঘোষণা করে দেয় দক্ষিণাঞ্চল। জবাবে প্রথম ইনিংসে ১৮৭ রান করা উত্তরাঞ্চল বিনা উইকেটে ৩২ রান করে। এখনও ১৪৬ রানে এগিয়ে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চল। সুবিধাজনক অবস্থায় দক্ষিণাঞ্চল ॥ উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে শিরোপা নিয়ে টানাটানি। সেই টানাটানিতে শেষ পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলের হাত থেকে না আবার শিরোপা ফসকে যায়। দুই দলের মধ্যে শেষ রাউন্ডের প্রথমদিন পর্যন্ত পয়েন্ট পার্থক্য ছিল ১০। দ্বিতীয়দিন দক্ষিণাঞ্চল লিড নেয়ায় সেই পার্থক্য হয়েছে ৯। সেই সঙ্গে ৩৫০ রানের উর্ধে করায় আরও ৪ পয়েন্ট মিলেছে। তাতে পয়েন্ট পার্থক্য দাঁড়িয়েছে ৫। এখন যদি ম্যাচটা জিতে দক্ষিণাঞ্চল তাহলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। সেই শিরোপা জেতার সুযোগটি বলতে গেলে ইমরুল কায়েসই করে দিয়েছেন। স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকের অসাধারণ বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে উত্তরাঞ্চলকে ১৮৭ রানের বেশি করতে পারেনি। এরপর ব্যাট করতে নেমে ১ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করে ফেলে দক্ষিণাঞ্চল। এনামুল হক বিজয় (৫২*) ও ইমরুল কায়েস (৫১*) দুইজনই হাফসেঞ্চুরি করে ফেলেছিলেন। সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিলেন দুইজনই। কিন্তু দ্বিতীয়দিন বিজয় ১১ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি। ৮৯ রানে আউট হয়ে যান। কিন্তু ইমরুল হাল ছাড়েননি। ১৬৫ বলে ১৩ চার ও ২ ছক্কায় ১০৭ রান করেই সাজঘরে ফেরেন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৭তম সেঞ্চুরি করেন তিনি। বিজয় ও ইমরুলের দ্বিতীয় উইকেটে করা ১৮৪ রানের জুটির সঙ্গে তুষার ইমরানের ৬৫ ও মোহাম্মদ মিঠুনের ৪৯ রান মিলে বড় সংগ্রহই গড়েছে দক্ষিণাঞ্চল। তাতে করে জয়ের সম্ভাবনাও জাগিয়ে ফেলেছে। প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে শুরুতেই ১৭৮ রানে এগিয়ে যায় দক্ষিণাঞ্চল। দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য এখনও উইকেট হারায়নি উত্তরাঞ্চল। মিজানুর রহমান (১৭*) ও জুনায়েদ সিদ্দিকী (১৪*) মিলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কোন উইকেট না হারিয়ে ৩২ রান করেছে উত্তরাঞ্চল। তাতে দক্ষিণাঞ্চল এখনও ১৪৬ রানে এগিয়ে রয়েছে। আজ তৃতীয়দিনে যদি উত্তরাঞ্চলের ইনিংসে ধস নামে এবং দক্ষিণাঞ্চল শেষ পর্যন্ত ম্যাচ থেকে জয় তুলে নিতে পারে তাহলে আর জিতলেই শিরোপা এবার দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে যাবে। মজিদের ডাবল সেঞ্চুরির পর লিটনের জবাব ॥ চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে না মধ্যাঞ্চল। তবে রানার্সআপ হওয়ার সুযোগ আছে। যদি বোনাস পয়েন্টসহ জয় মিলে। সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে খুলনায় দক্ষিণাঞ্চল জয় না পায়। তাহলে সুযোগ থাকছে। সেই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টাও করে চলেছে মধ্যাঞ্চল। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন যেন লিটন কুমার দাস। প্রথমদিন মজিদ ও সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরিতে ৪০৬ রান করেছিল মধ্যাঞ্চল। প্রথমদিন ১৫৯ রান করার পর অসুস্থ হয়ে মাঠ ছাড়া মজিদ দ্বিতীয়দিন সেঞ্চুরিকে ডাবল সেঞ্চুরিতে পরিণত করেন। ২৪৬ বলে ২২ চার ও ৮ ছক্কায় ২০৫ রান করেন। মজিদের এই অনবদ্য নৈপুণ্যের সঙ্গে শুভাগত হোমের ৭১ ও মোহাম্মদ শরীফের ৪১ রানে ৫৪৬ রান করে অলআউট হয় মধ্যাঞ্চল। সোহাগ গাজীর (৫/১৮৮) দুর্দান্ত বোলিংয়ে আরও দূরে যেতে পারেনি মধ্যাঞ্চল। তারপরও পূর্বাঞ্চলের সামনে রানের পাহাড় জমা হয়। তাতে বিধ্বস্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। কিন্তু ওপেনার লিটন কুমার দাস এতটাই ভাল ব্যাটিং করছেন, ১২৫ বলে ২৩ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ১৩৯ রান করেছেন। তার ব্যাটিংয়ে জবাবও দিচ্ছে পূর্বাঞ্চল। এখনও ফলোঅন এড়াতে পারেনি পূর্বাঞ্চল। তবে লিটনের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে তাসামুল হকের (৬৭) ১৪৮ রানের জুটিটি বড়ই কাজে দিয়েছে। এখন লিটনের সঙ্গে উইকেটে আছেন ৩১ রান করা আফিফ হোসেন ধ্রুব। তৃতীয়দিনে দেখা যাক কতদূর এগিয়ে যেতে পারেন লিটন এবং তার দল পূর্বাঞ্চল। ২৮২ রানে এখনও এগিয়ে থেকে মধ্যাঞ্চলই কতদূর কি করতে পারে। তবে ব্যাটিং বোনাসের ৫ পয়েন্ট ঠিকই পেয়েছে মধ্যাঞ্চল। কিন্তু পূর্বাঞ্চল যেভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে ম্যাচ বের করা সহজ যে হবে না তা বোঝাই যাচ্ছে। আর ম্যাচ বের করা না গেলে রানার্সআপ হওয়ার স্বাদও শেষ পর্যন্ত মধ্যাঞ্চলের নাও মিটতে পারে। স্কোর ॥ দ্বিতীয়দিন শেষে দক্ষিণাঞ্চল-উত্তরাঞ্চল ম্যাচ-খুলনা উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংস ॥ ১৮৭/১০; ৫৮.৩ ওভার (সোহরাওয়ার্দী ৫৯*, শান্ত ৫০; রাজ্জাক ৫/৫৩, সাকলায়েন ২/২০ ও দ্বিতীয় ইনিংস ॥ ৩২/০; ৮ ওভার (মিজানুর ১৭*, জুনায়েদ ১৪*)। দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস প্রথমদিন ১১৫/১; ২৯ ওভার (বিজয় ৫২*, ইমরুল ৫১*; শফিউল ১/২৮ ও দ্বিতীয় দিন ৩৬৫/৮ (ইনিংস ঘোষণা); ১০৫ ওভার (ইমরুল ১০৭, বিজয় ৮৯, তুষার ৬৫, মিঠুন ৪৯; ফরহাদ ৫/৫৭)। মধ্যাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল ম্যাচ-রাজশাহী মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস প্রথমদিন ৪০৬/৪; ৮৯ ওভার (মজিদ ১৫৯-রি.হা, সাদমান ১১২, শুভাগত ৫০*, মোশাররফ ৭*; সোহাগ ৩/১৪০) ও দ্বিতীয় দিন ৫৪৬/১০; ১২৫.৩ ওভার (মজিদ ২০৫, শুভাগত ৭১, শরীফ ৪১; সোহাগ ৫/১৮৮)। পূর্বাঞ্চল প্রথম ইনিংস ॥ ২৬৪/৩; ৪৬ ওভার (লিটন ১৩৯*, তাসামুল ৬৭, আফিফ ৩১*; শুভাগত ২/৮২)।
×